ডেস্ক নিউজ : বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এমন ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্যবোঝাই রাশিয়ান জাহাজ ‘উরসা মেজর’ ফিরে যাওয়ার ঘটনায় বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কাজে ব্যাঘাত ঘটবে কিনা, জানতে চেয়েছিলেন একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদক। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ক্ষেপে যান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের করণীয় বিষয়ক কর্মশালায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময়ে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি কর্মশালার উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী ২৮ মিনিট ধরে কথা বলার পর এক সাংবাদিক বলেন, মাননীয় মন্ত্রী আমরা দুএকটি প্রশ্ন করে চলে যেতে চাই। জবাবে মন্ত্রী বলেন, বলো ভাই। তোমাদের তো আবার সময়ের দাম আছে। তো এত কথা বললাম এগুলো কি একটাও কাজের কথা হয় নাই। আচ্ছা বলো।
তখন ওই সাংবাদিক বলেন, রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালামাল সরবরাহে কত দেরি হতে পারে? এ সময় তিনি বলেন, ওই ব্যাপারে এখন কিছু বলব না। এত কথার মধ্যে তোমরা চলে গেলে রূপপুরে…,। এই ফাঁকে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, আজকের ওয়ার্কশপের সঙ্গে এই প্রশ্ন সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তখনই নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বুঝি না, তোমরা প্রফেশনাল না? আর ইউ প্রফেশনাল? লেট মি দিস অ্যান্সার? ইউ আর প্রফেশনাল, লাইক মি আর্কিটেকচার। তোমরা তো প্রফেশনাল। তোমাদের রেগুলার প্রফেশনাল স্ট্যাডির ব্যবস্থা আছে, নাই।’
সাংবাদিকরা জবাবে বলেন, আছে আছে। ‘ঘোড়ার ডিম আছে তোমাদের। আমাদের একটা ইনস্টিটিউট আছে ওখান থেকে যদি সার্টিফিকেট না পাও, ইউ ক্যান নট প্র্যাকটিস। কারণ হলো, ওটার (ইনস্টিটিউট) শুরুটা হয় আমার হাত দিয়ে। ওইগুলো করো আগে। বিকজ আমরা বাংলাদেশকে ওই জায়গায় নিতে চাই,’ ক্ষিপ্তমন্ত্রীর জবাব। এক সাংবাদিক বলেন, বাধ্যবাধকতা নাই যে সনদ ছাড়া সাংবাদিকতা করা যাবে না- তখন মন্ত্রী বলেন, ওইটাই তো প্রবলেম। তোমার যদি একটা ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকে, কালকে বলে দিলা তুমি সাংবাদিক। তুমি তো প্রফেশনালিজমের কিছু বোঝই না। একটা প্রফেশন মাস্ট নো দ্যাট সাবজেক্ট, তার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে। একটা কথা বলে দিলা যেকোনো জায়গা থেকে চলে আসলে, তার মানে তোমাদের কোনো স্ট্যান্ডার্ড নাই।
তিনি আরও বলেন, তোমার প্রফেশনালি যদি জ্ঞান-গরিমা থাকে, ন্যাচারিলি তখন তুমি একভাবে বলবা, আর যদি না থাকে আরেকভাবে বলবা। তারপরও তুমি বলছো আমরা আসতে পারি যেকোনো জায়গা থেকে? আমি তোমার এই কথায় যেতে চাই না। একদিন আইসো, তোমাদের বসদের সাথে কথা হয় তো, ওদের সাথেই কথা বলব। তোমাদের সাথে বলে আর লাভ নাই।
এরপর তিনি বলেন, আচ্ছা। এই সাবজেক্ট বাদ দিয়ে দাও। আমি ওই জন্য বলছি তোমরা এই সাবজেস্টের ওপর ধরো না কেন? এটা বাদ দিয়ে তুমি চলে গেলে অন্য জায়গায়। এটা নিয়ে আর কোনো কথাই হবে না। তুমি এখানে আসছো কী জন্য? তুমি রূপপুরের ব্যাপারে কথা বলতে আসছো? ‘এখান থেকে তোমার প্রশ্ন বের করতে হবে, উত্তর নিতে হবে। সেটা হলে তুমি প্রোপার জিনিসটা করলা।’
তখন এক সাংবাদিক বলেন, আমরা যারা সাংবাদিকতায় কাজ করি তাদের সাবজেক্টের বাইরেও প্রশ্ন করতে হয়। আপনাকে আমরা পাই না, গত ৮-৯ মাসে আপনার প্রোগ্রামে আসিনি, এই প্রথম আসলাম। তাও আবার জরুরি ভিত্তিতে আসতে বলেছেন, ১১টার প্রোগ্রাম, ১১টা ১০ মিনিটে আমাদেরকে জানিয়েছেন। আমরা বড় জিনিস মনে করে চলে এসেছি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে জনগণের জানার আগ্রহ আছে। জনসাধারণের ভিউ থেকে আমাদেরও অনেক কিছু জানতে হয়।
তখন এক ধরনের ধমকের সুরে মন্ত্রী বলেন, আমি একটা কথা পরিষ্কার বলে যাই। ইউ লিসেন টু মি। আপনারা যদি না আসতে চান, চলে যান। গেট গোয়িং। মন্ত্রীর ধমকের সুরে কথা বলায় সাংবাদিকরা বের হয়ে যেতে উদ্যত হন। তখন মন্ত্রী বলেন, ইউ শুড গো। আমি বললাম প্রশ্নটা ওটার উপর না করে এটার উপরে করেন। এটা বলতে পারব না আমি?
কিউএনবি/আয়শা/০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/সন্ধ্যা ৬:৫০