বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ: এক ম্যাচে ৬ রেকর্ড ঢাকার ১১ স্থানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, গ্রেফতার ১৩১ ৯ বলের সুপার ওভার, পাঁচ বলে ৫ রান করতে পারেনি বাংলাদেশ চিকিৎসক হয়েও সুরের ভুবনে ঝংকার তুলছেন রানা প্রশাসনে রদবদল নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি তাঁবেদার থেকে দেশ রক্ষার সুযোগ তৈরি হয়েছে: রেজাউল করিম দৌলতপুরে ক্লিনিক ব্যবসার আড়ালে দেহ ব্যবসা : আটক-২ অবিশ্বাস্য থ্রোতে ভাঙল ৪৪ রানের জুটি, বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরালেন মিরাজ ফুলের মতো পবিত্র মানুষগুলোই আপনাদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে”–কুড়িগ্রামে পথসভায় ব্যারিস্টার ফুয়াদ কিম বাহিনীর সঙ্গে উত্তেজনা, প্রতিরক্ষা জোরদারের ঘোষণা দক্ষিণ কোরিয়ার

ইংল্যান্ডের ‘টেস্ট ক্রিকেট বিপ্লব’র পাঁচ কারণ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০২২
  • ১২৯ Time View

স্পোটস ডেস্ক : ইংল্যান্ড শুধু টেস্ট ক্রিকেটই খেলছে না, টেস্ট ক্রিকেটকেও যেন বিনোদনের উপলক্ষ্য করে তুলছে। এই দলটিকে ৩৭৮ রানের লক্ষ্য দেয়ার পরেও এজবাস্টনে নিরাপদ বোধ করেনি ভারত।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর এবার ভারতের বিপক্ষে এজবাস্টন টেস্টও দাপটের সঙ্গে জিতে নিল বেন স্টোকসের দল।

ক্রিকেট বিশ্লেষক হার্শা ভোগলে টুইটারে লিখেছেন, ৩৬৫ বা তার বেশি টার্গেট কোনো দল টেস্ট ক্রিকেটে দেয়া মাত্রই তারা সাধারণত জয়ের পথে এক পা দিয়ে রাখে, কিন্তু এই ইংল্যান্ড দলটা অসাধারণ।

সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে ইংল্যান্ড শুরু করেছে ‘ইংলিশ টেস্ট ক্রিকেটের নতুন যুগ’। এটাকে ‘টেস্ট ক্রিকেটে বিপ্লব’ বলছেন অনেকে।

কী করেনি এই দলটা! ১৪১ রানে অলআউট হয়েও ২৭৭ রান তাড়া করে টেস্ট জয়। ৫০ ওভারে ২৯৯ রান তাড়া করে টেস্ট জয়। শেষ টেস্টে মাত্র ৫৪ ওভারে ২৯৬ রান তাড়া করে জয়!

ভারতীয় ক্রিকেটার দিনেশ কার্তিক লিখেছেন, ইংল্যান্ড যেন টেস্ট ক্রিকেটকে নতুন রূপে সংজ্ঞায়িত করছে। দিনেশ কার্তিক লিখেছেন, “আকর্ষণীয় ও উপভোগ্য, চোখের জন্য দারুণ।” 

এমনকি এই ঘরানার ক্রিকেটের একটা নামও রাখা হয়েছে- বাজবল। আর বাজ মূলত ইংল্যান্ডের নতুন টেস্ট ক্রিকেট কোচ ব্রান্ডন ম্যাককালামের ডাকনাম। যিনি এখন ইংল্যান্ডের নতুন টেস্ট ক্রিকেট কোচ।

কোচ যেভাবে বদলে দিলেন চেহারা
আইপিএল ইতিহাসের প্রথম ম্যাচটিই ছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিজ্ঞাপন। সেই ম্যাচে ভারতের বর্তমান কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের দল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে ইংল্যান্ডের বর্তমান টেস্ট কোচ ব্রান্ডন ম্যাককালাম ৭৩ বলে ১৫৮ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন। যা ছিল আইপিএলের জন্য একটা বড় পাওয়া।

ম্যাককালাম নিজের অধিনায়কত্বে ২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ডকে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালেও তুলেছিলেন। যে কোনো দলকে আত্মবিশ্বাস জোগাতে “ম্যাককালাম নিজেই একজন টোটকা” বলে মনে করেন ক্রিকেট বিশারদরা।

টেস্ট ক্রিকেটে পঞ্চম দিনে যে ২৫০-৩০০ রান তাড়া করা যায় এই বিশ্বাসটাই ইংল্যান্ড দলকে তিনি দিয়েছেন দায়িত্ব নেয়ার সাথে সাথে। ফলও পেয়েছেন হাতেনাতে। 

খেলোয়াড়ি জীবনেও একই রকম ছিলেন ব্রান্ডন ম্যাককালাম। নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচেই ৫৪ বলে শতক হাঁকিয়েছিলেন তিনি। ব্রান্ডন ম্যাককালামের সেই ইনিংসটি এখনো টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের দ্রুততম শতক।

ভারতের ব্যাটিং বিশ্লেষক ও সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফরের মতে, “ইংল্যান্ডের মানসিকতাই বদল গেছে ম্যাককালাম দায়িত্ব নেয়ার পর।”

যেমন ভারতের বিপক্ষে এই ম্যাচটাকেই উদাহরণ হিসেবে নেয়া যায়। এই ম্যাচটি ছিল মূলত গত বছর সম্পন্ন না হওয়া টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচ। যেখানে চতুর্থ টেস্টে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৩৬৮ রান। সেবার বিনা উইকেটে ১০০ থেকে শেষ পর্যন্ত ২১০ রানে গুটিয়ে গিয়ে ১৫৭ রানে ম্যাচটি হেরে যায় ইংল্যান্ড।

এর আগে এজবাস্টনে সর্বোচ্চ ২৮১ রান তাড়া করে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার এক লাফে সেটা দাঁড়াল ৩৭৮ রানে।

বেন স্টোকসের অধিনায়কত্ব
ম্যাককালামের কোচিংয়ের সঙ্গে যোগ হয়েছে এই টেস্ট দলের নেতা হিসেবে বেন স্টোকসের আবির্ভাব। ইংল্যান্ডের পুরুষ ক্রিকেট দলের টিম ডিরেক্টর রব কী এই দুজনকে যেন দায়িত্বই দিয়েছেন টেস্ট ক্রিকেটে বিপ্লব ঘটাতে।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের স্পিনার জ্যাক লিচ দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নেয়ার পর বিবিসি স্পোর্টকে বলেছিলেন, বেন স্টোকস তাকে বদলে দিয়েছেন।

চতুর্থ দিনের খেলা শেষে লিচ বেন স্টোকসকে নিয়ে বলেন, “অধিনায়ক হিসেবে স্টোকসের চিন্তা পরিস্কার। এটা আমাকে বল করতে সাহায্য করে। তার পরিকল্পনা আছে, আমরা তার পরিকল্পনা মেনে চলি। সে অধিনায়ক হিসেবে যা করছে তা অবিশ্বাস্য।”

এই তো কয়েকটা দিন আগেও ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের অবস্থা ছিল করুণ। গত বছর নয়টি টেস্ট হেরে প্রায় দুই দশক আগে বাংলাদেশের এক বছরে নয়টি টেস্ট হারার রেকর্ড ছুঁয়েছিল ইংল্যান্ড।

বেয়ারস্টোর টি-টোয়েন্টিসুলভ টেস্ট ব্যাটিং
ভারতের বিপক্ষে এজবাস্টন টেস্টে শতকসহ গত পাঁচ ইনিংসে চারটি শতক হাঁকালেন জনি বেয়ারস্টো।

নটিংহ্যামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯২ বলে ১৩৬ রানের ইনিংস দিয়ে শুরু। এরপর লিডসে ১৫৭ বলে ১৬২ এবং চলতি টেস্টেই দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি (১০৬ ও ১১৪*)।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বেয়ারস্টো ৩২৮ বলে ৩৯৪ রান তুলেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে তো বটেই, যে কোনো ফরম্যাটের ক্রিকেটেই এটা কঠিন কাজ।

একমাত্র শহীদ আফ্রিদি ২০০৫-০৬ মৌসুমে ভারতের বিপক্ষে ২৭২ বলে ৩৩০ রান তুলেছিলেন পাকিস্তানের মাটিতে তিন ম্যাচের একটি টেস্ট সিরিজে। 

বেয়ারস্টোর ক্ষিপ্রতার কারণেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে প্রতি ওভারে সাড়ে চারের ওপরে রান তুলেছে ইংল্যান্ড। মূলত বেন স্টোকসের সিদ্ধান্তেই বেয়ারস্টো এক ধাপ ওপরে ব্যাট করা শুরু করেন এবং সাথে সাথেই ফল পেয়েছে দল।

জো রুটের ধারাবাহিকতা
গত পাঁচ বছরেই ইংল্যান্ডের সদ্য সাবেক টেস্ট অধিনায়ক জো রুট প্রায় পাঁচ হাজারের মতো রান করেছেন। অর্থাৎ প্রতি বছরই তিনি প্রায় এক হাজার করে রান তুলেছেন। যিনি টেস্ট র‍্যাংকিংয়ে ব্যাটারদের তালিকায় এক নম্বরে আছেন। 

অধিনায়ক হিসেবে শেষ বছরটা অবশ্য ভালো যায়নি তার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে হারের পর অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন রুট। তবে এতে ব্যাটিংয়ের ধার কমেনি। নতুন অধিনায়কের অধীনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটো সেঞ্চুরি তুলেছেন জো রুট। এক ম্যাচে ৮৬ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েছেন। ২০২১ সাল থেকে জো রুটের টেস্ট ব্যাটিং গড় ৬০-এর ওপরে।

নতুন ক্রিকেট ডিরেক্টর রবার্ট কী’র বিচক্ষণতা
চলতি বছরের এপ্রিলেই ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আসে। তার মধ্যে একটি অ্যাশলে জাইলসের পরিবর্তে পুরুষ ক্রিকেটের পরিচালকের দায়িত্ব পান আরেক সাবেক ক্রিকেটার রবার্ট কী।

দায়িত্ব পেয়েই ইংল্যান্ডের ক্রিকেটে ‘সাধারণ কিন্তু বিস্তৃত’ পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন তিনি।

কী দায়িত্ব নেয়ার আগে ইংল্যান্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় আসরের পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে ছিল। তখনও টেস্ট দলের অধিনায়ক ঘোষণা হয়নি। নতুন কোচ হিসেবে কে আসছেন তাও জানা যায়নি।

ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটকে ‘পুনরায় জীবিত করার’ যে পরিকল্পনা ও আশা নিয়ে কী পরিচালকের পদে বসেছিলেন, সেটা আপাতত সফল বলেই মনে হচ্ছে।

রবার্ট কী দায়িত্ব পেয়েই বলেছিলেন, “আমরা ইংলিশ ক্রিকেটের সেরা যুগ হতে চাই।” আপাতত, সেটাই মনে হচ্ছে।

তাইতো এখন রবার্ট কী’কে ধন্যবাদ দিচ্ছেন সাবেকরা। নাসের হুসেইন ত আগেই বলেছিলেন, “আমি খুবই খুশি যে রব কী এসেছেন। স্কাই স্পোর্টসে আমি তার সাথে কথা বলেছি ছয় বছর। তিনি ক্রিকেটটা ভালো বোঝেন। আমি মনে করি ইংল্যান্ড খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”  সূত্র- বিবিসি বাংলা।

কিউএনবি/অনিমা/০৫ জুলাই ২০২২, খ্রিস্টাব্দ/রাত ১১:০৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit