ডেস্ক নিউজ : মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। টিপু মুনশি বলেন, ‘কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট সম্ভাব্য খাদ্যসংকটের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের প্রধান সরবরাহকারী দেশ ভারতের কাছে এসব পণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা সুবিধার অনুরোধ জানিয়েছি। যাতে সংকটকালে আমাদের সমস্যা না হয়। যেমন: পেঁয়াজ ও গম বন্ধ করায় মাঝে সমস্যা হয়েছিল। তারা বলছে, আমরা যা চেয়েছি, তা তারা দিতে পারবে। কিন্তু আমরা যদি সেটি না নিই তাহলে কী হবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বার্ষিক কোটার জন্য যে পরিমাণ পণ্য উল্লেখ করেছিলাম, তারা সে বিষয়ে বলেছে যে আমরা (বাংলাদেশ) আন্দাজ করে বলছি। তাই সঠিক কত পরিমাণ পণ্য প্রয়োজন, সেটি তারা (ভারত) নির্ধারণ করতে বলেছে। মূলত আমরা একটু বেশি করেই চেয়েছিলাম। ভারতের কর্তৃপক্ষ বলছে, অতীতের ৭ থেকে ৮ বছরের রেকর্ড বলছে না যে আমাদের (বাংলাদেশ) এত বেশি পরিমাণ পণ্য দরকার। বাংলাদেশের জন্য রাখার পর যদি সে পণ্যগুলো না নেয়া হয়, তাহলে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। তাই উভয় পক্ষ আলোচনা করে কোটার পরিমাণ নির্ধারণ করবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘তারা যেন হঠাৎ করে আমাদের দেশে পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে না দেয়, সেই অনুরোধও করেছি। এ ছাড়া পেঁয়াজ নিয়ে সমস্যা হওয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে। হুট করে রফতানি বন্ধ না করে দিয়ে যাতে আমাদের আগে থেকে সর্তক করা হয়, সে বিষয়ে বলা হয়েছে।’এ ছাড়া বাংলাদেশের অন্যতম রফতানি পণ্য পাটজাত সামগ্রীর ওপর ২০১৭ সালে থেকে আরোপিত অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি আর বহাল না রাখার জন্য ভারতকে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও জানান টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা দীর্ঘমেয়াদি ভিসার জন্য দাবি করেছিলেন। সেটি নিয়ে কথা হয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদি ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে ভারতের আপত্তি নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা এক থেকে দেড় মাস অপেক্ষা করতে বলেছে। করোনার পর মেডিকেল ভিসার জন্য প্রচুর চাপ পড়েছে। সেটি দিতেই তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। জানুয়ারির শেষদিকে তাদের প্রেশার কমে আসবে। তখন তারা রেগুলার ভিসা, টুরিস্ট ভিসা, মাল্টিপল ভিসা ও ব্যবসায়ীদের ভিসার ব্যবস্থা করবে।
উভয় দেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিনিময় মাধ্যম হিসেবে মার্কিন ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় রুপি ব্যবহারের বিষয়ে কথা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারিনি। কারণ, এ ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ লাগবে। আমরা বলেছি, আলোচনা হতে পারে। তারা রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে এটি শুরু করেছে। আমরা এটি পারব কি না, সেই হিসাবের ব্যাপারও রয়েছে। তা ছাড়া বর্ডার হাট নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
এ ছাড়া রাবার ক্লোন আমদানির বিষয়ে টিপু মুনশি বলেন, ‘ভারত থেকে উচ্চফলনশীল রাবার ক্লোন আমদানির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী উৎসাহ দিয়েছিলেন। কারণ, আমাদের দেশের রাবার খুব বেশি ভালো না।’গত ২২-২৩ ডিসেম্বর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী শ্রী পিয়ুশ গয়ালের নেতৃত্বে উভয় দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এ সভায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
কিউএনবি/আয়শা/২৭ ডিসেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/সন্ধ্যা ৭:০৮