রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:১৮ অপরাহ্ন

পুলিশের ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স’ কী করতে পারবে, কী পারবে না

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫
  • ৫৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স’ বা ‘সহায়ক বাহিনী’। বিশ্বের অনেক দেশেই পুলিশের কাজে সহায়তার জন্য এমন ফোর্স রয়েছে। তবে বাংলাদেশে বিষয়টি নতুন। এই ফোর্স নিয়ে জোরেশোরে চলছে আলোচনা। নিয়োগ কীভাবে হবে, কারা নিয়োগ পাবে, তারা কী করতে পারবে, কী পারবে না- এসব বিষয়েও তৈরি হয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। সাবেক ও বর্তমান পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স’ সম্পর্কে বেশকিছু তথ্য। আইনে কী আছে, কীভাবে নিয়োগ হবে, মাঠে কীভাবে কাজ করবে প্রভৃতি বিষয়ে মিলেছে প্রাথমিক ধারণা।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী খান শনিবার (৮ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স’ নিয়োগের কথা জানান। তিনি বলেন, ঈদের আগে বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৬–এর ১০ ধারা অনুযায়ী কমিশনার নিজ ক্ষমতাবলে এই নিয়োগ দেবে। এটা হবে সাময়িক।

পুলিশ যেমন দায়িত্ব পালন করে, সহযোগী ফোর্স ঠিক একইভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, আটক বা নিয়মিত টহলের মতো দায়িত্বগুলো পালন করতে পারবে। তবে তারা কোনো ধরনের ইনভেস্টিগেশন বা তদন্ত পরিচালনা করতে পারবে না।- ডিএমপির মিডিয়া শাখার ডিসি তালেবুর রহমান

অক্সিলিয়ারি ফোর্স কী?

ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার তালেবুর রহমান জানান, মেট্রোপলিটন পুলিশের অর্ডিন্যান্স-১৯৭৬ ধারা মোতাবেক ডিএমপি কমিশনার যদি মনে করেন, যে কোনো ব্যক্তিকে সহযোগী পুলিশ হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন। মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী এই সহযোগী পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

পুলিশের সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা জাগো নিউজকে বলেন, ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স বলতে বোঝায় পুরো ফোর্স না, তবে আধা সরকারি ফোর্স, পুলিশকে সহযোগিতার জন্য এ ধরনের ফোর্স ব্যবহার করার বিষয়টি পুলিশ আইনেই আছে।’

যুক্তরাজ্যে এমন বাহিনী ব্যবহারের নজির আছে উল্লেখ করে সাবেক এই আইজিপি বলেন, ‘অল্প সময়ের জন্য এ ধরনের সহযোগী ফোর্স ব্যবহার করার নজির আছে। এটা খরচও যেমন বাঁচায়, তেমনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কার্যকরীও।’

বড় অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে। আর ছোটখাটো অন্যায় করলে তাকে যে কোনো মুহূর্তে চাকরিচ্যুত করা যাবে, তাতে খুব বেশি আইন-কানুন মানতে হবে না।–সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘পুলিশ অফিসার যেভাবে আইনগতভাবে প্রটেকশন পান, এই অক্সিলিয়ারি ফোর্সের সদস্যরাও সেই প্রটেকশন পাবেন।’

ডিএমপির একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ডিএমপি কমিশনার প্রয়োজন মনে করলে পুলিশকে সহায়তার জন্য যে কোনো ব্যক্তিকে যে কোনো সময় ‘অক্সিলিয়ারি পুলিশ অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। পুলিশের মতোই তাদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা থাকবে। তারা যদি আইনের ব্যত্যয় ঘটায় বা অপরাধ করেন, তবে পুলিশের ক্ষেত্রে যে ধরনের শান্তির কথা বলা আছে, তাদের ক্ষেত্রেও একই শাস্তির বিধান থাকবে। ডিএমপি অধ্যাদেশের ১০ ধারা প্রয়োগ কীভাবে হবে, এ-সংক্রান্ত কোনো বিধিমালাও নেই। ফলে এই মুহূর্তে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হবে, সেটি ঠিক করা হচ্ছে।

যেভাবে চেনা যাবে

পুলিশ সূত্র জানায়, যাদের এই অক্সিলিয়ারি ফোর্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে, তাদের হাতে চিহ্নিতকরণ একটি ব্যান্ড থাকবে, যা দেখে বোঝা যাবে যে তারা অক্সিলিয়ারি ফোর্স।

তারা কী করতে পারবেন, কী পারবেন না

পুলিশের সহযোগী এই বাহিনী কবে থেকে রাস্তায় নামবে সেটি এখনো নির্দিষ্ট করে জানায়নি পুলিশ। তবে এ নিয়ে কাজ শুরু করার কথা জানানো হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে। তবে এই অক্সিলিয়ারি বাহিনী বা সহযোগী ফোর্স কী করতে পারবে, কী পারবে না- সেটা জানা থাকা সবার জন্য জরুরি।

ডিএমপির মিডিয়া শাখার ডিসি তালেবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘পুলিশ যেমন দায়িত্ব পালন করে, সহযোগী ফোর্স ঠিক একইভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, আটক বা নিয়মিত টহলের মতো দায়িত্বগুলো পালন করতে পারবে। তবে তারা কোনো ধরনের ইনভেস্টিগেশন বা তদন্ত পরিচালনা করতে পারবে না।’

মাঠে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ আর এই বাহিনীটির কাজে কী কী পার্থক্য রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই অক্সিলিয়ারি ফোর্সের পুলিশ বাহিনীর মতো প্রশিক্ষণ, দক্ষতা কিংবা দায়বদ্ধতার জায়গাগুলো থাকবে না। এমনকি তাদের কোনো ধরনের অস্ত্র দেওয়া হবে কি না সেটি নিয়েও আইনে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই।’

কত সংখ্যক অক্সিলিয়ারি ফোর্স প্রাথমিকভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে সেটি নিয়েও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে ডিএমপি। পুলিশ বাহিনীর বাইরে হঠাৎ করে নিয়োগপ্রাপ্ত কেউ যখন পুলিশের ক্ষমতা পাবে সেটির ব্যবহারে কতখানি স্বচ্ছতা থাকবে এ প্রশ্নও উঠছে। পুলিশের সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘ঠিকমতো লোক যদি না নেওয়া হয়, ভেরিফায়েড লোক যদি না নেওয়া হয়, তাহলে এর অপব্যবহার হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভেরিফায়েড লোক নেওয়া জরুরি।’

তাহলে এই সহযোগী বাহিনী দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি কোনো অন্যায় করে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে? এমন প্রশ্নে সাবেক আইজিপি বলেন, ‘বড় অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে। আর ছোটখাটো অন্যায় করলে তাকে যে কোনো মুহূর্তে চাকরিচ্যুত করা যাবে, তাতে খুব বেশি আইন-কানুন মানতে হবে না।’বিষয়টি এখনো আলোচনা পর্যায়ে। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু ও নিয়োগের পর নতুন হয়তো আরও স্পষ্ট তথ্য পুলিশের পক্ষ থেকে জানা যাবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১০ মার্চ ২০২৫,/দুপুর ২:০০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit