রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১৪ অপরাহ্ন

গভীর মহাকাশে উজ্জ্বল আলোর ঝলকানি, বিস্মিত জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২২
  • ১৩০ Time View

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পৃথিবী থেকে ২৪০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে একটি আলোর উজ্জ্বলতম ঝলকানি পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং সম্ভবত একটি ব্লাক হোল গঠনের ফলে উদ্ভূত হয়েছিল।

এটি গামা-রশ্মির বিস্ফোরণ এবং ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ। প্রথম ৯ অক্টোবর এটি একটি ঘূর্ণমান টেলিস্কোপে শনাক্ত করা হয়েছিল এবং সেখানে মহাকাশে এর আফটারগ্লো বা রক্তিম আলোর বিচ্ছুরণ এখনও সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা দেখছেন।

জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী ব্রেন্ডন ও’কনর এএফপি’কে বলেছেন, যে গামা-রশ্মি বিস্ফোরণ যা কয়েক’শ  সেকেন্ড স্থায়ী হয়, যেমনটি গত ৯ অক্টোবর রবিবার টেলিস্কোপে ধরা পড়েছিল। 

ধারণা করা হচ্ছে সেখানে আমাদের সূর্যের চেয়ে ৩০ গুণেরও বেশি বড় একটি নক্ষত্রের মৃত্যু ঘটছে।

তারাটিতে একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটে এবং একটি ব্লাক হোলে ভেঙে পড়ে। তারপর ব্লাক হোল ঘিরে চারপাশে একটি ডিস্ক তৈরি করে ভিতরে পতিত হতে থাকে এবং একটি শক্তির জেট বেরিয়ে যায়, যা আলোর গতির ৯৯.৯৯ শতাংশ বেগে ছড়িয়ে পড়ে।

ফ্ল্যাশটিতে ফোটন রেকর্ড ১৮ টেরাইলেক্ট্রনভোল্ট শক্তি বহন করেছে, এই সংখ্যাটি হবে ১৮ এর পরে  ১২টি শূন্য এবং এটি পৃথিবীর আয়নোস্ফিয়ারে দীর্ঘ তরঙ্গ রেডিও যোগাযোগকে প্রভাবিত করেছে।

ও’কনর বলেন, ‘আমাদের কাছে পৌঁছানো ফোটনের পরিমাণ এবং শক্তি সত্যিই রেকর্ড ভঙ্গ করছে।’ তিনিই  শুক্রবারের প্রথম দিকে নতুন করে পর্যবেক্ষণে চিলির জেমিনি সাউথ টেলিস্কোপে ইনফ্রারেড যন্ত্র ব্যবহার করেছিলেন৷

তিনি বলেন, ‘এই উজ্জ্বলতার কাছাকাছি  কিছু একটা আছে। সত্যিই একটি শতাব্দীর একটি বড় ঘটনা।’ 

গামা-রশ্মি গবেষণা প্রথম ১৯৬০-এর দশকে শুরু হয়েছিল, যখন মার্কিন উপগ্রহগুলি সোভিয়েত ইউনিয়নের মহাকাশে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে কিনা তা শনাক্ত করার জন্য। এগুলোর ডিজাইন করেছিল। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল এই ধরনের বিস্ফোরণগুলি আমাদের গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের বাইরে থেকে উদ্ভূত হয়েছে।

ও’কনর বলেন, ‘সাধারণভাবে গামা-রশ্মি বিস্ফোরণে একই পরিমাণ শক্তি নির্গত হয় যা আমাদের সূযর্কে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে তার সমগ্র জীবনকালের সমান শক্তি উৎপন্ন করে এবং এই ঘটনাটি সবচেয়ে উজ্জ্বল গামা রশ্মির বিস্ফোরণ।’ 

গত রবিবার টেলিস্কোপে ধরা পড়া এই গামা-রশ্মি বিস্ফোরণ ‘জিআরবি ২২১০০৯এ’ নামে পরিচিত, ইস্টার্ন টাইম রবিবার সকালে নাসার ফার্মি গামা-রে স্পেস টেলিস্কোপ, নীল গেহরেলস সুইফ্ট অবজারভেটরি এবং উয়িন্ড স্পেসক্রাফটসহ বিভিন্ন টেলিস্কোপে প্রথম দেখা যায়।

এটি সাগিট্টা নক্ষত্র মন্ডলের দিক থেকে উদ্ভূত হয়েছে এবং পৃথিবীতে পৌঁছানোর জন্য এই গামা রশ্মি আনুমানিক ১.৯ বিলিয়ন বছর ভ্রমণ করেছে। যা তার সূচনা বিন্দুর বর্তমান দূরত্ব থেকে কম, কারণ মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে।

এখন ইভেন্টটি পর্যবেক্ষণ করা সেই ঘটনাগুলির একটি ১.৯ বিলিয়ন বছরের পুরনো রেকর্ডিং দেখার মতো যা আমাদের সামনে উন্মোচিত হয়, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদেরকে ব্লাক হোল গঠনের মতো বিষয়গুলিতে নতুন অন্তর্দৃষ্টি খুলে দেয়ার একটি বিরল সুযোগ করে দেবে।

মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞানী ও’ কনর বলেছেন, ‘এটিই এই ধরণের বিজ্ঞানকে এত আসক্ত করে তোলে, যখন এই জিনিসগুলো ঘটে তখন আপনি অ্যান্ড্রেনাল গ্রন্থি থেকে অ্যান্ড্রোনালিন হরমোন নিঃসরণের কারণে তীব্র উত্তেজনা এবং উদ্দীপনার শারীরিক অনুভূতি অনুভব করেন।’ 

আগামী সপ্তাহগুলিতে এই গামা বিষ্ঠোরণের উৎস সম্পর্কে আরো নিশ্চিত হতে তিনি এবং অন্যরা অপটিক্যাল এবং ইনফ্রারেড তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের সুপারনোভাগুলো শনাক্ত করার জন্য পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাবেন, যা তাদের অনুমান সম্পর্কে প্রামাণ্য বিবরণ হাজির করবে এবং ঘটনাটি পদার্থ বিজ্ঞানের প্রচলিত বিধির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পূর্ণ হবে। 

সুপারনোভা বিস্ফোরণগুলি ভারী উপাদান তৈরির জন্য দায়ী- যেমন সোনা, প্লাটিনাম, ইউরেনিয়াম  এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাও এসব উপস্থিতি শনাক্ত করতে তাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রাখবেন। 

জ্যোতিপদার্থ বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এ ধরণে গামা বিষ্ফোরণ কখনো পৃথিবীর বিলুপ্তির কারণ হতে পারে।

কিউএনবি/অনিমা/১৫ অক্টোবর ২০২২,খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৩:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit