আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মস্কোয় বার্ষিক ‘স্টেস্ট অব দ্য নেশন’ ভাষণ দেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কিয়েভ সফরের ঠিক এক দিন পরই দেয়া ভাষণে পুতিন বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়া তার লক্ষ্য অর্জনে কোনো ছাড় দেবে না।
দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক অভিজাতদের সামনে রেখে দেয়া ওই ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেন পুতিন। পাশাপাশি যুদ্ধের জন্য পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত এবং নতুন করে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর হুমকি দেন তিনি।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা যে স্থগিত অবস্থায় রয়েছে, ওয়াশিংটনের কেউ কেউ তা ভাঙার চিন্তা করছেন। যুক্তরাষ্ট্র যদি পরীক্ষা চালায়, তাহলে আমরাও চালাব। কারোরই বিপজ্জনক কাল্পনিক চিন্তা থাকা উচিত নয় যে কৌশলগত অস্ত্রের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক যে সমতা আছে, তা ধ্বংস করা যাবে। এক সপ্তাহ আগে আমি একটি ডিক্রিতে সই করেছি, যাতে ভূমি থেকে পারমাণবিক অস্ত্র নিক্ষেপের ব্যবস্থাগুলো পুনরায় চালু করা হয়।’
পুতিনের এমন ঘোষণায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ওয়াশিংটন। মঙ্গলবার গ্রিসের এথেন্সে মার্কিন দূতাবাসে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রুশ প্রেসিডেন্টের ঘোষণাকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও দায়িত্বহীন আখ্যা দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমাদের দুদেশের সম্পর্ক যে পর্যায়ে থাকুক না কেন, কৌশলগত অস্ত্রের সংখ্যা সীমিত করার বিষয়ে আমরা রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো সময় আলোচনায় বসতে এখনও প্রস্তুত আছি। রাশিয়া আসলে কী করে, তা দেখার জন্য আমরা সতর্ক নজর রাখছি। মিত্রদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের যে অঙ্গীকার, তা যেকোনো পরিস্থিতিতে নিশ্চিত করব।’
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব বলেন, রাশিয়ার এমন পদক্ষেপে আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে পুরো বিশ্ব। গত কয়েক বছরে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের মূল চুক্তিগুলো থেকে রাশিয়া হয় সরে গেছে, না হয় লঙ্ঘন করেছে।
পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে শুধু নিউ স্টার্ট চুক্তিই কার্যকর ছিল। ২০১০ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং রাশিয়ার সেই সময়ের প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া মোট কী পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করতে পারবে, তার সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয়েছিল।
এর আওতায় এক দেশের কর্মকর্তারা আরেক দেশের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার পরিদর্শনের সুযোগ পেতেন। তবে ইউক্রেন নিয়ে উত্তেজনায় এরই মধ্যে ওই পরিদর্শন বন্ধ হয়ে গেছে। ২০২১ সালে চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর বাড়িয়ে ২০২৬ সাল পর্যন্ত করা হয়।
কিউএনবি/আয়শা/২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/রাত ৯:৩২