মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন

জলবায়ু পরিবর্তনে লাখো মানুষের বাস্তুচ্যুতির আশঙ্কা : আইপিসিসি প্রতিবেদন

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২
  • ৬৭ Time View

 

ডেস্ক নিউজ : জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশ চরম উষ্ণতা ও আর্দ্রতাঝুঁকি, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ার মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে।  এর কারণে লাখ লাখ মানুষের বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি শিল্প ও কৃষি উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে।  সর্বশেষ এক প্রতিবেদনে এ আভাস দিয়েছে আইপিসিসি। সম্প্রতি জলবায়ুর প্রভাব প্রশমনের ওপর জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) ওয়ার্কিং গ্রুপ-২ এআর৬ এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব প্রকল্পে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ অব্যাহত রয়েছে, সেগুলো বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির প্রতি হুমকি সৃষ্টি করবে এবং এর ফলে জাতীয় অর্থনীতি মারাত্মক অভিঘাতের সম্মুখীন হতে পারে, যা প্রবৃদ্ধিকে থমকে দেবে।  প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। কারণ জলবায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশের বার্ষিক দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ২  থেকে ৯ শতাংশ কমতে পাবে এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১ থেকে ২ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে। ’

প্রতিবেদনটির প্রধান লেখকদের অন্যতম সমন্বয়কারী ড. রওশন আর বেগম বলেন, ‘এ প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে যে জলবায়ু পরিবর্তন ও সমুদ্রের পানির স্তর বাড়ার কারণে শতাব্দীর মাঝামাঝি বা শেষের দিকে বাংলাদেশের বার্ষিক জিডিপি ২ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশ কমতে পাবে এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১ থেকে ২ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। ’অতি-দারিদ্র্য, আয়বৈষম্য, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য ক্ষতি এবং নিম্ন অভিযোজন সক্ষমতাসহ দেশের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো আরো কঠিন হয়ে পড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধান উৎপাদন ১২ থেকে ১৭ শতাংশ ও গম উৎপাদন ১২ থেকে ৬১ শতাংশ কমতে পারে।

প্রতিবেদনটির অন্যতম প্রধান লেখক মো. আরফানুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব মোকাবেলা করছে, আগামী বছরগুলোতে তার চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে। এমনটা হওয়ার আশঙ্কাই প্রবল যে আমাদের অধিকাংশ অভিযোজন পদক্ষেপই ১ দশমিক ৫ ও ২ সে. উষ্ণতায় অকার্যকর হয়ে পড়বে। ’প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমান নিঃসরণ পরিকল্পনার কারণে এ শতাব্দীতে সমুদ্রের পানির স্তর বাড়বে। আর এর ফলে দেশের কিছু অংশের কৃষিজমির ৩১ থেকে ৪০ শতাংশ তলিয়ে যাবে। সমুদ্রে পানির স্তর বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট বন্যা এড়াতে আগামী দশকে দেশের এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ পরিকল্পনার পুনর্বিন্যাস করতে হতে পারে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এমন একটি অবস্থানে অবস্থিত, যেখানে দ্রুত কার্বণ নিঃসরণ বন্ধ করা না হলে অসহিষ্ণু উষ্ণতা ও আর্দ্রতা দেখা দেবে। যদি নিঃসরণ বৃদ্ধি পেতেই থাকে, তবে চলতি বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশের কিছু অংশের উষ্ণতা ও আর্দ্রতা মানুষের সহনশীলতার মাত্রা অতিক্রম করবে।জলবায়ু পরিবর্তন ও পানির ক্রমবর্ধমান চাহিদার ফলে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ পানিসংকটে পড়বে। বর্তমানে প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ পানিসংকটে রয়েছে। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদী অববাহিকায় ক্রমবর্ধমান বন্যার সৃষ্টি হবে।

এ ছাড়া জলবায়ুর কারণে আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন, বাজার, অর্থনীতি ও ব্যবসার ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে, বাংলাদেশে পণ্যের ঘাটতি দেখা দেবে এবং পণের দাম বাড়বে। পাশাপাশি বাংলাদেশের রপ্তানিও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রতিবেদনটিতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দেওয়ার পাশাপাশি ঝুঁকি হ্রাস ও স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির জন্য অভিযোজনের পন্থাগুলো তুলে ধরা হয়েছে।

সূত্র : বাসস।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১লা মার্চ, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ/বিকাল ৩:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit