বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৪ অপরাহ্ন

রাতে শীতবস্ত্র নিয়ে মুজিব বর্ষের ঘরে ঘরে ইউএনও ‘রাজীব’

তোবারক হোসেন খোকন দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি ।
  • Update Time : বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১০৭ Time View

তোবারক হোসেন খোকন দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি : ‘‘মাঘের শীত বাঘের গায়’’ শীত কমতে শুরু করলেও নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা গুলোতে এখনো শীতে কাঁপছে ছিন্নমুল মানুষ। রাত তখন নয়টা বাজে, ক‘দিন ধরেই জেকে বসেছে শীত। যে যার মতো খেয়ে-দেয়ে ঘুমোতে যাওয়ার প্রস্ততিতে ব্যস্ত ফান্দা আবাসনের ছিন্নমুল মানুষ গুলো। হঠাৎ দরজায় ঠকঠক শব্দ শুনে দরজা খুলতেই দেখা মিললো দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব-উল-আহসান সারের। আমার গায়ে একটি কম্বল জড়িয়ে দিয়ে বললো, কেমন আছেন আপনি ? মুহুর্তেই যেন আমার গাঁ থেকে শীত নেমে গেলো, মনের অজান্তেই আমার চোখে পানি চলে এলো। মহান আল্লাহ যেন ওনার ভালো করেন। বুধবার দুপুরে ফান্দা আবাসন এলাকার ইদ্রিস আলী যুগান্তর কে এ কথা গুলো বলছিলেন।

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান। প্রশাসনের কর্মকর্তা হলেও তিনি একজন কবি, সংস্কৃতিসেবী ও মানবিক ইউএনও হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছেন। ওনার এসকল ভালো কাজের জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও পেয়েছেন বহু সম্মাননা। বিগত ভয়াবহ বন্যায়, মানুষের ঘরে ঘরে নিজ হাতে খাবার বিতরণ, মুজিববর্ষের ঘর স্থাপন, অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করণ, মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন স্থাপন, বদ্ধভুমি চিহ্নিত করে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে নতুন প্রজম্মের শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নানা ধরনের উদ্যেগ গ্রহন করেছেন তিনি। এই শীতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ছিন্নমুল মানুষের মাঝে রাতের আঁধারে প্রায় প্রতিদিনই শীতবস্ত্র বিতরণ করে যাচ্ছেন। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্পবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সহকারী প্রোগ্রামার মো. সামিউল ইসলাম প্রমুখ।

আবাসন এলাকার ইদ্রিস আলী যুগান্তরকে বলেন, ফান্দা এলাকায় দিন মজুরি কাজ করে খাই। এবারের এবারের মতো শীত কুয়াশা বিগত ১০ বছরেও দেখিনি। ক‘দিন ধরে শীতে আশপাশের মানুষ গুলো খুবই কস্ট করছে। ইউএনও সাহেব কম্বল নিয়া আমার বাড়িতে এসে গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিবে ভাবতেও অবাক লাগছে। জাহেরা খাতুন বলেন, এই শীতে আমি খুব সমস্যা ছিলাম। আমাদের কথা ভেবে রাতে ইউএনও স্যার আমাদের জন্য শীতবস্ত্র নিয়ে এসেছেন। এতে আমার খুব উপকার হয়েছে। শুধু আমার না, গরীবের দুঃখ কষ্টের কথা শুনলে তিনি সাধ্যমতো সহায়তাও করেন। মহান আল্লাহ্ ওনার ভালো করুন।

ইউএনও রাজিব যুগান্তরকে বলেন, অন্যান্য বারের চেয়ে অত্র এলাকায় এবার শীতের প্রকোপ বেশি। শীতার্থ মানুষদের কথা শুনে আমার খুবই কস্ট লেগেছে। ভাবলাম রাতে আমি আরাম করবো, কিন্তু আমার আশপাশের ছিন্নমুল মানুষগুলো হয়তো শীতে কস্ট করছে। এই ভেবে আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকে কম্বল নিয়ে প্রায়ই ছুটে যাই শীতার্থদের বাড়ি বাড়ি। নিজ হাতে তাদের গায়ে কম্বল জড়িয়ে দেই। খোঁজ-খবর নেই তাদের, এর চেয়ে বড় শান্তি আর কী হতে পারে ?

 

কিউএনবি/আয়শা/০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩/সন্ধ্যা ৬:৩০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit