আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ৩১ জুলাই সকালের এক গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপে অংশ নিয়েছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের মালয়েশিয়ান পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার মাত্র একদিন আগে অনুষ্ঠিত হলো।
সূত্রগুলো জানায়, মালয়েশিয়া কয়েকটি ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে—বিশেষ করে ‘হালাল সার্টিফিকেশন’ এবং ‘রেয়ার আর্থ’ সরবরাহ সংক্রান্ত বিষয়ে। এই খনিজ উপাদানগুলো উচ্চপ্রযুক্তি শিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার নিজেও পার্লামেন্টে বলেন, ‘সকালে ৬টা ৫০ মিনিটে ফোনালাপ হয়েছে। কিছু ব্যাখ্যার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুল্ক হার ঘোষণা একদিন পিছিয়ে দিয়েছেন।’ তিনি আরও জানান, ট্রাম্প অক্টোবরে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিতব্য আসিয়ান সম্মেলনে অংশ নেবেন।
বাণিজ্য কর্মকর্তাদের মতে, মালয়েশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের হালাল সার্টিফিকেশনকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে, বিশেষ করে ওষুধসহ কিছু পণ্যে। কারণ মালয়েশিয়ার ইসলামিক উন্নয়ন বিভাগ ইতোমধ্যে মার্কিন সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া যাচাই করেছে।
তাছাড়া, মালয়েশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে ‘রেয়ার আর্থ’ সরবরাহ করবে বলেও জানানো হয়েছে। দেশটির রেয়ার আর্থ মজুদের পরিমাণ ১.৬ কোটি টনের বেশি, যার বাজারমূল্য এক ট্রিলিয়ন রিঙ্গিত ছাড়িয়ে যেতে পারে। বর্তমানে এসব খনিজ মূলত চীনে রফতানি করা হয়, কারণ মালয়েশিয়ার নিজস্ব প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি এখনও সীমিত।
থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া বিরোধে মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় অস্ত্রবিরতি
আনোয়ার-ট্রাম্প ফোনালাপের ঠিক একদিন আগে, ৩০ জুলাই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসানের সঙ্গে কথা বলেন থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার মধ্যকার সীমান্ত সংঘাত নিয়ে, যাতে কুয়ালালামপুর শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে।
ট্রাম্প এর আগে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন, যদি তারা শান্তিচুক্তিতে না পৌঁছায়, তবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ করে দেবে। এরই প্রেক্ষিতে আনোয়ার ২৪ জুলাই থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার নেতাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন, এবং শেষ পর্যন্ত ২৯ জুলাই অস্ত্রবিরতির ঘোষণা আসে।
যৌথ বিবৃতিতে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়া জানায়, এই আলোচনা মালয়েশিয়া আয়োজিত এবং যুক্তরাষ্ট্র সহ-আয়োজক, যেখানে চীন ‘সক্রিয় অংশগ্রহণকারী’ হিসেবে যুক্ত ছিল। আলোচনার সময় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূতেরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি ইতোমধ্যে বেইজিং একাধিকবার সফর করেছেন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এপ্রিল মাসে মালয়েশিয়া সফর করেছেন—যা গত এক দশকে তার প্রথম সফর।
কিউএনবি/আয়শা/১ আগস্ট ২০২৫/বিকাল ৫:৫৪