
সিলেট প্রতিনিধি : সিলেট শহরতলীর জালালাবাদ থানাধীন মইয়ারচর গ্রামে আদালতের নির্দেশে স্থগিতাদেশ থাকা স্বত্ত্বেও জোরপূর্বক ৩৬ শতক জায়গা দখল করে মইয়ারচর নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সিলেটের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে আবেদন করেছেন মইয়ারচর গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে মৌরসী সূত্রে ভূমির মালিক মাসুম আহমদ। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি এসএমপির জালালাবাদ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন মাসুম।তিনি জানান, মইয়ারচর নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকবর হোসেন রাজা ও তার সহযোগীরা জোর করে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নতুন ভবন নির্মাণ করছেন।
মাসুম আহমদ বলেন, মূলত ভবন নির্মানের নামে আমার জায়গা দখল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকবর হোসেন রাজা। উক্ত জায়গার উপর সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে সিভিল রিভিশন মামলা (নং- ১০২৬/২০১৯ইং) চলমান রয়েছে। মামলা চলাকালীন ২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই ভূমির উপর সকল প্রকার স্থাপনা নির্মাণ ও ভোগ দখলের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। ২০২১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক কাশেফা হুসাইন এই স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক আকবর হোসেন রাজা উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে পেশী শক্তি ব্যবহার করে ভবন নির্মাণ করছেন। প্রকৃতপক্ষে ওই ভূমির উপর ভবন নির্মাণের জন্য সরকারি কোন অনুমোদন নেই।
২০১৬ সালের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর বিদ্যালয়ের জন্য ৪ তলা ভবন নির্মানের অনুমোদন দেন। তখন ২ তলা ভবন নির্মানের পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ৬ বছর কাজ বন্ধ থাকার পর সেই ভবনের ৩ ও ৪ তালা নির্মাণের কথা বলে বিতর্কিত জমিতে পূর্বের টেন্ডারে নতুন ভবন নির্মাণ শুরু করেন আকবর হোসেন রাজা। পুরনো ভবনের টেন্ডারের অনুমোদিত কপিকে বানচাল করে ও নির্বাহী প্রকৌশলীকে ভূল বুঝিয়ে চতুর প্রধান শিক্ষক বিতর্কিত ওই জমি দখলের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।এ ব্যাপারে সিলেটের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল হাকিম জানান, মাসুম আহমদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই জায়গার উপর নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হয়েছে। পুরাতন ২য় তলা বিল্ডিংয়ের ৩ ও ৪ তলা নির্মাণের কাজ চলছে।
কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- ইতোমধ্যে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশপ্রাপ্ত ভূমিতে মাটি কাটা শেষে ১৫টি পিলার নির্মাণ করা হয়েছে। আবেদনের ২২ দিন হলেও এখনও ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ করা হয়নি, উল্টো প্রতিদিনই তাড়াহুড়া করে শ্রমিক বাড়িয়ে নির্মাণ কাজ চলমান রাখছে ওই কুচক্রি মহল।নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে মাসুম আহমদ সরকার ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরেও কাজ বন্ধের আবেদন করেছেন। এর অনুলিপি ভূমি মন্ত্রী, ভূমি সচিব, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ও সিলেট মহানগর রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে প্রেরণ করা হয়।জানা যায়, আকবর হোসেন রাজা চিহ্নিত ভূমিখেকো। ২০১৮ সালে ভূমি দখল নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় জালালাবাদ থানায় দায়েরকৃত মামলায় (যার নং- ২০, ২৯.১০.২০১৮ইং) ২ মাস জেল খাটেন। বর্তমানে তিনি ওই মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামী। তা স্বত্ত্বেও বহাল তবিয়তে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
কিউএনবি/অনিমা/৩রা মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/রাত ৯:৩৯