বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৩৪ অপরাহ্ন

সেমিকন্ডাক্টরে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫
  • ২০ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করছে না কিংবা তেমন কোনও প্রতিশ্রুতি দেয়নি, তাদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। 

তবে দেশজ উৎপাদনে আগ্রহী বা ইতোমধ্যেই বিনিয়োগ শুরু করা কোম্পানিগুলো এই শুল্ক থেকে ছাড় পাবে।

যুক্তরাষ্ট্রে চিপ উৎপাদন ফেরাতে ইতিহাসের কঠোরতম এই বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প।

বুধবার হোয়াইট হাউসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেন, “অ্যাপলের মতো কোম্পানিগুলো যারা যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাদের কোনও চার্জ দিতে হবে না।”

একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি কেউ প্রতিশ্রুতি দিয়ে কারখানা না গড়ে, তবে তা জমা হিসেব করে পরে শুল্ক আরোপ করা হবে।”

এদিকে, একইদিন অ্যাপল জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে।

ট্রাম্পের এই ঘোষণাটি আনুষ্ঠানিক শুল্ক আদেশ না হলেও বিশ্বব্যাপী চিপ বাজারে এর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কারণ, বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে বিভিন্ন পণ্যের ওপর। এর মধ্যেই সেমিকন্ডাক্টরের মতো উচ্চপ্রযুক্তি পণ্যগুলোর ওপর শুল্ক ‘জাতীয় নিরাপত্তা তদন্ত’-এর আওতায় রয়েছে। তদন্তের ফল প্রকাশ হবে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে একাধিক দেশ ও ব্যবসায়ী মহল।

দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য দূত জানিয়েছেন, স্যামসাং ও এসকে হাইনিক্স-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এই শুল্কের আওতায় পড়বে না। সিউলের সঙ্গে ওয়াশিংটনের চুক্তি অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ার চিপ পণ্যে সর্বোচ্চ সুবিধা বজায় থাকবে।

অন্যদিকে, ফিলিপাইন সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ড্যান লাচিকা এই সিদ্ধান্তকে ‘বিধ্বংসী’ বলেছেন।

মালয়েশিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী তেংকু জাফরুল আজিজ দেশটির সংসদে বলেন, “এই শুল্কে মালয়েশিয়ার রফতানি প্রতিযোগিতা কমে যাবে, ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বাজার হারানোর ঝুঁকি তৈরি হবে।”

তাইওয়ান সরকার জানিয়েছে, তাদের কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা গড়া, মার্কিন কোম্পানি অধিগ্রহণ এবং যৌথ উদ্যোগে কাজ করার মাধ্যমে শুল্ক পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে।

বিশ্ববিখ্যাত চিপ নির্মাতা টিএসএমসি যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কারখানার কারণে বড় ধরনের শুল্কের হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এনভিডিয়া, যারা টিএসএমসি’র চিপ ব্যবহার করে, তারাও এই সুবিধা পাবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, যেসব প্রতিষ্ঠান বড় এবং আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ, তারা যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা গড়ে এই শুল্কের প্রভাব থেকে বাঁচতে পারবে।

অ্যানেক্স ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের (Annex Wealth Management) প্রধান অর্থনীতিবিদ ব্রায়ান জ্যাকবসেন বলেন, “এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বড় ও ধনী কোম্পানিগুলো, যারা যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন করতে পারবে। এটি মূলত ‘বড়রাই টিকে থাকবে’ ধরনের পরিস্থিতি।”

যুক্তরাষ্ট্রের কমার্স ডিপার্টমেন্টের তথ্যানুযায়ী, ১৯৯০ সালে বিশ্বের ৪০ শতাংশ চিপ তৈরি হতো যুক্তরাষ্ট্রে। বর্তমানে তা নেমে এসেছে মাত্র ১২ শতাংশে। এই প্রেক্ষাপটে ২০২২ সালে কংগ্রেস ৫২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের চিপ উৎপাদন ও গবেষণা সহায়তা কর্মসূচি চালু করে।

পিটারসন ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক মার্টিন চোরজেম্পা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ বিনিয়োগ হচ্ছে, তাতে অনেক প্রতিষ্ঠান শুল্কমুক্ত থাকবে।”

তিনি বলেন, চীনের চিপ নির্মাতা এসএমআইসি ও হুয়াওয়ের তৈরি চিপগুলো অবশ্যই এই সুবিধা পাবে না।

ট্রাম্পের ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে অগ্রগামী কোম্পানিগুলোর শেয়ার বেড়ে গেছে। তাইওয়ানের টিএসএমসি’র শেয়ার বেড়েছে ৪.৪ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংয়ের শেয়ার ২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে প্ল্যান্ট থাকা সিলিকন ওয়েফার কোম্পানি গ্লোবালওয়েফারসের শেয়ার ১০ শতাংশ বেড়ে গেছে। সূত্র: রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান

কিউএনবি/অনিমা/৭ আগস্ট ২০২৫/রাত ৯:১৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit