স্টাফ রিপোর্টার : যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল ডুবপাড়া গ্রামের বিএনপি নেতা আব্দুল হাই হত্যার ১১ দিন পার হলেও কোন আসামীকে আটক করতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। গত ৭ জুন পবিত্র ঈদের দিন সন্ধায় দূর্বৃত্তরা বিএনপি নেতা আব্দুল হাই কে আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে বোমা মেরে হত্যা করে। আব্দুল হাই ডুবপাড়া গ্রামের বিএনপি নেতা ও মৃত আমির আলী হরকরা’র ছেলে। এ ঘটনার এক দিন পর নিহত আব্দুল হাই’র ছেলে মোঃ রনি মিয়া বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং ০৬। তারিখ ০৮/০৬/২৫। ধারা ৩০২/৩৪, প্যানেল কোড ১৮৬০।
মামলার এজাহার থেকে জানাযায়, গত ৭ জুন বেনাপোল ডুবপাড়া গ্রামে ঈদের নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে হত্যাকারী ও দূর্বৃত্তদের সাথে ডুবপাড়া ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আসাদুজ্জামান আশা ও স্থানীয় বিএনপি নেতা কর্মিদের সাথে বিতর্ক হয়। এক পর্যায় তা স্থানীয় ভাবে মিমাংশা হয়ে যায়। এরই জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ঈদের দিন সন্ধায় ডুবপাড়া গ্রামের জামতলা মোড়ে মিলনের চায়ের দোকানে বসে ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আসাদুজ্জামান আশা ও বিএনপি নেতা আব্দুল হাই, জিয়াউর রহমান, আল বায়ান, মুক্তার আলী আব্দুল্লাহ সহ কয়েকজন বিএনপি নেতা কর্মিরা চা খাচ্ছিল।
এমন সময় হঠাৎ করে ডুবপাড়া গ্রামের মোঃ জামছুর রহমানের ছেলে সাঈদ (৩৪), মৃত ফকির আহম্মদ’র ছেলে জামছুর রহমান (৫৭) বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত শুকচান মোড়লের ছেলে তবিবর রহমান(৪৩), ডুবপাড়া গ্রামের মৃত ফকির আহম্মদ’র ছেলে জিল্লুর রহমান (৩৮), যশোরের ছোট মেঘলা গ্রামের মোঃ আতিয়ার রহমানের ছেলে আহসান কবির সোহেল রানা (৩১), ডুবপাড়া গ্রামের মমিনুর রহমানের ছেলে রিপন হোসেন বাতু(৩০), মৃত ফকির আহম্মদৎর ছেলে শামছুর রহমান (৬৪), শওকত আলী(৪৮),বাবু (৪৪), শামছুর রহমানের ছেলে লাল্টু (৩৬) ও মৃত আবুল হোসেনের ছেলে কামরুল ইসলাম (৪২) সহ আরও ৬/৭জন দূর্বৃত্ত মোটর সাইকেল যোগে জামতলা মোড়ে এসে বিএনপি সভাপতি আসাদুজ্জামান আশা ও আবুল হাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি বোমা বিষ্ফোরন করে। এ সময় দূর্বৃত্তদের বোমার আঘাতে বিএনপি নেতা আব্দুল হাই গুরুত্বর জখম হয়। এ সময় স্থানীয়রা আব্দুল হাইকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তর্বরত ডাক্তার আব্দুল হাইকে মৃত ঘোষনা করে।
এ ঘটনায় নিহত বিএনপি নেতা আব্দুল হাই’র ছেলে ১১ জনকে আসামী করে পরদিন বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলাটি ১১দিন পার হলেও এখনো বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ আব্দুল হাই হত্যার সাথে জড়িত এজাহারের কোন আসামীকে আটক করতে পারেনি বলে বাদীসহ তার স্বজনদের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডুবপাড়া ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আসাদুজ্জামান আশা বলেন, বিএনপি নেতা আব্দুল হাইয়ের সাথে জড়িত কোন আসামীকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। তিনি বলেন মামলার ১নং আসামী সাঈদ ও ৩ নং আসামী তবিবর রহমান খুবই ভয়ংকর প্রকৃতির লোক। তাদের কাছে অনেক অস্ত্র ও বোমা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন বিএনপি নেতা আব্দুল হাইকে যারা হত্যা করেছে মামলার আসামী তারা সবাই বাহাদুরপুর ইউনিযনের আওয়ামীলীগ পোষা ক্যাডার বাহিনীর সদস্য।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডুবপাড়া ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা আল বাহান বলেন বিএনপি নেতা আব্দুল হাইকে যারা হত্যা করেছে তারা এখনও ধরা ছোয়ার বাহিরে। যে কারনে হত্যাকারীদের ভয়ে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। তিনি বলেন হত্যাকারীরা সবাই বিগত দিনে আওয়ামীলীগের সাথে মিশে এলাকায় অস্ত্রের মহড়া ও বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনা করেছে। এখন তারা এলাকায় চাঁদাবাজি, খুন, সন্ত্রাসী, লুটপাট ও দখল দারিত্ব করছে। আল বাহানের অভিযোগ কে বা কোন নেতা কিসের বিনিময়ে এসব সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী, খনিদের মদদ দিচ্ছে তা কতিয়ে দেখতে বিএনপি কেন্দ্রীও ও যশোর জেলা বিএনপি’র সভাপতি/ সাধারন সম্পাদকের দৃষ্টি কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসাপর ইন চার্জ রাসেল মিয়া বলেন আসামীদের সনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে। তিনি বলেন আসামী যেই হোক তাকে ধরে আইনে সোপর্দ করা হবে।
কিউএনবি/আয়শা/১৭ জুন ২০২৫, /সন্ধ্যা ৭:০০