তারেক রহমান বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, মাটি, মানুষ ও গণতন্ত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। এ যেন আরেক জিয়া। তিনি বাংলাদেশের এক মহানায়ক। নির্বাসিত ১৭টি বছর ধরে দলকে যেমন আগলে রেখেছেন ঠিক সন্তানের মত করে। তেমনি গণতন্ত্রের অতন্দ্র বড় হিসাবে ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে দীর্ঘদিন আন্দোলন পরিচালনা করেছেন। যারই ফলশ্রুতিতে আজকে বাংলাদেশের মানুষ আশার এক নতুন আলো দেখতে পেয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে একটি নতুন বৈপ্লবিক, গণতান্ত্রিক ও জনবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। কিন্তু ষড়যন্ত্র অতীতেও ছিল, এখনও রয়েছে, আবার ভবিষ্যতেও ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যকে রুদ্ধ করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তারুণ্যের নায়ক তারেক রহমান বাংলাদেশের মানুষের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হল- একটি নীল নকশা বাস্তবায়নের জন্য ২০০৭ সালে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের আকাশে নেমে আসে কালো মেঘ। শুরু হয় ষড়যন্ত্র, শুরু হয় ক্ষমতা গ্রহণের আধিপত্য। যেখানেই নীল নকশার বীজের পরিপক্কতা তৈরি করে- জিয়া পরিবার, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নিস্তব্ধ করার এক অদৃশ্য শক্তি। এ যেন স্বয়ং দানবরূপে বাংলাদেশের মানুষের উপরে বসে চেপে।
ষড়যন্ত্রের ফসল হিসেবে সৃষ্টি হয় “মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন” এর মত এক অভিশপ্ত কালো অধ্যায়। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে রচিত হয় এক বীভৎস নাটকীয় ও ষড়যন্ত্রের ধ্বংসযজ্ঞ। যেটাকে আমরা ১/১১ বলে জানি। আমরা ওয়ান ইলেভেনের জন্য দায়ী ফখরুদ্দিন মইনুদ্দিনকে চিনি জানি। পাবলিক হি হি হা হা করে নয় মাস খুব মজা নিয়েছিল, দশ মাস পর থেকে আর বহন করতে পারেনি। আমরা সেটা ভুলে যাইনি।
বর্তমানে দেশে আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতি ও মব জাষ্টিজ এবং বৈদেশিক ষড়যন্ত্র এগুলো সবসময়ই রাজনৈতিকদেরই বুঝতে হয়। লড়াই সংগ্রামে জেলবন্দী ও হত্যার শিকার রাজনৈতিক নেতারাই হয়। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ থেকে শুরু করে সকল লড়াই সংগ্রামে রাজনৈতিক স্ট্রেকহোল্ডারায় সম্মুখ সারীর ভূমিকা নিয়েছে এবং আগামী দিনেও নেওয়ার জন্য তাদের শপথ রয়েছে।
অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে যে সমস্ত দালালগুলো ডিক্টেটর বানিয়েছিল, সেই সমস্ত দালালগুলোই আবার হাসিনার আঁচলের ছত্রছায়ার সুশীতল বাগান থেকে বের হয়ে ডঃ ইউনুসের ডেরায় আশ্রয় করে নিয়েছে। এটা একটা রাষ্ট্রের জন্য বড়ই ক্ষতিকর এবং বড়ই ভয়ঙ্কর।
মানুষের অধিকার রক্ষার একমাত্র পথ হল অবাধ ও ভয়মুক্ত সুষ্ঠু নির্বাচন। গণতন্ত্রকামী মানুষ চায় সুশাসন এবং জবাবদিহিমূলক একটি সরকার গঠন। একটি দেশের সব মানুষ কখনোই দল বা রাজনীতি করে না। কিন্তু দেশের অধিকাংশ মানুষই দেশের ক্রান্তিকালে রাষ্ট্রের বিপক্ষের যে কোন কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাছাড়া জনগণ তার স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য রাজনীতি বা দল না করলেও দেশ এবং দেশপ্রেমের জন্য যেকোনো সময় তাদের আত্মত্যাগ অব্যাহত রাখে।
যেহেতু একটি ভূখণ্ড এবং রাষ্ট্রের মালিক বা মূল উপাদান হলো জনগণ আর রাজনৈতিক স্টেকহোল্ডার গুলো জনগণের কাছে দ্বারস্থ হয়। আর এজন্যই প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলই এই জনগণের উপর ভরসা করে জনগণের উদ্ধৃতি দিয়ে থাকেন অর্থাৎ জনগণের সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা চাই আমাদের দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হোক, মানুষ স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করার অধিকার ও স্বাধীনতা ফিরে পাক, জনগণ তাদের নিজস্ব ভোটের মাধ্যমে তারা তাদের পছন্দমত একটি সরকার গঠন করুক।
জনগণ কোন দলকে বা কাকে কতটুকু পছন্দ করে সেটা জরিপ করার মত বাংলাদেশে ভিন্ন কোন পদ্ধতি নেই, যে পদ্ধতিটা আছে সেটা হলো একমাত্র জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আমাদের মনে রাখতে হবে ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, এই জাহানের মালিক মহান আল্লাহতালা আর রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ক্ষমতার মালিক জনগণ। জনগণের কাছে বারবার দ্বারস্থ হতে হবে এই রাজনৈতিক দলগুলোকে।
তাই একটি স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের অভিপ্রায়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার দিকে অত্যন্ত সুদৃষ্টি বা সম্মানের সাথে এবং জবাবদিহিতার সঙ্গে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নিয়েই আগামী দিনগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো যেন প্রস্তুত থাকে সেটাই আমাদের কাম্য হওয়া উচিত। বাংলাদেশে সুশাসন এবং জবাবদিহিমূলক একটি সরকার গঠন করে রাষ্ট্রপরিচালনার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে ৩১ দফার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্বনির্ভর এবং জনগণের স্বপ্নের রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
লেখকঃ প্রকৌশলী এস এ এম আবু হানিফ, রাজনীতিক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং ডেমোগ্রাফার।
কিউএনবি/বিপুল/১০.০৬.২০২৫/দুপুর ১.২৫