সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০১:১৯ অপরাহ্ন

আল্লাহ যেভাবে তাঁর সৃষ্টিকে রক্ষা করেন

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩
  • ১১১ Time View

ডেস্ক নিউজ :জীবন চলার পথে নানা রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। কখনো নিকষ কালো বিপদ আষ্টেপৃষ্টে ঢেকে ফেলে, তিনি আমাদের সে অন্ধকার থেকে উদ্ধার করেন। আবার কখনো অসুস্থতায় ছেয়ে যায় পুরো শরীর, তিনি আমাদের সুস্থতার নিয়ামত দান করেন। কখনো সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় চোখের পলকে, তখন তিনি আমাদের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ করে থাকেন। হিসাব করলে দেখা যাবে কত রকমের বিপদ আসে আমাদের জীবনে। এসব বিপদাপদ থেকে যিনি রক্ষা করেন, তিনি আমাদের আল্লাহ। অপ্রত্যাশিত অনেক বিপদ থেকে রক্ষা করেন তিনি। তিনি ইবরাহিম (আ.)-কে আগুনের মধ্যেও রক্ষা করেছেন। মাছের পেটে ইউনুস (আ.)-কে নিরাপদে রেখেছেন। তাঁর এক নাম ‘আল-হাফিজ’। তিনি তাঁর দয়ায় আমাদের কঠিন আর বড় বড় বিপদ থেকে রক্ষা করেন। একমাত্র তাঁরই ক্ষমতা আছে বড় বড় বিপদ থেকে আমাদের রক্ষা করার। তিনি শক্তিশালী। তিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতাবান। তিনি যা চাবেন তা-ই হবে। তিনি মহারক্ষক। তিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। সবার ব্যাপারে তিনি পূর্ণ জ্ঞান রাখেন। আমাদের উচিত, তাঁর কাছেই নিরাপত্তার প্রার্থনা করা। তাঁকেই একমাত্র আশ্রয়স্থল বানানো। আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের দোয়া শিখিয়েছেন যেন আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের নিরাপত্তার জন্য দোয়া করি। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) সকাল ও সন্ধ্যায় উপনীত হলে কখনো এই দোয়া পড়া ত্যাগ করতেন না। ‘হে আল্লাহ, আমাকে রক্ষা করো আমার সম্মুখভাগ থেকে, আমার পশ্চাদভাগ থেকে, আমার ডান দিক থেকে, আমার বাম দিক থেকে এবং আমার ওপর দিক থেকে। আমি তোমার মহত্বের অসিলায় আমার নিচের দিক থেকে আমাকে ধসিয়ে দেওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১২১২)

ভ্রান্ত পথ থেকে রক্ষা করেন

সময়ে সময়ে আমাদের অন্তরে নানা রকম সন্দেহ জেগে ওঠে। প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণাগুলো আমাদের দ্বিনকে নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করে। আমার আল্লাহ তাঁর দয়ায় আমাকে পথভ্রষ্টতা থেকে রক্ষা করেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের হিদায়াতের দোয়া শিখিয়েছেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া বেশি পাঠ করতেন, হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বিনের ওপর প্রতিষ্ঠিত (দৃঢ়) রাখো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), আমরা ঈমান এনেছি আপনার ওপর ও আপনি যা নিয়ে এসেছেন তার ওপর। আপনি আমাদের ব্যাপারে কি কোনো রকম আশঙ্কা করেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ, কেননা, আল্লাহ তাআলার আঙুলগুলোর মধ্যকার দুটি আঙুলের মধ্যে সব অন্তর অবস্থিত। তিনি যেভাবে ইচ্ছা তা পরিবর্তন করেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২১৪০)

সম্পদ রক্ষা করেন

আল্লাহ তাআলা আমাদের সম্পদকে রক্ষা করেন। তিনি আমাদের সম্পদ রক্ষার জন্য ফেরেশতা নিযুক্ত করে রেখেছেন। ফেরেশতার মাধ্যমে তিনি সুরক্ষা দেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে রমজানে জাকাতের সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব দিলেন। একসময় এক ব্যক্তি এসে খাদ্যসামগ্রী উঠিয়ে নেওয়ার উপক্রম করল। আমি তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম, আমি তোমাকে আল্লাহর নবী (সা.)-এর কাছে নিয়ে যাব। এরপর পুরো হাদিস বর্ণনা করেন। তখন লোকটি বলল, যখন আপনি ঘুমাতে যাবেন, তখন আয়াতুল কুরসি পাঠ করবেন। এর কারণে আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন পাহারাদার নিযুক্ত হবে এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান আপনার কাছে আসতে পারবে না। নবী (সা.) (ঘটনা শুনে) বলেন, (যে তোমার কাছে এসেছিল) সে সত্য কথা বলেছে, যদিও সে বড় মিথ্যাচারী শয়তান। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০১০)

প্রাণিজগেক যেভাবে রক্ষা করেন

আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন প্রাণী সৃষ্টি করেছেন। এবং প্রাণিকুলকে আত্মরক্ষা করার জন্য সেসব শক্তিও দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ প্রত্যেককে তার উপযুক্ত আকৃতি দিয়েছেন, তারপর তার পথ প্রদর্শনও করেছেন।’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ৫০)

একেক প্রাণী অন্য প্রাণী থেকে একেকভাবে আত্মরক্ষা করে। কোনো প্রাণী রয়েছে, তাদের বড় বড় শিং দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সে নিরাপত্তা লাভ করে। অন্য পশুর আক্রমণকে প্রতিহত করতে পারে।

আবার কোনো প্রাণীকে প্রচণ্ড রকমের ক্ষিপ্রতা দিয়েছেন, সে তার তীব্রতাকে কাজে লাগিয়ে অন্য প্রাণীর আক্রমণ থেকে বেঁচে যায়।

এর মাঝে কিছু প্রাণী এমন আছে, যেগুলোর মাঝে আল্লাহ তাআলা বিষ ঢেলে দিয়েছেন। সেই বিষ দ্বারা অন্যান্য প্রাণী থেকে আত্মরক্ষা করে। আল্লাহ তাআলা সব সৃষ্টিকে তার গঠন-প্রকৃতি অনুযায়ী জীবিত থাকা ও জীবনের রসদ সংগ্রহ করার নিয়ম শিক্ষা দান করেছেন। এগুলো সব মহান রবের সৃষ্টি তিনি প্রতিটি প্রাণীকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তিনি আল হাফিজ।

কীটপতঙ্গ থেকে রক্ষা করেন

আমরা যখন গভীর নিদ্রায় হারিয়ে যাই, তখন আমাদের নাক-কানে বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ আক্রমণ করতে পারত। আল্লাহ তাআলা নিজ দয়ায় আমাদের সেগুলো থেকে রক্ষা করেন। আসহাবে কাহাফ বা গুহাবাসী যাঁরা তাঁদের ঈমান রক্ষা করার জন্য গুহায় আশ্রয় নিয়েছিলেন, যে জায়গাটি একদমই নিরাপদ ছিল না। তাঁদের আল্লাহ তাআলা তিন শ বছর গুহাতে রেখেছেন। বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পোকামাকড় থেকে রক্ষা করেছেন। তিনি এমন সৈন্যবাহিনী সেখানে নিযুক্ত করে দিয়েছেন, যার ভয়ে কেউ তাদের আশপাশে যাওয়ার সাহস করেনি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি যদি তাদের দিকে তাকিয়ে দেখতেন তাহলে অবশ্যই পেছনে ফিরে পালিয়ে যেতেন। আর অবশ্যই আপনি তাদের ভয়ে আতংকগ্রস্ত হয়ে যেতেন।’ (সুরা : কাহাফ, আয়াত : ১৮)

কিউএনবি/অমি/২১ মার্চ ২০২৩,/দুপুর ১২:৩৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit