ডেস্ক নিউজ : চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর্দা নেমেছে। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে এক যুগ পর এই শিরোপা ছুঁয়ে দেখেছে ভারত। টুর্নামেন্টে ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়েছেন অনেক তারকা ক্রিকেটার। তাদের মধ্য থেকে সেরা একাদশ বেছে নিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।
একনজরে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টুর্নামেন্টসেরা একাদশ-
রাচিন রবীন্দ্র (নিউজিল্যান্ড)
একজন সত্যিকারের অলরাউন্ড পারফরমার। নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে এবারের টুর্নামেন্টে দুটি সেঞ্চুরি করেছেন রবীন্দ্র। পাশাপাশি দলের প্রয়োজনে বোলিংয়েও হাত ঘুরিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্যের জন্য ‘প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট’ পুরস্কার জয় করেন তিনি।
ইব্রাহিম জাদরান (আফগানিস্তান)
২১৬ রান, ৭২ গড়, একটি সেঞ্চুরি
এবারের আসরে আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় পারফরমার এই ওপেনার। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৭ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলেন তিনি, যা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তানকে ঐতিহাসিক জয় এনে দেয়। তার সেই ইনিংস চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।
বিরাট কোহলি (ভারত)
২১৮ রান, ৫৪.৫ গড়, একটি সেঞ্চুরি
তাকে যথার্থ কারণেই ‘কিং কোহলি’ বলা হয়। ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের অন্যতম স্তম্ভ তিনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে ৮৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, যা তার এখনও শীর্ষ ফর্মে থাকার প্রমাণ। এই টুর্নামেন্ট চলাকালীন কোহলি ১৪,০০০ ওয়ানডে রান পূর্ণ করেন, শচীন টেন্ডুলকার ও কুমার সাঙ্গাকারার পর তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে এই কীর্তি গড়েন তিনি।
শ্রেয়াস আইয়ার (ভারত)
২৪৩ রান, ৪৮.৬ গড়, দুটি ফিফটি
ভারতের মিডল অর্ডারের এক শক্তিশালী স্তম্ভ। শেষ চারটি ম্যাচে তার সর্বনিম্ন স্কোর ছিল ৪৫, যা তার ধারাবাহিকতার পরিচয় দেয়, বিশেষ করে দুবাইয়ের কঠিন ব্যাটিং কন্ডিশনে।
কেএল রাহুল (উইকেটকিপার) (ভারত)
১৪০ রান, ১৪০ গড়, সর্বোচ্চ ইনিংস ৪২*
ভারতের এই উইকেটকিপার-ব্যাটার বড় এক নির্ভরতার নাম। তিনি চার ইনিংসে তিনবার অপরাজিত থাকেন। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ নকআউট ম্যাচগুলোতে ভারতের রান তাড়ায় তিনি অপরাজিত ৪২* ও ৩৪* রানের দুটি ইনিংস খেলেন অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
গ্লেন ফিলিপস (নিউজিল্যান্ড)
১৭৭ রান, ৫৯ গড়, ২ উইকেট, ৫ ক্যাচ
গ্লেন ফিলিপসের পক্ষে সম্ভব নয় এমন কিছু আছে কি? ব্যাট হাতে বিপজ্জনক, দুর্দান্ত ফিল্ডিং স্কিল এবং অসাধারণ ক্যাচিং—অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন তিনি। কোহলিকে আউট করতে তার অবিশ্বাস্য ক্যাচ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অন্যতম সেরা মুহূর্ত হয়ে থাকবে।
৭. আজমতউল্লাহ ওমরজাই (আফগানিস্তান)
১২৬ রান, ৪২ গড়, ৭ উইকেট
একজন প্রকৃত অলরাউন্ডার। ব্যাটিংয়ে কার্যকরী অবদান রাখার পাশাপাশি বল হাতেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৮ রানে ৫ উইকেট শিকার করে দলের জয় নিশ্চিত করেন। ২০২৪ সালের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের খেতাবের মর্যাদা ধরে রাখেন তিনি।
মিচেল স্যান্টনার (অধিনায়ক) (নিউজিল্যান্ড)
৯ উইকেট, ২৬.৬ গড়, ৪.৮০ ইকোনমি
অধিনায়কত্ব ও বোলিং উভয় ক্ষেত্রেই অসাধারণ ছিলেন স্যান্টনার। তার নেতৃত্বেই নিউজিল্যান্ড রানার্স-আপ হয়।
মোহাম্মদ শামি (ভারত)
৯ উইকেট, ২৫.৮ গড়, ৫.৬৮ ইকোনমি
ভারতের নির্ভরযোগ্য বোলার শামি আবারও তার দক্ষতা দেখিয়েছেন। বাংলাদেশ বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ৫৩ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন এবং সেমিফাইনাল ও ফাইনালে চারটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন।
ম্যাট হেনরি (নিউজিল্যান্ড)
১০ উইকেট, ১৬.৭ গড়, ৫.৩২ ইকোনমি
এই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক ফাইনালে খেলতে পারেননি চোটের কারণে, যা নিউজিল্যান্ডের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে ৪২ রানে ৫ উইকেট ছিল তার সেরা পারফরম্যান্স।
বরুণ চক্রবর্তী (ভারত)
৯ উইকেট, ১৫.১ গড়, ৪.৫৩ ইকোনমি
অবিশ্বাস্য! চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে মাত্র এক ওয়ানডে ম্যাচ খেলা ৩৩ বছর বয়সী এই স্পিনার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নয়টি উইকেট শিকার করেন, নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দেন দারুণভাবে।
১২তম খেলোয়াড়: অক্ষর প্যাটেল (ভারত)
৫ উইকেট, ৩৯.২ গড়, ৪.৩৫ ইকোনমি
বল ও ব্যাট উভয় ক্ষেত্রেই দলের জন্য অবদান রাখেন। ফাইনালে ২৯ রান করেন, আর পুরো টুর্নামেন্টে তার রান ১০৯। এছাড়া দুটি দুর্দান্ত ক্যাচও নেন তিনি।
কিউএনবি/আয়শা/১০ মার্চ ২০২৫,/রাত ১১:৫৫