ডেস্ক নিউজ : হঠাৎ করে চড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম কমতে থাকায় কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে ভোক্তাদের বাজারের ব্যাগে। তবে ভোক্তার এই স্বস্তিই লোকসানের আশঙ্কা বাড়াচ্ছে বাজারে এসব মুরগির যোগানদাতা খামারিদের। কারণ উৎপাদন খরচের চেয়ে কমে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে দাবি করছেন তারা।
এক প্রান্তিক খামারি বলেন, গতবার ১৫০ টাকা কেজি দরে মুরগির বিক্রি করেছি আমরা। সেটিও লোকসানে। আগে যে মুরগির বাচ্চা ৬৫ টাকা ছিল, এখন তার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ টাকায়। তাহলে আমরা কীভাবে লাভ করব?
আরেকজন খামারি বলেন, মুরগির খাবারের দাম অনেক বেশি। সে তুলনায় আমরা মুরগির দাম পাচ্ছি না। কিন্তু সরকার মুরগির দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে খামারিরা খামার বন্ধ করতে বাধ্য হবেন। মুরগির দামের তুলনায় উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ার কথা জানিয়ছে এক খামারি বলেন, ওষুধ বাবদ খরচ, লেবার খরচ ও বিদ্যুৎ বিলসহ ব্যয় রয়েছে আমাদের। কিন্তু বাজার যদি হঠাৎ করে বেড়ে যায় বা কমে যায়, সেক্ষেত্রে আমাদের লাভ খুব কমে যায়।
এদিকে খামারিদের একটি সংগঠনের আশঙ্কা, হঠাৎ কম দামে মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য করায় মাসখানেকের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে আরও প্রায় ২০ হাজার খামার। দিনশেষে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ভোক্তার কাঁধে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজের অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য জাহিদুর রহমান জোয়ারদার বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার বেশি দামে না বিক্রির জন্য চাপ দিচ্ছে। এতে পাইকারি ব্যবসায়ীরা তাদের লাভ হবে এমন দামেই খামারিদের কাছ থেকে কিনছে। যেহেতু মুরগির খাবার বাবদ একটি খরচ রয়েছে, কাজেই খামারিরা লোকসান করে হলেও মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এখন ১৮০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকায় বিক্রি করতে বলা হচ্ছে, যেখানে খামারিদের উৎপাদন খরচই ১৮০ টাকা থেকে ১৮৫ টাকা। তাহলে এই লস দিয়ে তারা কত দিন টিকে থাকবেন?’
তবে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর বলছে, কারও নিয়ন্ত্রণে নয়, বাজার চলছে চাহিদা-যোগানের সরল সমীকরণে। এবিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ড. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক, ‘আমরা অবশ্যই প্রান্তিক চাষিদের সহযোগিতা করবো। আমরা চাই তাদের মুনাফা হোক। তবে তা ভোক্তাদের ঠকিয়ে চাই না। ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতায় আমরা মুরগির দাম রাখতে চাই, পাশাপাশি ভালো মানও নিশ্চিত করতে চাই। সুতরাং আমরা সে বিষয়টি নিয়েই কাজ করছি।’
সেই সঙ্গে দাম আরও কমে ব্রয়লারের বাজার স্থিতিশীল হবে বলে পূর্বাভাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বলবো খুব শিগগিরই বাজারের অবস্থা স্থিতিশীল হবে। ভোক্তাও নায্যমূল্যে মুরগি পাবে, সেই সঙ্গে উৎপাদনকারীও লাভ করতে পারবেন। দাম অবশ্যই কমেছে, তবে তাই বলে খামারি লোকসানে যাবে, তা কিন্তু নয়। শুধু উৎপাদন খরচ কমার প্রেক্ষিতেই মুরগির দাম কমবে।’
এছাড়া ডিম-মুরগি বা দুধ-মাংস বিক্রি করে কেউ ভোক্তার পকেট কাটল কি না; বাজারে তা দেখভালের দায়িত্ব প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের নয় বলেও নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি।
কিউএনবি/আয়শা/২৮ মার্চ ২০২৩,/বিকাল ৫:১৮