বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন

আখাউড়া মুক্ত দিবস পালন

বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি ।    
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৬৯ Time View
বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসন ও মুক্ত দিবস বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে মঙ্গলবার পুষ্পস্তবক অর্পণ, আনন্দ র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ১০টায় উপজেলা পরিষদ থেকে আনন্দ  র‌্যালি বের হয়ে পৌর এলাকার প্রধান সড়ক হয়ে ডাকঘরের সামনে এসে শেষ হয়। র‌্যালি শেষে আখাউড়া ডাকঘরের সামনে, যেখানে স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উড়ানো হয় সেখানে পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানেই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা, পৌরসভার মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা জামশেদ শাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার মালদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বাবুল, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহŸায়ক আব্দুল মমিন বাবুল, মুক্তি যোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাখাওয়াত হোসেন খান স্বাধীন, দীপঙ্কর ঘোষ নয়ন, সৈয়দ যুবরাজ শাহ রাসেল, আনিছুজ্জামান খান, জিয়াউল হক খাদেম ধীমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক পৌর মুক্ত মঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হয়। 
৬ ডিসেম্বও ছিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার  আখাউড়া মুক্ত দিবস। ৭১ সালের এই দিনে মুক্ত হয় ভারত সীমান্ত ঘেঁষা আখাউড়া। ওই দিন উপজেলা ডাকঘরের সামনে উড়ানো হয় লাল সবুজের পতাকা। মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় লোকজন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ১৯৭১ সালে ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের পর থেকে আখাউড়ার সর্বস্তরের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য দেশ প্রেমিক জনতা, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, যুবক, শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনগণের উপস্থিতিতে আখাউড়ায় গঠন করা হয় সর্ব দলীয় সংগ্রাম পরিষদ। ওই পরিষদের নেতৃত্বে কাজী ওয়াহেদুর রহমান লিলু মিয়া। এস ফোর্সের অধিনায়ক লে. কর্নেল সফিউল্লাহর  তত্ত¡াবধানে আখাউড়ায় যুদ্ধ চলতে থাকে। ৩০ নভেম্বর ও পহেলা ডিসেম্বর আখাউড়ার উত্তরে সীমান্তবর্তী আজমপুর, রাজাপুর, সিঙ্গারবিল, মিরাশানি এলাকায় পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর যুদ্ধ হয়। টানা ৩ দিন ধরে চলে এই যুদ্ধ। এই যুদ্ধে অন্তত ৩৫ পাক সেনা নিহত হয়। বন্দী করা হয় ৫ জনকে। মুক্তি বাহিনীর নায়েক সুবেদার আশরাফ আলী খান এই যুদ্ধে শহীদ হন। আহত হয় অনেক মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের মারমুখী আক্রমনে পাক বাহিনী দাঁড়াতে পারেনি। তারা তখন পিছু হটতে শুরু করে।

৩ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী আজমপুরে অবস্থান নিলে সেখানেও যুদ্ধ হয়। ওই যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর ১১জন সেনা নিহত হয়। মুক্তিবাহিনীর ২ সিপাহী ও ১ নায়েক সুবেদার শহীদ হন। ৪ এবং ৫ ডিসেম্বর অবিরাম যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর প্রায় ১৭০ জন সেনা নিহত হয়। তখন গোটা আখাউড়া এলাকা মুক্তি বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া পুরোপুরি হানাদার মুক্ত হয়। আখাউড়া মুক্ত হওয়ার পর পৌর এলাকার প্রধান ডাকঘরের সামনে সর্ব প্রথম বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী। তখন মেজর আইন উদ্দিনসহ মিত্র বাহিনীর অফিসার ও সৈনিকরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। 

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৬ ডিসেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৫:৩৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit