এস.কে হিমেল,নীলফামারী : আকাশে মেঘ দেখলেই বিদ্যুৎ উধাও হয়ে যায় ডিমলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির। আর একটু ঝড়বৃষ্টি হলেতো কথাই নেই। দু-একদিনেও তখন বিদ্যুতের নাগাল পাওয়া যায়না। তাছাড়া ঝড়-বৃষ্টি ছাড়াই দিনে রাতে অনেকবার যাওয়া-আসার লুকোচুরির ব্যাপার তো আছেই! এছাড়া মাঝেমধ্যে ঘোষনা দিয়ে, আবার অনেক সময় ঘোষনা ছাড়াই লাইন সংস্কারের নামে সারাদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার
এটা হলো নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার হালচিত্র। বছরের পর বছর ধরে নীলফামারীর পল্লী বিদুৎ সমিতির এমন অব্যবস্থাপনায় একদিকে যেমন চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের, অন্যদিকে সরকারেরও ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন হচ্ছে এদের গাফিলতির জন্য। কিছু দিন আগে দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে খুঁটি ও তার পরিবর্তনসহ নানা সংষ্কার কাজ করা হয়েছে। কিন্তু এর পরেও সামান্য মেঘ-বৃষ্টি হলেই খুঁটিপড়ে যাওয়া বা তার ছিড়ে যাওয়ার অজুহাতে দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে সারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কল্পনাতীত উন্নতি সাধিত হলেও ডিমলায় বিদ্যুতের যাওয়া-আসার খেলা থেকেই যাচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। তারা এখন বলে আমাদের এখানের বিদ্যুৎ মাঝে মাঝে বেড়াতে আসে! এই আসে তো এই যায়। বিদ্যুতের এই যাওয়া-আসায় মানুষের ভোগান্তি চরমে।
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ লেখাপড়ার। এমনিতে করোনা কালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পাঠদানের বিকল্প নেই। ক্ষণে ক্ষণে বিদ্যুৎ না থাকায় বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ও ব্যবসা বাণিজ্যর উন্নতির জন্য বিদ্যুতের যাওয়া-আসা বন্ধ হবে বলে মনে করেন সুধীমহল, ছাত্র-ছাত্রী ও ব্যবসায়ী বৃন্দ। ডিমলা শুটিবাড়ী বাজারের ইলেক্টিক ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের স্বত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ আল মামুন ছাড়াও ডালিয়া, পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, চাপানীর হাট,একতা বাজার, নাউতারা বাজার, জোরজিগাসহ ডোমার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় হাজারো ব্যবসায়ী এই প্রতিনিধিকে জানান, আমাদের ব্যবসায়ই হলো লেদ মেশিন, ওয়াল্লিং মেশিন, গ্রান্ডিং মেশিন, ঝালাইসহ বিভিন্ন মেশিন বিদ্যুৎ ছাড়া চালানো সম্ভব নয়। সামান্য মেঘের গর্জন বা বজ্র চমকালেই বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু কিছু সময় পর মেঘ সরে গেলেও বিদ্যুৎ আর আসেনা। অনেক সময় সারা রাতেও বিদ্যুৎ না আসায় আমাদের এসব বাজার অন্ধকারে ভুতুড়ে অবস্থায় পরিনত হয়। এমনকি অন্ধকারে বহুবার বাজার চুরির ঘটনাও ঘটে অহরহ। এতে আইন শৃঙ্খলা অবনতি সহ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে অনেক পরিবার।
এ বিষয়ে ডোমার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম হেদায়েত উল্লাহ বলেন, আমাদের বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই তবে, ঝড় বা বৃষ্টির পূর্ব মুহূর্তে আমরা বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেই কারণ ঝড়ের পরবর্তী সময়ে যেন কোন দুর্ঘটনা না ঘটে। এছাড়াও ডোমার পল্লী বিদ্যুৎ এর অধীনে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন সচল রাখতে পল্লী বিদ্যুৎ এর মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরপরেও ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতেই পারে।
কিউএনবি/আয়শা/২০.০৫.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/সকাল ১০:৫০