শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৮ অপরাহ্ন

দয়া করে কর পরিশোধ করুন

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৭৬ Time View

ডেস্ক নিউজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু রাজধানী বা শহরে নয়, সারা দেশে কর দিতে সক্ষম যারা, দয়া করে আপনার কর পরিশোধ করুন। সরকার আপনার পরিষেবা এবং কল্যাণে আপনার অর্থ ব্যবহার করবে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের প্রথম দুই দিনব্যাপী রাজস্ব সম্মেলন-২০২৩ উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, সমগ্র বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক মন্দা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যার প্রভাব বাংলাদেশের ওপরও পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, কাজেই, আমাদের সেগুলির (অর্থনৈতিক মন্দা এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হার) মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। আমরা যত বেশি ট্যাক্স সংগ্রহ করব, ততই এটি অতিক্রম করা সহজ এবং সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী করের পরিমাণ বাড়ানোর পরিবর্তে করদাতার সংখ্যা সম্প্রসারণে আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে এবং জনগণকে কর দিতে উদ্বুদ্ধ করতে সারা দেশে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক নয় সারা দেশেই আমি সকলকে বলব যারা কর দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন, আপনারা দয়াকরে কর দেবেন। সেটা আপনাদের সেবায়ই সরকার কাজে লাগাবে। তিনি বলেন, যেহেতু বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, আজকে প্রতিটা জিনিসের দাম বেড়েছে। আজকে তেল, গ্যাস, গম, ভোজ্যতেল, চিনিসহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার তা সত্ত্বেও এগুলো অধিক মূল্যে কিনে নিয়ে আসছে। সেখানে পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে , ৮শ’ ডলারের জাহাজ ভাড়া এখন ৩ হাজার ৮শ’ ডলার । আমরা ভর্তুকি দিয়ে অধিক মূল্যে কিনে এনে তা কমমূল্যে দেশের মানুষকে দিচ্ছি। এক কোটি মানুষ টিসিবির কার্ড পেয়েছে, সেখানে ভর্তুকি মূল্যে মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করা হচ্ছে, কৃষিতে তাঁর সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে, করোনাকালিন ব্যবসায়ীদের শিল্প ও কলকারখানা চালু রাখার জন্য তাঁর সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। এভাবেই সরকার সকলকে দু:সময়ে তাঁর ভর্তুকি অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, এখন সরকার যাতে রাষ্ট্র চালাতে পারে বা মানুষের জন্য কাজ করতে পারে সেদিকে সকলকে দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ ভর্তুকি আমরা আর কত দিতে পারব। তা ছাড়া আমাদের উন্নয়নকাজগুলো যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকেও দেখতে হব। তিনি আরও বলেন, আপনারা উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে যদি যান, যে পরিবর্তন হয়েছে গত ১৪ বছরের সেই পরিবর্তনটা আপনারা দেখতে পাবেন। এখন আর কেউ কুঁড়ে ঘরে বাস করে না, ভূমিহীন-গৃহহীন প্রত্যেককে তাঁর সরকার বিনে পয়সায় ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। আর্থিক সহায়তা দিয়ে জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগও করে দেওয়া হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ১শ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছে যেখানে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের তৃণমূল পর্যায়েরও উন্নয়ন নীতির কারণে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও অর্থনীতির গতিশীলতা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, আমি এটুকু বলতে পারি যে গত ১৪ বছরে আমূল পরিবর্তন এসেছে। করদানের সক্ষমতা কিন্তু আমাদের উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও রয়েছে। সেখানে আমরা যদি একটু প্রচার-প্রচারণা ভালোভাবে চালাই তাহলে মানুষ কিন্তু স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসবে কারণ তারা সেবা পাচ্ছে। এই সেবাটা পাওয়ার জন্যই তারা করবে।

প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম এবং সদস্য ড. আব্দুল মান্নান শিকদার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য প্রদ্যুৎ কুমার সরকার।

অনুষ্ঠানে এনবিআরের কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। প্রধানমন্ত্রী এর আগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ৪১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নবনির্মিত ১২ তলা রাজস্ব ভবন উদ্বোধন করেন। ভবন উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী এর বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনও করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আয়কর প্রদানকারীর সংখ্যা এখনো অনেক কম। অনেকে একে ঝামেলা মনে করেন বা এ জন্য সচেতনতার অভাবকে দায়ী করেন তিনি।

তিনি বলেন, আমি মনে করি এখানে কোন জোর জুলুম খাটাবেন না। মানুষকে কোন ভয়-ভীতিকর পরিস্থিতিতে ফেলা যাবে না। মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। জনগণকে জানাতে হবে যে- আপনি যে কর দেন, সেটা কিন্তু আপনার কাজেই লাগে। আজবে রাস্তা-ঘাট, পুল, ব্রিজ বা এই যে পোর্ট, কৃষি, শিক্ষা বা স্বাস্থ্য সব ক্ষেত্রেই যেগুলো সরকার করে দিচ্ছে সবগুলোর সুফল ভোগ করছে জনগণ। আর যারা এই সুফলটা ভোগ করছে তাদেরও তো কিছু দিতে হবে, রাষ্ট্রতো আর এমনি এমনি সবকিছু দিতে পারে না। আর অন্যের কাছে আমরা হাতও পাতব না।

তিনি বলেন, যাদের কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে- সর্বক্ষেত্রে ডিজিটাল সিস্টেম হয়ে গেলে, তারা এই ফাঁকিটা আর দিতে পারবে না। এটা হলো বাস্তব কথা সেটাও একটা বিরাট সুযোগ এনে দেবে। মানুষ যাতে কর ফাঁকি না দেয়- সে জন্য আর করের পরিমাণটাও এমন রাখতে হবে- যাতে প্রতিটা মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে দিতে পারে। মানুষকে জানাতে হবে, ব্যাপক প্রচার করা দরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়কর, কাস্টমস ও মূসক বিভাগকে অটোমেটেড এবং ডিজিটালাইজড করার মাধ্যমে করদাতা, ব্যবসায়ী এবং জনগণকে সহজ ও নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা প্রদানের জন্য বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। করদাতাগণ এখন বাংলাদেশ ব্যাংক বা সোনালি ব্যাংকে না গিয়ে ঘরে বসেই নিজ ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সুবিধাজনক সময়ে সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকে কর পরিশোধ করতে পারছেন। এটার আরও ব্যাপক প্রচারণার ওপর প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেন।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/বিকাল ৪:৩০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit