আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) নেতাদের সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরদিন (৩১ আগস্ট) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো ভারত নিয়ে তীব্র মন্তব্য করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের প্রসঙ্গে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নাভারো বলেন,‘ব্রাহ্মণরা ভারতীয় জনগণের খরচে মুনাফা করছে—এটা বন্ধ হওয়া দরকার।’
নাভারোর এমন মন্তব্য ভারতীয়রা মোটেই ভালভাবে গ্রহণ করেনি। অনেকেই ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টাকে ‘বর্ণবাদী’, ‘অশুভ’ আখ্যা দিয়ে ‘অ্যান্টি-হিন্দু ও অ্যান্টি-ইন্ডিয়া’ বলে নিন্দা করেছেন।
এই মন্তব্যকে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লির ক্রমশ অবনতিশীল বাণিজ্য সম্পর্ক ও আলোচনায় অচলাবস্থার প্রতিফলন হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ভারতের রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার সমালোচনা করে আসছেন। দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনকে অর্থায়ন করছে ভারত; আর বাহানা হিসেবে ব্যবহার করছে ‘তেল ক্রয়’।
গত বছর ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন, কিন্তু তা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।
নাভারোর মন্তব্যকে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ‘সবচেয়ে আক্রমণাত্মক’ বলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সঞ্জীব সান্যাল, কংগ্রেস নেতা পবন খেরা এবং শিবসেনা নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীসহ বিভিন্ন মহল থেকে কড়া প্রতিবাদ এসেছে।
সান্যাল বলেন, নাভারোর বক্তব্যে স্পষ্ট বোঝা যায়—যুক্তরাষ্ট্রে কারা ভারতের বিষয়ে বর্ণনা নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি এটিকে ১৯শ’ শতকের ঔপনিবেশিক কটাক্ষের পুনরাবৃত্তি আখ্যা দেন।
প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী বলেন,‘ভারতের নির্দিষ্ট একটি জাতিগত পরিচয় ব্যবহার করে এ ধরনের মন্তব্য করা লজ্জাজনক ও অশুভ। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ব্রাহ্মণ’ শব্দটি ধনী অভিজাতদের বোঝালেও ভারতের প্রেক্ষাপটে এর ব্যবহার অত্যন্ত সংবেদনশীল।’
কংগ্রেসের পবন খেরা মন্তব্য করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের ভিত্তিহীন মন্তব্য করতে পারে না।’
সূত্র: এনডিটিভি।
কিউএনবি/আয়শা/০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, /সন্ধ্যা ৬:৪৪