বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১০ পূর্বাহ্ন

বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরীদের ধর্মীয় পরিকল্পনা

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৫১ Time View

ডেস্ক নিউজ : বয়ঃসন্ধি হলো জীবনের একটি প্রক্রিয়া, গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যার মাধ্যমে নারী-পুরুষের শরীর শিশু অবস্থা থেকে কিশোর অবস্থায় পৌঁছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১০ বছর থেকে ১৮-১৯ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলে বা মেয়েকে কিশোর বা কিশোরী হিসেবে অভিহিত করা হয়। এর যেকোনো সময়ে বয়ঃসন্ধি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। অনেক সময় ১৮-১৯ বছরের পরও বয়ঃসন্ধির ব্যাপ্তি থাকে।

এটি নির্ভর করে দেশ, সংস্কৃতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনের ওপর। সাধারণত মেয়েদের বয়ঃসন্ধি ছেলেদের চেয়ে কিছুটা আগে শুরু হয়। মূলত ৯ থেকে ১২ বছরের মধ্যে যেকোনো সময় তা হতে পারে। অন্যদিকে ছেলেদের ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধি আসে ৯ থেকে ১৫ বছর বয়সের মধ্যে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের শরীর ও মনে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে। এ সময়ে ছেলেমেয়েরা দ্রুত বেড়ে উঠতে থাকে, তেমনি তাদের চিন্তা-চেতনায় দেখা দেয় ব্যাপক পরিবর্তন। পাশাপাশি এই সময় তারা ইসলামী শরিয়তের বিধানাবলি পালনের উপযুক্তও হয়ে ওঠে। কিন্তু সঠিক জ্ঞানের অভাবে হঠাৎ এই পরিবর্তন ও দায়িত্ব মেনে নেওয়া অনেক ক্ষেত্রেই কষ্টসাধ্য হয়ে থাকে। তাই অভিভাবকদের কর্তব্য হলো, বয়ঃসন্ধি শুরু হওয়ার আগে থেকেই এ সময়ের করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কে সন্তানকে শিক্ষা দেওয়া। বয়ঃসন্ধির এই সময়টা ছেলেমেয়ে সমান হলেও কিছু ক্ষেত্রে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের অবস্থা ভিন্ন হয়ে থাকে। কারণ মেয়েদের বয়ঃসন্ধির শুরুটা হয় সাধারণত ৯ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। তবে মাসিক না হলে চান্দ্রমাসের হিসাবে ১৫ বছর হলেই বালেগ বলে গণ্য হবে। তাই আজকের লেখায় বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরীদের সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার কয়েকটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হলো :

শারীরিক পরিবর্তন সম্পর্কে সঠিক ধারণা : মাসিক বা ঋতুস্রাব নারীদেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটা শুরু হওয়ার মাধ্যমে নারীর বালেগা, শারীরিক সুস্থতা ও সন্তান ধারণে সক্ষমতা নিশ্চিত হয়। তা ছাড়া মাসিকচক্রের সঙ্গে যুক্ত আছে ইসলামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিধান। তাই মেয়েদের বয়ঃসন্ধি শুরু হওয়ার আগে একজন নারী অভিভাবকের কর্তব্য হলো ঋতুস্রাবের বিষয়টি বুঝিয়ে বলা। এ সময়ের পবিত্রতা-পরিচ্ছন্নতা এবং এসম্পর্কীয় সঠিক মাসায়েল শিক্ষা দেওয়া। অন্যথায় সমবয়সী বা অন্য কোনো দুষ্ট বা মূর্খ বন্ধু-সহপাঠী থেকে ভুল কিছুই শিখবে। তাবেঈ উমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইলম ছাড়া আমল করবে সে সঠিকভাবে যতটুকু করবে না করবে, ধ্বংস করবে তার চেয়ে বেশি। ’ (তারিখে তাবারি : ৬/৫৭২)

পর্দা বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান ও সচেতনতা : কৈশোরে পা রাখতেই মেয়েদের মধ্যে বিভিন্ন শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়। আর তখন থেকেই একটি মেয়ের ওপর পর্দা ফরজ হয়। হঠাৎ করে পর্দার আড়ালে চলে যাওয়া মুশকিল হতে পারে। তাই অভিভাবকদের উচিত কিছুটা আগে থেকেই পর্দার ব্যাপারে উৎসাহিত করা। যেমন—নতুন বোরকা কিনে দেওয়া, স্বল্প আওয়াজে কথা বলার অভ্যাস গড়া, মাহরাম-গাইরে মাহরামের তালিকা করে দেওয়া এবং দৃষ্টির হেফাজত ও সতীত্ব রক্ষায় দ্বিন পালনে নারী সাহাবিদের গল্প শোনানো ইত্যাদি। মোটকথা পর্দাই নারীর সম্মান—এ কথা মনে-প্রাণে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস ও বাস্তবায়ন করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘এই বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। ’ (সুরা আহজাব, আয়াত : ৫৩)

তা ছাড়া ঘরে মাহরাম (যাদের সঙ্গে দেখা দেওয়া জায়েজ) পুরুষদের সামনে শালীন পোশাক ও ওড়না ব্যবহার করা। যদিও ঘরের ভেতর তাদের সামনে পর্দা করা জরুরি নয়, তবে খোলামেলা চলাফেরা করাও উচিত নয়। কারণ নারীর স্বভাবজাত অভ্যাস হলো লাজুকতা। তাই মাহরাম পুরুষের সামনেও স্পর্শকাতর অঙ্গগুলো ঢেকে রাখা একজন নারীর স্বভাবজাত সৌন্দর্য। বিছানা পৃথক করা : জন্মের পর থেকে সাধারণত সন্তানরা তাদের মা-বাবার সঙ্গেই ঘুমায়। তবে হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, এ অবকাশ শুধু ১০ বছর বয়স পর্যন্ত। এর পর থেকে সন্তানকে পৃথক বিছানায় বা আলাদা করে শোয়ানো আবশ্যক। যদিও বাবার সঙ্গে ছেলের এবং মায়ের সঙ্গে মেয়ের শোয়ার অবকাশ আছে। তবে এ ক্ষেত্রেও আলাদা থাকার সুযোগ থাকা অবস্থায় এমনটি করা উচিত নয়। আর হাদিসের কিছু বর্ণনায় সাত বছরের কথাও এসেছে। সেই হিসাবে সাত বছর বয়স হলেই বিছানা পৃথক করার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত।

বিশেষভাবে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় আগে বালেগা হয়ে থাকে। তবে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সুযোগ আছে। ১০ বছর হয়ে গেলে বিছানা পৃথক করা ওয়াজিব। সামর্থ্য থাকার পরও তা না করলে গুনাহ হবে। আমাদের সমাজে এ বিষয়ে যথেষ্ট অবহেলা রয়েছে। অথচ হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর হলে তাদের সালাতের জন্য নির্দেশ দাও। যখন তাদের বয়স ১০ বছর হয়ে যাবে, তখন (সালাত আদায় না করলে) এ জন্য তাদের মারবে এবং তাদের ঘুমের বিছানা আলাদা করে দেবে। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৫)

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৩ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/রাত ৮:০৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit