ডেস্ক নিউজ : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পাশাপাশি জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনৈতিক ভূমিকা তদন্ত করে জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার ও আহতরা। তাদের অভিযোগ, সহিংসতা শুধু ব্যক্তি বা প্রশাসনিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল না, এটি ছিল সংগঠিত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ফল, যার দায় আরও বিস্তৃত।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে রায় পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় তারা এসব কথা বলেন। শহীদ মীর মুগ্ধের বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনার যে দানবতা আমরা দেখেছি, তার জন্য শুধু ব্যক্তি নয়, তার দল আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করা উচিত। এজন্য ফ্যাসিস্ট বলা হলেও কম বলা হয়। এই দল জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান করেছে। রাষ্ট্রকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু রায় চাই না, রাজনৈতিক দায়ও নির্ধারণ চাই। যারা হত্যার পরিবেশ তৈরি করেছে, তাদের আইনি ও রাজনৈতিক জবাবদিহি হওয়া দরকার। মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফাঁসি যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়, এটাই আমাদের দাবি। আর মামুনের যে মাত্র পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে, আমরা তা মেনে নেইনি। কমপক্ষে যাবজ্জীবন আশা করেছিলাম। আদালত যেন এটি পুনর্বিবেচনা করেন, আপিলের মাধ্যমে হলেও।
রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় শহীদ মিরাজের বাবা আব্দুর রব বলেন, আমরা কোনো ব্যক্তি নয়, পুরো ঘটনার বিচার চাই। আওয়ামী লীগ যেভাবে রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে, সেটা শুধু একজন নেতার সিদ্ধান্ত হতে পারে না। জাপা ও ১৪ দল সে সময় যেভাবে সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে, সেই রাজনৈতিক সমর্থন ছাড়া এত বড় গণহত্যা সম্ভব ছিল না। আমরা চাই তাদের ভূমিকারও বিচার হোক।
তিনি আরও বলেন, আজকে তিনজনের সাজা হলো, ঠিক আছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো যে পরিবেশ তৈরি করেছে, সেই দায়ও সমান। যারা জোটবদ্ধ হয়ে সরকারকে রক্ষা করতে মাঠে নেমেছিল, তাদের বিচারের আওতায় না আনা হলে এই বিচার অসম্পূর্ণ থাকবে।
রায়ের পর আদালতপাড়ায় জড়ো হওয়া শহীদ পরিবার ও জুলাই আহতরা জানান, ব্যক্তিগত শাস্তি ঘোষণায় তারা স্বস্তি পেলেও রাজনৈতিক বিচার ও সংগঠিত দায় নির্ধারণের দাবি এখনো পূর্ণ হয়নি।
কিউএনবি/আয়শা/১৭ নভেম্বর ২০২৫,/সন্ধ্যা ৬:২৮