শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম

গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে দেশে দেশে বিক্ষোভ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৬৩ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে গাজায় এ বর্বরতা বন্ধ এবং সেখানে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করার দাবি জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে ইসরাইলকে অব্যাহতভাবে সাহায্য করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তুলোধুনো করেছেন বিভিন্ন দেশের আন্দোলনকারীরা। 

যুক্তরাষ্ট্র

শনিবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। এই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মুসলিম, খ্রিস্টানদের পাশাপাশি অনেক ইহুদি শান্তিকামী সংস্থার প্রতিনিধিরাও ছিলেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ব বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, প্যালেস্টাইনিয়ান ইউথ মুভমেন্ট, দ্য পিপল’স ফোরাম, জিউয়িশ ভয়েস ফর পিস, আনসার কোয়ালিশনসহ ৩ শতাধিক সংস্থার উদ্যোগে হয়েছে এই মিছিল। মিছিলটি ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ সবগুলোর সড়ক প্রদক্ষিণ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে জড়ো হয়েছেন লাখো মানুষ। ছবি: মিডল ইস্ট মনিটর

তুরস্ক

রোববার রাজধানী আঙ্কারাসহ তুরস্কের বিভিন্ন শহরে একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখায় আঙ্কারায় মার্কিন দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এ সময় তারা ‘জর্ডান নদীর তীর থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন চাই’ ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক, ইসরাইলের দখলদারী নিপাত যাক’ ইত্যাদি স্লোগানও দিয়েছেন।

তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায়ও ট্রাম্প এবং ইসরাইলের নৃশংসতার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন জনতা। ছবি: ইরনা নিউজ

মরক্কো

সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে মরক্কোতে। উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির রাজধানী রাবাতে গতকাল রোববার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন লক্ষাধিক মানুষ। এ সময় তারা ইসরাইলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিয়েছেন।

বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার জন্য কাসাব্লাঙ্কা শহর থেকে রাবাতে এসেছিলেন মোহাম্মদ তৌসি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে তিনি বলেন, এখন আর এটা যুদ্ধের পর্যায়ে নেই। ইসরাইল গাজাকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে; আর তাদেরকে প্রশ্রয় দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। জো বাইডেনের সময়ে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে রাখঢাক করা হচ্ছে কিন্তু এখন ট্রাম্পের সময়ে সবকিছুই খোলামেলা।

মরক্কোর রাজধানী রাবাতে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে মাঠে নেমেছেন হাজারও নারী-পুরুষ। ছবি: আল-জাজিরা

জার্মানি

বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে জার্মানির বার্লিনেও বিক্ষোভ হয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার শিশুর প্রাণ নিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এ ছাড়াও দুই শতাধিক সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এসব তথ্য দিয়ে প্ল্যাকার্ড বানিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন বার্লিনের শত নারী পুরুষ। 

বিক্ষোভে ইসরাইলের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নেতানিয়াহু সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করা হয়েছে। 

জার্মানির বার্লিনে প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হয়েছেন বিক্ষোভকারীরা । ছবি: আল-জাজিরা 

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ। ওই বছর ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরাইল। কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। দ্বিতীয় দফার এ অভিযানে গত ১৫ দিনে গাজায় নিহত হয়েছেন ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইডিএফ ঘোষণা দিয়েছে যে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করা হবে।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

 

কিউএনবি/আয়শা/০৭ এপ্রিল ২০২৫,/রাত ১০:৫৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit