মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৪৫ অপরাহ্ন

অধ্যক্ষকে এমপির পিটুনির অভিযোগে তদন্ত কমিটি

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০২২
  • ১৪০ Time View

ডেস্কনিউজঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনকে।

অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে মারধর করার অভিযোগ উঠে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ি-তানোর) আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। গত ৭ জুলাই রাতে নগরীর নিউমার্কেট সংলগ্ন এমপির থিম প্লাজার চেম্বারে ওই ঘটনা ঘটে।

বুধবার ঘটনা জানা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। কমিটিকে সম্ভব দ্রুত সরেজমিনে গিয়ে ঘটনা সবিস্তর জেনে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বুথবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

রাজশাহী জেলা কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা দাবি করেছেন, ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ সেলীম রেজার সাথে তাঁর কথা হয়েছে। সেলীম রেজার বরাত দিয়ে শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘আরো সাত-আটজন শিক্ষকের, অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষের সামনে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী সেলীম রেজাকে কিল-ঘুষি, চড়-থাপ্পড় এবং একপর্যায়ে হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়েছেন। মারধরের সময় অন্য অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষরা চুপচাপ ছিলেন। ’

অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘ওমর ফারুক চৌধুরী তার নির্বাচনি এলাকার কলেজের শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে চাপে রাখেন। তিনি গোদাগাড়ী-তানোরের কোনো শিক্ষককে সমিতিতে আসতে দেন না। তাঁর ভয়ে কেউ আসতে পারেন না। এখন মারধরের বিষয়টি জানানো হলে আমি বলেছি আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে হবে। তাহলে বিষয়টা নিয়ে আমি মাঠে নামব। তা না হলে না। অভিযোগ না করলে পরে আবার পালিয়ে যাবে। অতীতে এ রকম বহু ঘটনা দেখেছি। ’

ঘটনার সময় উপস্থিত একাধিক অধ্যক্ষ মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানিয়েছেন, রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের একজন শিক্ষক আরেক কলেজের এক অধ্যক্ষ ও আওয়ামী লীগের নেতার স্ত্রী ও সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এই নালিশ যায় ফারুক চৌধুরীর কাছে। এ কারণে ওই নারীর স্বামী ও কলেজের অধ্যক্ষকে দিয়েই ফোন করে গোদাগাড়ীর আটটি কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের ফোন করে ডাকান ফারুক চৌধুরী।

এরপর ওই রাতে তারা গেলে ওমর ফারুক চৌধুরী অধ্যক্ষ সেলীম রেজার কাছে জানতে চান, তাঁর কলেজের শিক্ষক আরেক কলেজের অধ্যক্ষের স্ত্রীকে নিয়ে যে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন সে বিষয়ে তিনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন। জবাবে অধ্যক্ষ সেলীম রেজা বলেন, এ রকম কোনো বিষয় তাঁর জানা নেই। প্রমাণ পেলে তিনি অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন।

এ সময় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী একটি অডিও রেকর্ড শুনিয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তিনি উঠে গিয়েই সেলীম রেজাকে মারধর শুরু করেন। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে সবার সামনে তাকে পেটানো হয়। পরে অন্য অধ্যক্ষরা তাকে ওই কক্ষ থেকে বের করে একজন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসার পর তাকে বাসায় পৌঁছে দেন। এ ঘটনার পর লজ্জায় বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলেন না সেলীম রেজা। তবে ঘটনা জানাজানি হলে আতঙ্কে তিনি বাড়ি ছেড়েই চলে গেছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে বুধবার সকাল থেকে অধ্যক্ষ সেলীম রেজা গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার তিনদিন পর সংসদ সদস্য তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তাকেও দেখাও করতে বলেছেন।

তবে গোদাগাড়ীর একটি কলেজের এক অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, ভয়ে ওই অধ্যক্ষ সিরাজগঞ্জে তাঁর গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন।

অন্যদিকে অধ্যক্ষকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। তার দাবি, ম্যানেজিং কমিটি গঠন শিক্ষকরা মারামারি করলে তিনি থামান।

কিউএনবি/বিপুল/ ১৩.০৭.২০২২/ রাত ১০.১৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit