ডেস্ক নিউজ : চলমান অথনৈতিক সংকটের কারণে সরকার অধিকাংশ উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ কাটছাঁট করলেও অগ্রাধিকারভুক্ত ৮টি মেগা প্রকল্পকে এর বাইরে রাখা হয়েছে। এখানে গাড়ির জ্বালানি ব্যয়সহ ছোটখাটো কিছু ক্ষেত্রে একেবারে সীমিত আকারে খরচ কমানো হলেও মূল প্রকল্প ব্যয়ে হাত দেওয়া হয়নি। এরফলে প্রকল্পগুলোর কাজের গতি থেমে নেই। এগিয়ে চলছে প্রত্যাশিত অগ্রগতি। যুগান্তরকে এমনটিই জানিয়েছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্পগুলো হলো-পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ এবং দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মায়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিংগেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প। আইএমইডির সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব প্রকল্পের বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করা হয়। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের সূচকগুলো বলে দিচ্ছে কাজের অগ্রগতি গত বছরের তুলনায় অনেক ভালো। মাসিক পরিসংখ্যানেও একই চিত্র দেখানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৫ জুন পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন হলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হয়নি। জুলাই পর্যন্ত প্রকল্পটির আওতায় ব্যয় হয়েছে ২৭ হাজার ৯৮৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯২ দশমিক ৭০ শতাংশ। পুরো প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৫ দশমিক ১০ শতাংশ। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেও থেমে যায়নি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ। শুরু থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রকল্পটির ভৌত অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৫১ দশমিক ৫০ শতাংশ। প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৫৫ হাজার ৭১৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৪৯ দশমিক ২৭ শতাংশ।
মেট্রোরেল প্রকল্পে শুরু থেকে জুলাই পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৯ হাজার ৬৯২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এছাড়া সার্বিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৯২ শতাংশ। ডিসেম্বরে উত্তরা-আগারগাঁও অংশ খুলে যাবে জনগণের চলাচলের জন্য। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে জুলাই পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার ২৩৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৬১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এছাড়া ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৬১ শতাংশ।
এছাড়া মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে জুলাই পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার ৬৩৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি ৪৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং সার্বিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ৬ শতাংশ। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। জুলাই পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৩ হাজার ১২৮ কোটি টাকা। আর্থিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৮২ দশমিক ০৫ শতাংশ। ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৮৫ দশমিক ২৫ শতাংশ।
পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে জুলাই পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮১ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ভৌত অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৮৭ শতাংশ। এছাড়া দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মায়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিংগেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পে জুলাই পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ৭৪৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৩৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। এছাড়া ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৭৩ শতাংশ।
কক্সবাজার-ঘুমধুম রেল প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) মোহাম্মদ মফিজুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘প্রকল্পের সার্বিক কাজ ভালোভাবে এগিয়ে চলছে। তেমন কোনো বাধাবিপত্তি নেই। গাড়ির তেলসহ প্রশাসনিক কিছু ব্যয় কমানো হলেও সেটি মূল প্রকল্পে তেমন প্রভাব পড়বে না।’
কিউএনবি/আয়শা/২০ অগাস্ট ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/দুপুর ১২:০০