মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ১১:২৩ পূর্বাহ্ন

বয়স্কদের মোবাইল আসক্তি ডেকে আনছে বিপদ?

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১১৭ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : আধুনিক সময়ে বাড়ছে নিঃসঙ্গতা। একাকীত্ব গ্রাস করছে অনেককেই। এই নিঃসঙ্গতার বড় শিকার বয়স্ক মানুষেরা। জীবনের বহু সময় পেছনে ফেলে এসে একটা সময় তারা বড় একা হয়ে পড়েন। যেমন কারো ছেলেমেয়েরা থাকেন বিদেশে, কেউ চাকরির কারণে দেশেও থেকেও অবস্থান করে দূরের কোনো শহরে। তাই বয়স্কদের বাড়িতে কাটে একলা সময়। আগে সময় কাটাতে তারা অনেকেই বইকে আশ্রয় করতেন। তবে বর্তমানে বইয়ের জায়গা দখল করেছে মোবাইল ফোন। সেখানেই তারা দেখেন নানা কন্টেন্ট। 

এই ধরনের সিংহভাগ পরিবারে বয়স্কদের মোবাইল ‘আসক্তি’ পরিবারের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দাবি করা হচ্ছে, সময়ের সঙ্গে বয়স্ক নাগরিকদের ‘স্ক্রিন টাইম’ বেড়েছে। চলতি বছরে একটি সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, গোটা বিশ্বে মানুষ প্রতি দিন গড়ে ৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট মোবাইলে সময় কাটায়, ২০১৩ সালের তুলনায় যা ৩০ মিনিট বৃদ্ধি পেয়েছে। 

কেন মোবাইল নির্ভরতা

বয়স্কদের ক্ষেত্রে মোবাইল আসক্তির নেপথ্যে একাধিক কারণের মধ্যে অনেকেই ‘একাকিত্ব’ কে দায়ী করছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, স্ক্রিন টাইম বাড়ার ফলে বয়স্কদের ক্ষেত্রে অনিদ্রা এখন একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রচুর রোগী এই সমস্যা নিয়ে আসছেন। অনেক সময়ে মোবাইল বয়স্ক দম্পতির সাংসারিক ঝগড়ার কারণও হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। আগে বয়স্করা হাঁটতেন বা সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে দাবা তা তাস খেলতেন। পারস্পরিক আদানপ্রদানের ফলে মনও সুস্থ থাকত। কিন্তু এখন সেখানে কোপ বসিয়েছে টিভি এবং মোবাইল।

কী কী সমস্যা হতে পারে?

চিকিৎসকরা বলছেন, মোবাইল আসক্তির কারণে বয়স্কদের চোখে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বয়সের সঙ্গে চোখের রেটিনার কোষের শক্তি কমে আসে। ফলে চোখের জল শুকিয়ে আসে। চোখে জ্বালাভাব দেখা দেয়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে ডিজিটাল পর্দায় তাকিয়ে থাকলে চোখ থেকে অনবরত জল কাটতে শুরু করে। রাতে মোবাইলের পর্দায় তাকিয়ে থাকার ফলে অনেক সময়েই ভাল ঘুম আসে না। ফলে দীর্ঘ সময়ের পর অনিদ্রা রোগ দেখা দিতে পারে।

বয়সের সঙ্গে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও ধীর গতিতে হয়। বেশি ক্ষণ মোবাইল ব্যবহার করার ফলে বয়স্কদের চিন্তাশক্তি বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রভাবিত হতে পারে। মোবাইলে অনেকেই ‘মাল্টি টাক্সিং’ (একসঙ্গে একাধিক কাজ) করে থাকেন। ক্রমাগত একাধিক ট্যাব, পপ আপ এবং নোটিফিকেশন কোনও নির্দিষ্ট কাজের একাগ্রতা নষ্ট করতে পারে। মোবাইলের ছোট্ট পর্দায় উজ্জ্বল আলো এবং ছোট হরফ চোখের উপর চাপ সৃষ্টি করে। তুলনায় টিভি বা ল্যাপটপে ক্ষতির আশঙ্কা কিছুটা কম। কিন্তু তার মানে কেউ ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি বা ল্যাপটপে সময় কাটাচ্ছেন।

স্ক্রিন টাইম কমানোর উপায়

চিকিৎসকরা বলছেন, মোবাইল-পূর্ব যুগে বাড়িতে বয়স্করা অবসর যাপনের জন্য নানা উপায় অবলম্বন করতেন। মোবাইল ছাড়া বই পড়া বা বাগান করার মতো অন্য কোনও উপায়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখা যেতে পারে। রাত্রে ঘুমোনোর আগে মোবাইল থেকে নিজে দূরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। দিনের মধ্যে কতক্ষণ মোবাইল বা টিভি দেখবেন, সেটা ঠিক করে নেওয়া উচিত। তা হলে খেয়াল থাকবে। স্ক্রিন টাইম কমানোর জন্য এখন স্মার্ট ফোনে বিশেষ ফিচার দেওয়া হয়েছে।

বয়স্কদের ক্ষেত্রে সারা দিনে আদর্শ স্ক্রিন টাইম কত ক্ষণ হওয়া উচিত, তা নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশিকা নেই। তবে চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, সারা দিনে ২-৩ ঘণ্টার বেশি পর্দায় চোখ রাখা উচিত নয়। সে ক্ষেত্রেও ৩০ মিনিট থেকে প্রতি ১ ঘণ্টা অন্তর বিরতি নিতে পারলে ভাল হয়।

কিউএনবি/অনিমা/২৪ এপ্রিল ২০২৫,/সকাল ৮:২২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit