বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
অরিকে পেছনে ফেলে ফ্রান্সের রেকর্ডবুকে এমবাপ্পে ঢাক ঢোল পিটিয়ে জমির প্রকৃত মালিককে জমি বুঝিয়ে দিলেন প্রশাসন । নরসিংদীতে জোড়া খুন  দুর্গাপুরে বিএনপি‘র দুই নেতা বহিষ্কার পাবনায় ইছামতি নদী পাড়ের বৈধ বসতিদের ক্ষতিপূরণ দাবিতে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি প্রদান শিশুদের টাইফয়েড প্রতিরোধে দুর্গাপুর স্বাস্থ্য বিভাগের সংবাদ সম্মেলন পিসিসি’র উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত রাঙামাটিতে ট্রাক টার্মিনালের জায়গা উদ্ধারের দাবিতে সড়ক অবরোধ নোয়াখালীতে যাত্রী চাউনি নির্মাণের নামে খাল ভরাটের অভিযোগ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে আদিবাসী শব্দ ব্যবহারের প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে আদিবাসী শব্দ ব্যবহারের প্রতিবাদে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১২ Time View

আলমগীর মানিক,রাঙামাটি : বর্তমান সরকারের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ১৯৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ১১৩, ১৪৬,১৪৭,১৪৮ পৃষ্ঠায় বিতর্কিত  আদিবাসী শব্দের ব্যবহারের প্রতিবাদে ও উক্ত প্রতিবেদন থেকে আদিবাসী শব্দ বাদ দেওয়ার দাবিতে পার্বত্য রাঙামাটি শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সচেতন ছাত্র- জনতা। বুধবার  (১০ সেপ্টম্বর)রাঙামাটি পৌরসভা  প্রাঙ্গণে সচেতন ছাত্র- জনতা রাঙামাটি পার্বত্য জেলার উদ্যােগে এই কর্মসূচী পালন করা হয়। উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান।  

পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলার সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজ এর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ মোশাররফ হোসেন এর সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সম-অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি’র রাঙামাটি জেলা সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান, সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম, সহ-সভাপতি কাজী জালোয়া, কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি আসিফ ইকবাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, যুগ্ন সম্পাদক হাবীব আল মাহমুদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন, রাঙামাটির সাধারণ সম্পাদক মো: আলমগীর হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ইসমাঈল গাজী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত (০৫ আগষ্ট২০২৪) হাজার প্রাণের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার পথে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। এরপর আমরা আশা করেছিলাম দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ হবে। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু উপজাতীয় কুচক্রী মহল ও সমতলের বাম সংগঠনের সুশীল নামধারী ষড়যন্ত্রকারীরা দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসী ইস্যু নিয়ে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। মূলত গণমাধ্যমে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার এরপরে সাংবিধানিক স্বীকৃতি আদায় এরপরে বাংলাদেশ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার এমনি ভয়ংকর পরিকল্পনা থেকে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে সুপারিশ কৃত প্রতিবেদনে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার করেছে যা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

বক্তারা আরো বলেন, ২০০৫ সাল থেকে সকল সরকার বাংলাদেশের ট্রাইবাল জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী বলে আখ্যা না দেয়ার জন্য একের পর এক প্রজ্ঞাপন ও নির্দেশনা জারি করছে ও আদিবাসী বিষয়ক জাতিসংঘের ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশ স্বাক্ষর না করলেও বর্তমান সরকারের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ১৯৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ১১৩, ১৪৬,১৪৭,১৪৮ পৃষ্ঠায় আদিবাসী শব্দের ব্যবহার করেছে। কমিশনের প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ গত শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে আপনার নিকট (প্রধান উপদেষ্টার) কাছে জমা দেয়া এ প্রতিবেদনে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার দেখা গিয়েছে।‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার না করার বিষয়ে আরো অনেক সরকারি প্রজ্ঞাপন থাকার পরও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে বিভিন্নস্থানে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার করা হয়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগ জনক।

বক্তারা বলেন, নানা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আদিবাসী স্বীকৃতি নিতে উপজাতি/ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কিছু ব্যক্তি ও সমতলের বাম ঘরনার সুশীল নামধারী কতিপয় ষড়যন্ত্রকারীরা এত মরিয়া হয়ে ওঠার কারণ কি? এর কারণ হলো, পূর্ব তিমুর, দক্ষিন সুদান ও জিবুতির ন্যায় আদিবাসী স্বীকৃতির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা রাষ্ট্র করার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। বাস্তবতা হলো পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী/উপজাতিরা আদিবাসী নয়, তারা বহিরাগত দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়া আশ্রিত জাতি। ঐতিহাসিক তথ্য মতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী/উপজাতিরা বার্মা, ভারতের তিব্বত, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মঙ্গোলীয় এবং চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ১৭৩০ সাল নাগাদ যুদ্ধে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অস্থায়ীভাবে আগমণ করে৷

অনেক চাকমা ও মারমা পন্ডিত, লেখকগণ তাদের লেখা বিভিন্ন বইতে উল্লেখ করেছে, তারা আদিবাসী নয়, তারা পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে বিতাড়িত হয়ে এদেশে বসতি স্থাপন করেছে। তাদের অধিকাংশের আদি নিবাস বার্মা ও বার্মার চম্পকনগরে।” তারা যে এদেশের আদি বাসিন্দা নয়, এটা তারা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও অকপটে স্বীকার করেছে। বান্দরবানে (বোমাং রাজার সংলাপ)। তাছাড়াও বাংলাদেশ সংবিধানের ২৩(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই, তারা ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী/উপজাতি হিসেবে স্বীকৃত।

বক্তারা আরো বলেন, কাক যেমন ময়ূরের পেখম লাগালে ময়ূর হয়না, তেমনি এদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তথা উপজাতিরা কখনো আদিবাসী হয়না। আদিবাসী হতে হলে ভূমি সন্তান হতে হয়, এবং হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করতে হয়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, মায়ানমার ও চীন হতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অভিবাসী হিসেবে এসে বসতিস্থাপন করলে ভূমি সন্তান হওয়া যায় না। আর উপজাতি কোটায় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে প্যান্ট ট্রাই পড়ে নিজেদের আদিবাসী দাবি করা হাস্যকরও বটে। 

মূলত আদিবাসী স্বীকৃতির নামে আলাদা রাষ্ট্র “জুম্মলেন্ড” প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কতিপয় কিছু বাম সংগঠনের ব্যক্তি এবং উপজাতীয় কুচক্রী মহল গুলো। এই কুচক্রী মহলের মধ্যে অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী ব্যক্তিরা হলো সুলতানা কামাল, মেজবাহ কামাল, ইমতিয়াজ মাহমুদ, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সাংবাদিক কামাল আহমেদ, জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা, প্রসীত বিকাশ খীসা, মাইকেল চাকমা, প্রকৃত রঞ্জন ত্রিপুরা, চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায় ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়েন ইয়েন।  বক্তারা বলেন, উপজাতি/পাহাড়ি/ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীদের আদিবাসী হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিলে দেশের সার্বভৌমত্বের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়বে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি বা উপজাতিরা নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালিরাই পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের  আদিবাসিন্দা। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ কৃত প্রতিবেদনে আদিবাসী শব্দের ব্যবহার ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি এবং বাম সংগঠনের কিছু ব্যক্তি কর্তৃক আদিবাসী হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে পৃথক রাষ্ট্রে পরিণত করার সূদর প্রসারী ষড়যন্ত্র। তাই গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রতিবেদনে ‘আদিবাসী’ শব্দ বাদ দিয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী/উপজাতি শব্দ লিখার দাবি জানান বক্তারা। অন্যথায় দেশ প্রেমিক ছাত্র জনতা তিন পার্বত্য জেলাকে অচল করে দিবে।

কিউএনবি/আয়শা/১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, /রাত ১১:৩০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit