ডেস্ক নিউজ : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোল সম্প্রদায়ের পাঁচটি পরিবার বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের শিকার হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রায় ৪০ বছর ধরে তারা ওই জায়গায় বসবাস করছিলেন।
রায়ের পর সোমবার রাজশাহী জেলা জজ আদালতের নাজির বিশ্বজিৎ ঘোষ, আইনজীবী নাসির উদ্দিন ও গোদাগাড়ী থানার উপপরিদর্শক আবুল কালামের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এক্সকেভেটর দিয়ে বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাঁচটি বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। পাঁচটি পরিবারের প্রায় ২০ জন সদস্য বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন।
উচ্ছেদ হওয়া রুমালী হাসদা জানান, তারা জায়গাটি খাসজমি ভেবে বসবাস করছিলেন। পরে জানতে পারেন জমিটি তিলক মাঝি, দিনু মাঝি ও ভাদু মাঝি নামে কয়েকজনের নামে রেকর্ডভুক্ত ছিল। তিনি বলেন, তারা আমাদের জাত-ভাই। পরে তাদের হিন্দু সাজিয়ে মকবুল হোসেন নামের একজন ওই জমি রেজিস্ট্রি করে নেন। পরে মকবুলের ওয়ারিশরা আদালতে মামলা করে জমি বুঝে নেয়।
তিনি বলেন, আদালতের একতরফা রায়ে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, কোনো নোটিশও দেওয়া হয়নি। বাড়ির জিনিসপত্র, রান্না করা খাবার কিছুই বের করতে পারিনি। সবই মাটির নিচে চাপা পড়েছে। দুই দিন ধরে খাওয়া-দাওয়া ভুলে আমরা বাঁশঝাড়ে আছি।
পরিবারগুলোর এমন দুরবস্থার খবর পেয়ে বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিচিত্রা তিরকি, সাধারণ সম্পাদক নরেন পাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, দপ্তর সম্পাদক নকুল পাহান, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক টুনু পাহানসহ সংগঠনের অন্য নেতারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহম্মেদও। জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম বলেন, জাল দলিল করে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এটা ন্যক্কারজনক ও জঘন্যতম কাজ। পরিবারগুলো ৪০ বছর ধরে বসবাস করছে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যাওয়ার পর একটি দল এ সুযোগ নিয়েছে।
জানতে চাইলে গোদাগাড়ীর ইউএনও ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, এটা আদালতের বিষয়, তাই মন্তব্য করার সুযোগ নেই। তবে মানবিক কারণে আমি তাদের দেখতে গিয়েছি। পরিবারগুলো দুই দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে রয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে তাদের অস্থায়ী থাকার ব্যবস্থা করতে বলেছি। পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করা হবে।
কিউএনবি/আয়শা/২৯ অক্টোবর ২০২৫,/রাত ১০:৪৩