রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০২ পূর্বাহ্ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস: কি ঘটেছিল সেই সময়?

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২
  • ১৭১ Time View

ডেস্ক নিউজ : ২৩ আগস্ট। দিনটিকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে সেনা সদস্যের হাতে একজন ছাত্র লাঞ্ছিত হন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এরই প্রতিবাদে শিক্ষকরা প্রতিবছর ২৩ অগাস্টকে কালো দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন।

২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সেনা সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে ক্যাম্প স্থাপন করেন। ওই  বছরের ২০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের মধ্যকার ফুটবল খেলা নিয়ে শিক্ষার্থী ও সেনা সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধে। সেনা সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান। এর প্রতিবাদ জানাতে গেলে লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম সেনা সদস্যদের দ্বারা লাঞ্ছিত হন। এর প্রতিবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা সেনা সদস্যদের ছাত্রদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান। কিন্তু সেনা সদস্যরা তা প্রত্যাখান করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ থেকে সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।এর পরদিন ২১ আগস্ট নির্যাতনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা। স্বতঃস্ফূর্তভাবে তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন ক্যাম্পাসে। তখন তাদের ওপর আক্রমণ চালায় পুলিশ। নীলক্ষেত, টিএসসি, কার্জন হল এলাকাসহ ক্যাম্পাস পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। পুলিশের টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটে আহত হন শত শত ছাত্র। আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র থেকে ক্যাম্প সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় সেনাবাহিনী।

এর পরদিন ২২ আগস্ট এই আন্দোলন গোটা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠলে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২২ আগস্ট বিভাগীয় শহরগুলোতে কারফিউ জারি করে। ওই দিন সন্ধ্যার মধ্যেই ঢাবির আবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এরপর ২৩ আগস্ট রাতে আটক করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ও অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদকে। তাদের চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় অজানা স্থানে। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইদুর রহমান খান, আবদুস সোবহান, মলয় কুমার ভৌমিক, দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, আবদুল্লাহ আল মামুন ও সেলিম রেজা নিউটনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশের অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে ঢাবির আরও দুই শিক্ষকসহ ৫ ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

ঘটনার পর দীর্ঘ ৬৬ দিন পর খুলে দেওয়া হয় ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো নির্যাতনবিরোধী ব্যানারে মাঠে নামে। গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির আন্দোলনও বেগবান হতে থাকে। ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি আন্দোলনের কাছে হার মানে তৎকালীন সরকার। বাধ্য হয়ে গ্রেফতারকৃত ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়।

কালো দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি
প্রতি বছরের মতো এবারও দিবসটি পালন করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দিবসটি উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। কালো দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসগুলো সকাল ১১টা থেকে অপরাহ্ণ ১টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

কর্মসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ কালো ব্যাজ ধারণ করবেন। এছাড়া, সকাল ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রশাসনিক ভবনস্থ প্রফেসর আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

কিউএনবি/অনিমা/২৩.০৮.২০২২/সকাল ৯.১৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit