নিউজ ডেক্সঃ বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞার শিকার হচ্ছে রাশিয়া, তা সত্ত্বেও এখনো তারা ব্যাপক পরিমাণের জ্বালানি সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এই অবস্থার পরিবর্তনের আশা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, যদি আগামী শুক্রবারের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতিতে রাশিয়া রাজি না হয় তবে এই দেশের সাথে এখনো বাণিজ্য করছে এমন যে কোনো দেশের ওপর নতুন সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করা হবে।
এই সেকেন্ডারি শুল্ক অনুযায়ী, রাশিয়ার ব্যবসা করছে এমন যে কোনো দেশের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে আমদানির সময় শতভাগ কর আরোপ করা হবে। তেল ও গ্যাস রাশিয়ার সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত। চীন, ভারত ও তুরস্ক মস্কোর সবচেয়ে বড় ক্রেতা। গত মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন, আমি অনেক কিছুর জন্য বাণিজ্যকে ব্যবহার করেছি, কিন্তু যুদ্ধ থামানোর জন্য এটা দুর্দান্ত।
ট্রাম্প প্রশাসনের এটা প্রথমবারের মতো সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ নয়। এর আগে ভেনেজুয়েলার তেল ক্রেতাদের শাস্তি দিতে একই ধরনের সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু এই পদ্ধতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
রাশিয়া এখনো বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। এর আগে শুধু সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে। কিন্তু জাহাজ ট্র্যাকিং তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ব্লুমবার্গের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এ বছর রাশিয়ার তেল রপ্তানি হ্রাস পাচ্ছে।পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনেমিকসের কিয়েরান টম্পকিনস বলেছেন, রুশ জ্বালানির ক্রেতাদের ওপর সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বৈশ্বিক অর্থনীতিকে প্রভাবিত করার মূল পথ হবে জ্বালানি দামের স্তর।
যদি এই শুল্ক কার্যকর হয় তবে তা বিশ্ববাজারে রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের সরবরাহ হ্রাস করবে। সেক্ষেত্রে সরবরাহ কমে গেলে দাম বেড়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, ভারতে তৈরি আইফোনের দাম আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার জানিয়েছে, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকে ভারত রাশিয়ান তেলের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা হয়ে উঠেছে।
যদি সেকেন্ডারি শুল্ক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাগুলোকে ভারতের পণ্য আমদানির সময় শতভাগ শুল্ক দিতে হবে। এসব পণ্য যাতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা না কেনে এবং অন্য কোথাও থেকে সস্তায় পণ্য কিনে নেয় এটাই এই নীতির উদ্দেশ্য। ফলে ভারত রাজস্ব হারাতে পারে।
এই সেকেন্ডারি শুল্কের কারণে আমেরিকানরা মোবাইল ফোন কেনার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ভারতে তৈরি ফোনের ক্ষেত্রে বড় ধাক্কার সম্মুখীন হতে পারে। মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল ভারতে তাদের আইফোন উৎপাদনের বড় অংশ স্থানান্তর করছে। বিশেষ করে যেগুলো তারা যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করতে চায়। যদি এসব পণ্য নতুন ট্যারিফের আওতায় পড়ে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের জন্য দাম দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে।
কারণ আমদানি শুল্ক কোম্পানির ওপর আরোপ করা হয় আর এই কোম্পানিগুলো সাধারণত সব খরচই গ্রাহকের ওপর চাপিয়ে দেয়।
অনলাইন নিউজ ডেক্সঃ
কুইক এন ভি/রাজ/০৬ আগস্ট ২০২৫/ বিকালঃ ০৪.২৫