বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : চোখের সামনে এক টুকরো বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, পারমানবিক কেন্দ্র, আশ্রয়ণ প্রকল্প, মডেল মসজিদ। এ যেন সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। বাংলাদেশকে পরিচয় করে দেওয়ার জন্য সংসদ ভবনটা যেন ঠাঁয় দাঁড়িয়ে। সরস্বতী পুজোকে সামনে রেখে দেশের উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডগুলোর অবয়ব গড়ে তোলা হয়েছে। শিল্পীর নিখুঁত কারুকাজ আর রং তুলির আঁচড়ে ককসিটের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এ ধরণের এক একটি শিল্পকর্ম। যেন ছোট্ট পরিসরে এক টুকরো স্বপ্নের বাংলাদেশ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর এলাকার রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের আয়োজন থেকে যেন চোখ ফেরানো দায়।
বৃহস্পতিবার পঞ্চমী তিথিতে সারাদেশে অনুষ্ঠিত হবে সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের বিদ্যাদেবীর বৃহৎধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা। দেবীকে বরণের শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি চলছে সর্বত্র। সরস্বতী প্রতিমা কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন ভক্তরা। কিনছেন পুজার অন্যান্য সামগ্রী। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার শিববাড়িতে প্রতিমা কিনতে আসা কার্তিক দাস নামে এক ভক্ত বলেন, ‘দেশে জিনিসপত্রের দাম বেশি বিধায় প্রতিমার দামও একটু বেশি। মায়ের কাছে অঞ্জলি দিয়ে প্রার্থনা করবো যেন দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। মা যেন সবাইকে বিদ্যা-বুদ্ধি দান করেন।’
বিক্রেতা দ্বীপ কুমার জানান, অনেক কারুকাজ করেও প্রতিমার ন্যায্য মূল্যও পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ মালামালের দামও বেড়েছে। এবার প্রতিমা কিছুটা কম বিক্রি হচ্ছে। দেশের অর্থনীতি মন্দার প্রভাব পড়েছে ক্রেতাদের মাঝে। তাই চাহিদার তুলনায় বিক্রি কম হচ্ছে। পুরোহিত নন্দন কিশোর চক্রবর্তী বলেন, ‘সরস্বতী দেবী হচ্ছে বিদ্যার দেবী। মূলত যারা পড়ালেখার সঙ্গে জড়িত তারাই বেশিরভাগ এ পূজা করে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় এ পূজা করা হয়। এবার অঞ্জলি দেওয়ার মাধ্যমে মায়ের কাছে প্রার্থনা করা হবে তিনি যেন জীব, জগৎ ও জাতির মঙ্গল করেন।’
এদিকে বুুধবার দুপুরে সরজমিনে রাধানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অরুণ সংঘের আয়োজনে বিদ্যালয়ের গেটের পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ১০০ ফুট লম্বা পদ্মা সেতুর অবয়ব। শ্রমিকরা শেষ মুহুতের্র সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত। সংসদ ভবনের অবয়বের সামনে হবে পুজার আনুষ্ঠানিকতা। পুজা মন্ডপ হলেও এখানে শোভা পাচ্ছে মডেল মসজিদের অবয়ব। কাজ দেখতেও ছুটে আসছেন অনেকে।
জানা যায়, প্রায় ৪০ বছর আগে অরুণ সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত স্বরসতী পুজার আয়োজন করে সংগঠনটি প্রথম দিকে ছোট্ট পরিসরে পুজার আয়োজন করা হলেও। কয়েক বছর ধরে থিম পুজার আয়োজন করা হয়। একেক বছর একেকটি ভিন্ন থিম প্রদর্শন করা হয়। গত বছর পুজার পাঠাগার থিমটি ব্যাপক প্রশংসা কুঁড়ায়। কথা হলে পুজা মন্ডপের কারিগর শিল্পী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ছোট বেলায় রংয়ের কাজে আগ্রহ ছিলো। এরপর নিজ থেকেই ককশিটের কাজ শিখেছেন। এক মাস ধরে দু’জন ও শেষ এক সপ্তাহ ধরে সাতজন শ্রমিক কাজ করছেন।’