মোঃ আফজাল হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধি : সংঘবদ্ধ আওয়ামী লীগ দলীয় অপরাধী চক্রের গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার বিএনপি নেতা মমিনুল হক তাঁর পুত্র সুমন মিয়া সহ কর্মীরা গতকাল বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করেছে। দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায় শালিকার সঙ্গে পরকীয়ায় গনপিটুনির শিকার মাফিজুল হক (৪৮) রংপুর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুর ঘটনার হয়রানি মুলক ভাবে স্থানীয় বিএনপি নেতা সহ অন্যান্যদের নামে পার্বতীপুর মডেল থানায় ২২ জনকে আসামি করে ১৪ই সেপ্টেম্বর মামলা রেকর্ড হয়।
যার মামলা নং ১৩ তাং ১৪/৯/২৫ইং। মামলা রেকর্ড হওয়ার পর থেকে পলিপাড়া ও কোটওয়াল পাড়া এলাকা পুরুষ শুন্য হয়ে পড়ে। জানা গেছে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা এবং নিজের অপকর্ম লুকাতে নিহত মাহফিজুলের ছেলে সজীব ইসলাম তার বাবার পূর্ব শত্রুদের সঙ্গে আঁতাত করে মধ্যপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের জমির লিজ বাতিল কে কেন্দ্র করে বিবাদের কারণ দেখিয়ে প্রকৃত বৈধ লিজ ধারীগন সহ স্থানীয় বিএনপি নেতা মমিনুল হক কে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করায় জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
মাফিজুল হক নিহত হওয়ার পর পুলিশ আটক কৃত ০৪ জনকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন প্রতিবেদনে স্পষ্ট উল্লেখ করেন ” মাহফিজুল হকের সহিত শালিকা ফেন্সি আরার দীর্ঘ দিনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক বিদ্যমান। সেই সুত্র ধরে ০৪/০৯/২৫ তারিখ রাত্রী ২.০৫ ঘটিকার সময় মাফিজুল হক শালিকা ফেন্সি আরা বেগম (৪০) এর শয়ন কক্ষের ভিতরে প্রবেশ করে উভয়ই শারিরীক সম্পর্কে মিলিত হইলে ফেন্সি আরার স্বামী আসামি বনিজ উদ্দিন (বকুল) দু’জন কেই হাতে নাতে আটক করে রশ্মি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করে।
মধ্যপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ উজ্জ্বল মৈত্র স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে আদালতে উপস্থাপন নথিতে পার্বতীপুর মডেল থানার জিডি নং ২০৪ তারিখ ০৪/০৯/২৫ ধারা ফৌঃকাঃবিঃ ৫৪ এবং ক্রমিক নং০২/২৫( পার্বতীপুর) প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর /২৫ পার্বতীপুর উপজেলার মধ্য পাড়া পাথর খনি এলাকার পলিপাড়া গ্রামের মৃত্যু আনছার আলীর ছেলে মোঃ মাফিজুল হক পার্শ্ববর্তী খাগড়াবন্দ কোটওয়াল পাড়ায় শালিকা ফেন্সিয়ারা ঘরে গিয়ে মেলামেশার সময় আটক হয়ে মারপিটে শিকার হয় এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়।
নিহত মাফিজুলের ভায়রা বনিজ উদ্দিন বকুল ছাড়াও ছেলে মোঃ সজীব ইসলাম স্ত্রী সঞ্জুয়ারা বেগম নির্যাতনে অংশ নেয় এবং মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীগনের ভাষ্য ও ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এ খবরটি’র সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনায় মাফিজুলের ছেলে সজীব ইসলাম জানান গত ৮/৯/২৫ তারিখে থানায় মামলা দায়ের করতে গেল সংশ্লিষ্ট ওসি আমাকে মামলার বাদী না করে আসামি করার হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় , মাফিজুল ইসলাম গত কয়েক বছর যাবত তার আপন ভায়রা বনিজ উদ্দিন বকুলের স্ত্রী ফেন্সিয়ারা বেগমের সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত শারিরিক যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলে। তারা দুজন অসংখ্য বার স্থানীয় লোকদের হাতে ধরা পড়ে সামাজিক বিচারের মুখোমুখিও হন।বিগত ৭ ফেব্রুয়ারী/২৫ শালিকা ফেনসিয়ারার দায়ের কৃত ধর্ষন মামলায় মাফিজুল হক আসামী হয়ে দুই মাস জেল হাজত খাটেন। শুধু তাই নয় মধ্যপাড়া কলেজ মাঠের শাহ আলম ড্রাইভারের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী মোছাঃ তহুরা বেগমের সঙ্গে তার ব্যাবসায়ীক দোকানে কয়েক দফায় অপ্রীতিকর অবস্থায় আটক হয়ে জনরোষে পড়ে জেল হাজতে যায়।
পরকিয়া করতে গিয়ে প্রান হারানোর ঘটনা আড়াল করতে কতিপয় চক্রান্তকারী মধ্যপাড়া রেলস্টেশনের পতিত কয়েক একর জমি নিয়ে মাফিজুল গংদের সঙ্গে বৈধলিজ ধারিদের বিরোধ চলমান থাকার সুযোগ কাজে লাগাতে বিষয় টি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টায় নিরাপরাধ বিএনপি পন্হি সাধারণ মানুষ গুলোকে হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকা বাসী মাফিজুল হত্যার সঠিক বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, যেহেতু মাফিজুল কে হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বে তার ছেলে সজীব মিয়া স্ত্রী সন্জুয়ারা বেগম নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে যা ভাইরাল ভিডিও তে স্পষ্ট দৃশ্য মান, তাই আসামি তালিকায় তাদের নাম থাকা উচিৎ ছিল ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান নিহত মাফিজুল হকের সঙ্গে দীর্ঘদিন হতে রেলওয়ের জমির দখল এবং আওয়ামিলীগ দলীয় প্রভাব নিয়ে প্রতিবেশী বকুল মিয়ার ছেলে মাহাবুবুর রহমানের অস্তিত্বের লড়াই চলছিল এবং দফায় রক্ত ক্ষয়ী সংঘর্ষ সহ কয়েকটি মামলা চলমান থাকা অবস্থায় কৌশলী মাহাবুর মাফিজুলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে হাত মিলায়। আহত মাফিজুল কে হাসপাতালে নেওয়ার সময় চিরশত্রু মাহবুব একই গাড়িতে ছিল , সন্দেহের তীর সে এড়াতে পারে না।
উপজেলার ১০ নং হরিরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান মোজাহিদুল ইসলাম সোহাগ এর আর্শিবাদ পুষ্ট হওয়ায় মাহফিজুল বেপরোয়া ভাবে চলতো এবং আইনের তোয়াক্কা করতো না বলেই শালিকার বাড়িতে বীরদর্পে যাতায়াত করতো। সোহাগ চেয়ারম্যান তার সকল অপকর্মের মদদদাতা এবং মধ্যপাড়া ভাদুরীবাজারের বিভিন্ন জায়গা দখল করে তার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতো বলে এলাকাবাসী জানান। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন বিএনপির কৃষক দলের সিনিয়র সহ -সভাপতি সাইমুল ইসলাম বলেন, মাফিজুল নিহতের সঠিক সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত হোক এটা আমারাও দাবি করি।
তবে শালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে নিহত হওয়ার ঘটনা আড়াল করতে রেলওয়ের বৈধ লিজ ধারী দের জড়িয়ে মামলা দায়ের গভীর ষড়যন্ত্র, সেই সঙ্গে বিএনপি নেতা মমিনুল ইসলাম এবং তার ছেলে তরিকুল ইসলাম সুমন সহ অন্যান্য বিএনপি কর্মিদের নামে মামলা দিয়ে হয়রানির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি পুলিশ প্রশাসন নিশ্চয়ই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করবেন।
কিউএনবি/আয়শা/২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, /সন্ধ্যা ৬:১৪