আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের অজুহাতে মার্কিন নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা সামরিক অভিযানের দুই দশক পার করলো ইরাক। ২০০৩ সালের ১৯ মার্চ বিমান হামলার পর ২০ মার্চ স্থল অভিযানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অপারেশন ইরাকি ফ্রিডম।
ইরাক যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের জয় হলেও সম্প্রতি মার্কিন এক জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভুল সিদ্ধান্ত ছিল এ সামরিক অভিযান। তবে সময়ের প্রেক্ষাপটে তখনকার সিদ্ধান্ত সঠিক বলেই দাবি করলেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।
জার্মানির ডিপিএ ও ইউরোপীয় দুটি সংবাদ সংস্থাকে ব্লেয়ার বলেন, ইরাকে অভিযানে ৪৬ হাজার ব্রিটিশ সেনা অংশ নিয়েছেন। এই যুদ্ধের প্রয়োজন ছিল। কারণ, ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন দেশটিতে দমন-পীড়ন চালাচ্ছিলেন। আঞ্চলিক সংঘাতকে উসকে দিচ্ছিলেন। কুর্দিদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছিলেন। যুদ্ধের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বলতে পারেন আমরা একজন স্বৈরশাসককে উৎখাত করেছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করেছি।’
জৈবিক কিংবা পারমাণবিক অস্ত্র, গণ বিধ্বংসী মারণাস্ত্র থাকা দেশ বিশ্বের জন্য হুমকি, যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রস্তাবে জাতিসংঘের উদ্যোগে ইরাকের বিভিন্ন সামরিক ও গবেষণা স্থাপনা পরিদর্শন করে পরিদর্শক কমিটি। এসব অস্ত্রের কোনো প্রমাণ পাওয়া না গেলেও সেসময় পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাগদাদে আক্রমণ করে পশ্চিমারা।
২০০৩ সালে ৯ এপ্রিল সাদ্দাম সরকারের পতনের মাধ্যমে ইরাকের নিয়ন্ত্রণ নেয় মার্কিন যৌথবাহিনী। যদিও পরবর্তীতে ইরাকে বিধ্বংসী অস্ত্র না পাওয়াসহ যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি হয়ে ওঠায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। টানা ৬ বছর যুদ্ধ শেষে ২০০৯ সালের এপ্রিলে ইরাক ছাড়তে শুরু করে মার্কিন বাহিনী।
এর পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট ইরাক যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন। ততদিনে সাড়ে চার হাজারের বেশি মার্কিন সেনা এবং ইরাকের এক লাখের বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হন।
কিউএনবি/আয়শা/১৯ মার্চ ২০২৩,/সন্ধ্যা ৬:২১