শফি আহমেদঃ একজন কালজয়ী সাহসী মানুষের কথা
————————————————————
সত্যকথা সকলে বলতে পারেন না। বলতে চান না। সত্য কথা বলার জন্যে সাহস দরকার, হিম্মত দরকার। এই সাহস আর হিম্মত দেখে আসছি অনেক দিন থেকেই বড় ভাই শফি আহমেদ কাছ থেকে। ৮০ দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা, স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেষ পর্যন্ত তিনি ছিলেন সাহসের বাতিঘর হয়ে।
শফি আহমেদ ভাইয়ের ফেসবুক অহরহ গায়েব হয়ে যায়। হ্যাকড করে তারা, যারা শফি ভাইয়ের সত্যকথনে ফেসবুক পোস্টে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ে। শফি ভাইয়ের সাথে ফেসবুকে সংযুক্ত হওয়ার পর ইতোপূর্বে পরপর তাঁর ২টি আইডি হ্যাকড হয়েছে। আর ফেরত পাননি। একটা করে আইডি চলে যায় আবার নতুন করে তাঁর আইডিতে সংযুক্ত হই। বর্তমানে আমি তাঁর ৩য় আইডিতেও সংযুক্ত আছি বরাবরের মত।
বিশ্ব ,দেশ, সমাজের অসঙ্গতি গুলো দ্রুততার সাথে তিনি তাঁর ফেসবুকটাইমলাইনে পোস্ট দিয়ে থাকেন। কেউ যদি শফি ভাইর ফেসবুক টাইমলাইনে নিয়মিত ঢুকেন, তাহলে তাকে আর টিভির ব্রেকিং নিউজ সহ অন্যান্য নিউজগুলো দেখতে হবে না। পত্রিকার পাতায় ও নজর বুলাতে হবেনা। তাৎক্ষণিকভাবে শফি ভাইর ফেসবুকে সব তাজা, চমকপ্রদ খবর গুলো পাওয়া যায়।
বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একজন নেতা শফি ভাই। নেত্রকোনার খালিয়াজুরি, মোহনগঞ্জে আছে তাঁর নিয়মিত সংযোগ। সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রীক সকল ভূমিকা তিনি নিয়মিত করে থাকেন। এলাকার জনগণের সাথে তাঁর সুনিবিড় সম্পর্ক ও জনসংযোগ বিদ্যমান।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা হয়েও স্পর্শকাতর বিষয়গুলো প্রকাশে তিনি হীনমন্যতায় ভোগেন না। সত্যকথনে সরকারের ইমেজ ক্ষুন্নতার চেয়েও তার কাছে গুরুত্ববহন করে সত্যতা উপস্থাপনের বিষয়টি। এটি আমাকে চমৎকৃত করেছে।
পিয়াজের দাম বেড়েছে ? এর নিগূঢ় রহস্য বের হয়ে আসে তাঁর ফেসবুক পোস্টে। বেগুন নিয়ে কুমড়ার বিকল্পতা খোঁজা অথবা সয়াবিনের পরিবর্তে বাদাম তেল? কি নেই তাঁর পোস্টে ?
ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ অথবা সাম্প্রতিক শ্রীলংকার দিগম্বর পরিস্থিতি নান্দনিক ভাবে উপস্থাপিত হয় তাঁর টাইমলাইনে। শফি ভাইর মেধা, প্রজ্ঞা, সাহস, শক্তি দেখে মুগ্ধ হবেনা এমন মানুষ খুব কম। সংবাদ সিলেকশনে তিনি যথেষ্ট মেধার পরিচয় দিয়ে থাকেন। এটি তাঁর বিশেষ গুন।
আজ থেকে ৩৬ বছর আগে দেখা শফি ভাই এখনো ঠিক আগের মতই আছেন। তাঁকে কোনোদিন প্যান্ট ইন করে পড়তে দেখিনি। কোলাপুরি স্যান্ডেল পায়ে প্যান্ট আর হাফ শার্ট ছাড়া তাঁর বিশেষ কোন লেবাসের কথা মনেই পড়েনা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সারাদেশে ৮০ এর দশকে ঝড়ের গতিকে থামিয়ে দেয়ার মত দুর্দমনীয় সাহসী ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রকৃত কোন যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্র সংগঠন থাকলে সেটি ছিল জাসদ ছাত্রলীগ। আর এই জাসদ ছাত্রলীগের মাঠ পর্যায় থেকে শীর্ষ পর্যন্ত পুরোধা হতে পেরেছিলেন সফি আহমেদ ভাই। আমি নিজেই তাঁর ছাত্র সংগঠনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রসংগঠনের একজন হয়েও তাঁর নিখাদ স্নেহাশীষ থেকে দূরে ছিলাম না। এমন অনেকেই অনেক সংগঠনের মানুষ আমার বক্তব্যকে সম্পূর্ণ ভাবেই সমর্থন করবেন।
দেশে এখন অসংখ্য টেলিভিশন। ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়ার অভাব নেই। কিন্তু কয়টি গণমাধ্যমের হিম্মত আছে সত্য উপস্থাপনের ? সত্য কথা বলা, ভাবা, চিন্তা করা, উপস্থাপন করা অথবা ধারণ করার ? সাহসের এক বাতিঘর শফি আহমেদ ভাই। আই উইল স্যালুট হিম, টিল দ্য ইন্ড। ভাল থাকুন আমাদের প্রিয় বড়ভাই শফি আহমেদ।
লেখকঃ লুৎফর রহমান, রাজনীতিবিদ ও কলামিস্ট।
কিউএনবি/বিপুল/১২.০৫.২০২২ খ্রিস্টাব্দ/ দুপুর ১২.১৬