নিউজ ডেক্সঃ শরীরে এখনো দুটি গুলি বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের ছাত্র সাদিক সাদমান সিদ্দিক (২২)। এই গুলি বের করতে হলে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে সাদিকের গুলি দুটি অপসারণ করতে হবে। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নেওয়ার বিষয়ে কোনো সরকারি সহায়তা পাচ্ছেন না তারা।
শুধু সরকারি গেজেটে নাম না থাকায় উন্নত কোনো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। সেই সঙ্গে পাচ্ছেন না সরকারি সুযোগ-সুবিধা। ফলে সব কিছু থেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন সাদমান সিদ্দিক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের ছাত্র সাদিক সাদমান সিদ্দিক। সাদমান বগুড়া শহরের রহমান নগরের জিল্লুর রহমান শামীমের ছেলে ও সরকারি আজিজুল হক কলেজের ডিগ্রির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শুরু থেকেই প্রতিদিন সভা-সমাবেশ অংশ নিয়েছেন সাদমান। আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুলাই শহরের ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড় এলাকায় মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। শরীরে ৯টি গুলিবিদ্ধ হয় সাদমানের।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সরকারি শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিলে সেখানে তেমন চিকিৎসাসেবা মেলেনি। বাধ্য হয়ে তাকে শহরের শেরপুর রোডের অন্বেষা ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করায় তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে সাদিকের শরীর থেকে সাতটি গুলি বের করেন। জটিল অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হওয়ায় দুটি গুলি অপসারণ করা সম্ভব হয়নি।
সাদিকের পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে সাদিকের গুলি দুটি অপসারণ করতে হবে। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দেশের বাইরে নেওয়ার বিষয়ে কোনো সরকারি সহায়তা পাচ্ছেন না তারা। এ বিষয়ে গত ২৯ ডিসেম্বর সিভিল সার্জনের কাছে আবেদন করলেও সাড়া পাননি।
সাদমান বলেন, দেশের ছাত্র-জনতা যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেমেছিল তখন নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম আন্দোলনে। আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হলাম অথচ সরকারিভাবে চিকিৎসা পাচ্ছি না। গেজেটে আমার নামও নেই। আমি সরকারের সবকিছু থেকে বঞ্চিত হয়ে আছি। অথচ শরীরে এখনো গুলি বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
সাদমানের বাবা জিল্লুর রহমান শামীম বলেন, তার ছেলে আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হলো, অথচ কেউ খবরও নিল না। তার ছেলেকে গেজেটভুক্ত করার পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর দাবি জানান তিনি।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা কালবেলাকে আফরোজ বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যোদ্ধা যাদের চিকিৎসার প্রয়োজন তাদের হেলথ কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা চিকিৎসা পাচ্ছেন। কিন্তু সাদমান কেন গেজেটভুক্ত হননি বুঝতে পারছি না। তবে আবেদন পেলে তিনি কেন গেজেটভুক্ত হননি, তা খতিয়ে দেখা হবে।
অনলাইন নিউজ ডেক্সঃ
কুইক এন ভি/রাজ/০৫ আগস্ট ২০২৫/ বিকালঃ ০৪.৩৫