قُلۡ اَعُوۡذُ بِرَبِّ النَّاسِ ۙ﴿۱﴾ مَلِکِ النَّاسِ ۙ﴿۲﴾﴾اِلٰهِ النَّاسِ ۙ﴿۳﴾مِنۡ شَرِّ الۡوَسۡوَاسِ ۬ۙ الۡخَنَّاسِ ۪ۙ﴿۴﴾الَّذِیۡ یُوَسۡوِسُ فِیۡ صُدُوۡرِ النَّاسِ ۙ﴿۵﴾مِنَ الۡجِنَّۃِ وَ النَّاسِ ﴿۶
উচ্চারণ : ১.কুল আউযু বি-রাব্বিন নাস। ২. মালিকিন নাস। ৩. ইলাহিন নাস। ৪. মিন শররিল ওয়াস ওয়াসিল খান্নাস। ৫. আল্লাযী ইউওয়াস-বিসু ফী ছুদুরিন্নাস। ৬.মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস।
অর্থ : বলো, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করি মানুষের রবের কাছে। মানুষের অধিপতির কাছে। মানুষের উপাস্যের কাছে। মন্দ প্রবৃত্তির কুমন্ত্রণা থেকে, যে পিছনে লুকায়। যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে। জিন ও মানুষের মধ্য থেকে। (সুরা নাস, আয়াত : ১-৬)
সুরা নাসের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
এ সুরা মানুষকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মহান আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতে শিক্ষা দেয়। মহান আল্লাহকে তিনটি গুণে সম্বোধন করা হয়েছে এ সুরায়:
১. রব্বিন নাস (মানুষের রব) : মহান আল্লাহ মানুষের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা।
২. মালিকিন নাস (মানুষের অধিপতি) : তিনি মানুষের উপর সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী।
৩. ইলাহিন নাস (মানুষের উপাস্য) : তিনিই একমাত্র উপাসনার যোগ্য।
শয়তান মানুষকে ‘ওয়াসওয়াস’ (কুমন্ত্রণা) দেয় এবং ‘খান্নাস’ (পিছনে লুকিয়ে থাকে)। এই কুমন্ত্রণা জিন ও মানুষ উভয়ের থেকে আসতে পারে, যা মানুষের অন্তরে মন্দ চিন্তা ও পাপের প্রতি প্ররোচিত করে।
হাদিস শরিফে প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর সুরা নাস পড়ার গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। এক বর্ণনায় এসেছে, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা সুরা ইখলাস ও এই দুই সুরা পড়বে সে সব বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৯০৩)
সুরা নাসের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত আছে, নবীজি (সা.)–কে যখন জাদু করা হয়, তখন সুরা ফালাক ও সুরা নাস নাজিল হয় এবং তিনি এই দুই সুরা পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন এবং আরোগ্য লাভ করেন। (সুনান নাসাঈ, হাদিস: ৫৪৩৭)
এই সুরা পড়া শয়তানের কুমন্ত্রণা, জাদু, হিংসা এবং অন্যান্য ক্ষতি থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। তাফসিরে ইবনে কাসিরে বলা হয়েছে, সুরা নাস মানুষকে শয়তানের মানসিক ও আধ্যাত্মিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। (তাফসির ইবনে কাসির : ৮/৫৩৬)।