খোরশেদ আলম বাবুল,শরীয়তপুর প্রতিনিধি : জানতে পারি ছোট ভাই শুকুর আলী ছৈয়াল বাবার রেখে যাওয়া একমাত্র বাড়ির অর্ধেক জমি রাস্তার পাশ দিয়ে নিজের নামে দলিল করে নিয়েছে। আমাদের দুই ভাই মারা গেছেন। তাদের এতিম সন্তানরা আছে তাছাড়া আমিও অসুস্থ। ছোট ভাই শুকুর প্রবাসে থাকে, তার একটি মাত্র মেয়ে। সে এতিমদের ঠকিয়ে জমি নিয়ে কি করবে। এই ভেবে প্রথমে বিষয়টি বিশ^াস করতে কষ্ট হয়েছিল। পরে ছোট ভাইকে ডেকে জিজ্ঞেস করি বিষয়টি সত্যি কিনা। তখন নিজের ভুল স্বীকার করে ছোট ভাই বলে, এতিমদের সম্পত্তি সে ফেরত দিবে। আমিও সেই বিশ^াসে অপেক্ষা করি। বাবার মৃত্যুর একযুগ পরে যখন ওয়ারিশদের মাঝে জমি বন্টন করার সিদ্ধান্ত করি।
তখনও শুকুর অমত করেনি। যে দিন সার্ভেয়ার আমিন এসে জমি বন্টন শুরু করে। সেই সময় ছোটভাই শুকুর আলী ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান লিপি একটি দলিল দেখায়। ওই দিনই আমরা প্রথম দলিল দেখি। দলিল অনুযায়ী তাদের জমি আলাদা করে রেখে অবশিষ্ট জমি শুকুরসহ অন্যান্য ওয়ারিশদের মাঝে ৬ ভাগ করতে বলে। তখন আমি হট্টগোল বাধিয়ে বলি এই দলিল আমি মানি না। তখন আমাকে শান্ত করার জন্য তার স্ত্রীকে নিয়ে শলাপরামর্শ করে। দলিলের বাহিরে পৈত্রিক সম্পত্তির যে ২ শতাংশ শুকুর পায় তা আমাকে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় তারা। আমি হিসেব মিলিয়ে বুঝতে পারি আমার অংশ এখন পরিপূর্ণ হয়েছে। সবার চিন্তা করে আমার কি হবে। তবে আমার ভাই শুকুরের চাইতে তার স্ত্রী বেশী জাতিয়াত। তার বুদ্ধি পরামর্শেই শুকুর জালিয়াতি করেছে। প্রবাসী ছোট ভাই শুকুর সম্পর্কে এসব কথা বললেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পাচক গ্রামের মৃত টোকানি ছৈয়ালের মেজ পুত্র জব্বার ছৈয়াল।
এক প্রশ্নের জবাবে জব্বার ছৈয়াল জানায়, ১৫ বছরের পুরনো দলিল সে চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে প্রথম দেখেছেন। দলিলের সনাক্তকারী বা সাক্ষীদের কলামে যাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে তাদের তিনি চেনেন না। তারা কোন আত্মীয়-স্বজন বা পাড়া মহল্লার কেউ না। তিনি আরো জানান, অন্যান্য ওয়ারিশরা সনাক্তকারীর ঠিকানায় অনেক খোঁজাখুজি করেও তার অস্তিত্ব পায়নি। তবে সাক্ষীদের ঠিকানায় এমন ব্যক্তির অস্তিত্ব থাকলেও তারা সাক্ষ্যর অস্বীকার করেছে।
পরিবারের অপর এক সদস্য জানায়, শুকুরের দীর্ঘ ২৬ বছর প্রবাস জীবনে রোজগারের সিংগভাগ ব্যয় হয়েছে আবাসিক হোটেলে। প্রবাসে সবুজ নামে শুকুরের এক বন্ধু থাকেন। তার সাথে জোট করেই প্রবাসে নারীদের ভালোবাসায় মগ্ন থাকেন শুকুর। শেষ সময় এতিমদের ঠকিয়ে সেই জমিতে একটি পাকা ঘর তুলেছে। সেই সময়ও আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে আত্মসাতের তালবাহানা করেছেন। শুকুর নিজেই একটা ঠকবাজ। সে নিজেকে কখনো কখনো নিরক্ষর সাংবাদিক বলে দাবী করে। ফেসবুকে এসে ভুলভাল বকে। শুকুর এতিমদের সম্পত্তি আত্মাসাৎ করে। সে আবার আত্মীয় স্বজনদের হক আদায় করে কেমনে। শুকুরের স্ত্রী ফেসবুকে এসে যে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করে তাও পাগলের প্রলাপ। নিজের ফেসবুকে লিখে রেখেছেন, ‘নীতিবান হওয় ওমরের মতো আর জীবন গড় রাসুল (স.) মত’। বাস্তব জীবনে তিনি একটা রূপকথার সাতচুন্নির মতো।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে শুকুর আলী ছৈয়াল বলেন, দলিল, দলিলের সনাক্তকারী বা সাক্ষীদের সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। তবে শুনেছি তারা মামা ও বাবার বন্ধু হতেন। কে বা কারা যেন প্রবাস থেকে আমার স্ত্রীকে জানিয়েছে আমি আবাসিক হোটেলে নারীদের সাথে সময় কাটাই। এনিয়ে স্ত্রীর সাথে আমার দীর্ঘ মনমালিন্য হয়। প্রবাসে আমার পরিচিত জনদের সাবধান করে দিয়েছি তারা যেন আমার স্ত্রীকে এমন কিছু আর না জানায়।
কিউএনবি/অনিমা/২৫ মে ২০২৫, /সকাল ৬:৫০