বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন

শরিয়তের কিছু বিধান অপরিবর্তনীয়

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২২
  • ৯২ Time View

ডেস্ক নিউজ : ইসলাম পছন্দ করেন না এমন ব্যক্তিরা প্রায় একটি প্রশ্ন করে থাকেন, আমরা ১৪ শ বছরের পুরনো জীবনাচারকে কেন এই আধুনিক যুগে অনুসরণ করব? প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল সময়ে দেড় হাজার বছর আগের বিধি-বিধান কিভাবে প্রয়োগযোগ্য হতে পারে? তাদের ভেতর এসব প্রশ্ন উত্থাপনের মূল কারণ হলো, তারা ইসলামী বিধি-বিধান সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত নন। তাদের জানা উচিত, ইসলামী বিধান মূলত তিন প্রকার।

শরয়ি বিধানের প্রকারভেদ

পরিবর্তন হওয়া ও না হওয়ার ভিত্তিতে ইসলামী শরিয়তের বিধানগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। তা হলো—

১. অপরিবর্তনীয় বিধান : ইসলামের যেসব বিধান কোরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট বক্তব্য দ্বারা প্রমাণিত, সেগুলো কিয়ামত পর্যন্ত পরিবর্তন হবে না। যুগ ও সময় যত বদলেই যাক, তা কখনো পরিবর্তন হবে না। কিয়ামত পর্যন্ত এসব বিধান আপন অবস্থায় বহাল থাকবে।

২. ইজতিহাদের সুযোগ আছে: ইসলামী শরিয়তের এমন কিছু বিধান আছে যেগুলোতে ‘ইজতিহাদ’ (বিধান প্রণয়নে গবেষণামূলক প্রয়াস) ও ‘ইসতিমবাত’ (বিধান উদ্ভাবন)-এর সুযোগ আছে। আর তা হলো এমন বিধান, যার ব্যাপারে ইসলামী শরিয়তের অকাট্য কোনো দলিল পাওয়া যায় না।

৩. যেসব বিধানের ব্যাপারে শরিয়ত চুপ : ইসলামী শরিয়তের এমন কিছু বিষয় আছে, যেগুলোর ব্যাপারে শরিয়ত নিশ্চুপ। এগুলোর ক্ষেত্রে কোরআন-সুন্নাহর কোনো নির্দেশনা নেই; বরং তা মানবীয় বিবেক-বুদ্ধির ওপর ছেড়ে দিয়েছে। তৃতীয় ভাগই সবচেয়ে বিস্তৃত।

কিছু বিধান অপরিবর্তনীয় কেন? : ইসলামী শরিয়তের যেসব বিধান অপরিবর্তনীয় বলে ঘোষণা করেছে, তার বেশির ভাগই ফিতরাত বা মানবপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করে প্রণয়ন করা হয়েছে। আর ফিতরাত বলা হয় মানুষের সেসব মৌলিক বৈশিষ্ট্য তা কখনো পরিবর্তন হয় না। সত্তাগতভাবেই মানুষ তা ধারণ করে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তা মানুষের ভেতর সক্রিয় থাকবে। এসব বিধান শরিয়ত স্পষ্ট ‘নস’ বা দলিলের মাধ্যমে বর্ণনা করেছে। আর শরিয়তপ্রণেতা তথা মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের স্পষ্ট বক্তব্যের বিপরীতে নিজের বিবেক-বুদ্ধির ওপর নির্ভর করার অর্থ হলো নিজের গণ্ডি ছড়িয়ে যাওয়া এবং সীমালঙ্ঘন করা। কেননা সৃষ্টি হিসেবে মানুষের এই অধিকার নেই যে সে স্রষ্টার নির্দেশনার প্রতি সংশয় পোষণ করবে এবং বিপরীত বিধান প্রণয়নের চেষ্টা করবে। এ ছাড়া শরিয়তের কিছু আকিদা-বিশ্বাস ও বিধি-বিধান যদি সংরক্ষণ করা না হয়, তবে দ্বিনের ব্যাপারে বিকৃতি ও অপব্যাখ্যার পথ উন্মোচিত হবে এবং মৌলিকত্ব হারিয়ে ফেলবে।

ইজতিহাদ ঝুঁকিপূর্ণ : ইসলাম সব সময় চিন্তা ও গবেষণাকে উত্সাহিত করেছে এবং ইজতিহাদ কর্ম ও মুজতাহিদের বিশেষ মর্যাদা ঘোষণা করেছে। সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়েও সতর্ক করেছে যে শরিয়তের বিধি-বিধানের ব্যাপারে ইজতিহাদ করা একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। প্রয়োজনীয় মেধা, পরিপূর্ণ যোগ্যতা ও অপরিসীম আল্লাহভীতি না থাকলে বড় ধরনের বিপত্তির সম্ভাবনা আছে। বিশেষত সেসব নামধারী মুজতাহিদদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা প্রয়োজন, যারা ইসলামের ব্যাপারে হীনম্মন্যতায় ভোগে, যারা মনে করে, ইসলামের বিধি-বিধান এই যুগের জন্য পুরোপুরি উপযোগী নয়। তাদের ব্যাপারে কবি আল্লামা ইকবাল বলেছেন, ‘এ ধরনের অদূরদর্শী চিন্তাবিদদের ইজতিহাদ অনুসরণ করার চেয়ে পূর্বসূরি আলেমদের মত ও পথের অনুসরণ করাই অধিক নিরাপদ। কেননা আমার ভয় হয়, সংস্কারের এই আওয়াজ প্রাচ্যে পশ্চিমাদের দাসত্ব করার বাহানা মাত্র। বিবেক-বুদ্ধি যদিও বলে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তবে অন্তর যদি তা সমর্থন না করে, তবে ঈমানের কোনো মূল্য নেই। ’

ইসলাহি খুতুবাত থেকে

মো. আবদুল মজিদ মোল্লার ভাষান্তর

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৩ নভেম্বর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ২:৫৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit