আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মস্কো সফররত চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, রাশিয়া ও চীন একটি ‘মাল্টি পোলার’ বা বহু মেরুর বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর, যেখানে কোনো দেশের একক আধিপত্য থাকবে না। মস্কোতে বুধবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে এক বৈঠকে ওয়াং বলেন, “চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের চেষ্টায় দুই দেশের মধ্যে একটি ‘অত্যন্ত শক্তিশালী’ সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। রাশিয়া ও চীন এমন একটি বহু-মেরুর বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর যেখানে কোনও একটি দেশের আধিপত্য থাকবে না।”
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে বুধবার নতুন আরো কিছু চুক্তি ও বোঝাপড়া হবে। তবে সেসব চুক্তির বিষয়ে ভেঙ্গে কিছু বলা হয়নি। পরে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ক্রেমলিনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের একটি বৈঠক হয়েছে, তবে সে বৈঠকের বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার মস্কোতে চীনা মন্ত্রী এবং রুশ নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান নিকোলাই পাত্রুশেভের মধ্যে এক বৈঠকেও একই ধরণের কথাবার্তা হয়েছে।
বেইজিং থেকে বিবিসির স্টিভেন ম্যাকডোনেল জানিয়েছেন ওয়াং এবং পাত্রুশেভের বৈঠকের ওপর প্রকাশিত চীনা সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই দেশই বিশ্ব ব্যবস্থায় কোনো একটি দেশের ‘চোখ রাঙানির’ বিরোধিতা করে। রুশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রচারিত খবরে দেখানো হয়েছে, মঙ্গলবার বৈঠকে ওয়াং এবং পাত্রুশেভ পরস্পরকে ‘কমরেড’ বলে সম্বোধন করেছেন। ওয়াং বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক ‘পাথরের মত শক্ত’, যা পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতির যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম।
অন্যদিকে রুশ প্রতিরক্ষা প্রধান বলেন, মস্কোর বৈদেশিক নীতিতে এখন চীন একটি প্রধান ‘অগ্রাধিকার’ এবং পশ্চিমা শক্তির বিরুদ্ধে এই দুই দেশকে অবশ্যই ‘ঐক্যবদ্ধ’ থাকতে হবে। গত সপ্তাহে এক মার্কিন গণ্যমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে চীন রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহের পরিকল্পনা করছে। এমন কিছু করলে চীনকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মস্কো সফর এমন সময় হচ্ছে যখন আর দুই দিন বাদেই ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের এক বছর পূর্তি হচ্ছে। এ উপলক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডও সফর করছেন।
এ ছাড়াও আজ বুধবার বাইডেন বুখারেস্ট নাইন নামে পরিচিত পূর্ব ইউরোপের ৯টি ন্যাটো জোটভুক্ত দেশের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠক করবেন বলে জানানো হয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে— পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়া, চেক রিপাবলিক, এস্তোনিয়া, হাঙ্গেরি, লাতভিয়া এবং লিথুয়ানিয়া। হাঙ্গেরি বাদে এই জোটের প্রতিটি দেশই ইউক্রেনকে সামরিক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা দেওয়ার ঘোরতর সমর্থক।
সূত্র : বিবিসি
কিউএনবি/আয়শা/২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/রাত ৯:৪৯