মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২৮ পূর্বাহ্ন

বছরে ৩ লাখ শিশু মৃত্যুর কারণ জন্মগত ত্রুটি

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৩ মার্চ, ২০২৫
  • ৮৩ Time View

স্বাস্থ্য ডেস্ক : প্রতি বছর সারা বিশ্বের প্রায় ৩ লাখ শিশু মারা যায় জন্মগত ত্রুটির কারণে। শিশু মৃত্যুহারের পেছনে শতকরা ২১ শতাংশ দায়ী জন্মগত ত্রুটি। যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

বিশ্ব জন্মগত ত্রুটি দিবস উপলক্ষে সোমবার (৩ মার্চ) নিউ লাইফ হসপিটালের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. ইফতেখার হোসাইনের সভাপতিত্বে হাসপাতালের চত্বরে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনাসভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন স্মাইল ট্রেন নিউ লাইফ হাসপাতাল ক্লেফট প্রজেক্টের প্রজেক্ট ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. বিজয় কৃষ্ণ দাস। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে প্রতিদিন শতকরা ৩-৪ টি শিশু কোনো না কোনো জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্ম নিচ্ছে, প্রায় ৩ লাখ নবাগত শিশু এ কারণেই মারা যায়।

তিনি বলেন, জন্মগত ত্রুটির কারণে দেখতে অসুন্দর, চলাফেরায় অসুবিধা, খাওয়া-দাওয়ায় অসুবিধা, লেখাপড়ায় অসুবিধা, সামাজিক অবহেলা, অর্থনৈতিক সমস্যাসহ নানা সমস্যা হয়। অপরিকল্পিত গর্ভ ধারণ, গর্ভাবস্থায় অপুষ্টি, রোগ, ফলিক এসিডসহ মা’য়ের বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব, মদ-তামাক ইত্যাদি বদ অভ্যাস, তেজস্ক্রিয়তা, বাবা বা মায়ের বংশজনিত, নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে ইত্যাদি নানা কারণে জন্মগত ত্রুটি হতে পারে, যদিও অধিকাংশ ত্রুটির কোন কারণ জানা নাই।

কুসংস্কার দূর করে সচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর দিয়ে তিনি বলেন, চন্দ্র গ্রহন, সূর্য গ্রহন, গর্ভাবস্থায় মাছ-মাংস কাটা, কারও অভিশাপ ইত্যাদি কোন কিছুই জন্মগত ত্রুটির জন্য দায়ী নয়। আমাদের সচেতনতাই জন্মগত ত্রুটি অনেকাংশে প্রতিরোধ করতে পারে। আর যদি এ ধরণের শিশু জন্মই নেয়, তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা নিলে শিশু স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। জন্মগত ত্রুটিযুক্ত শিশু নিজের বোঝা, পরিবারের বোঝা, অর্থনীতির বোঝা, তথা সমাজ বা রাষ্ট্রের বোঝা।

সভায় বাংলাদেশ শিশু সার্জারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. নজরুল ইসলাম আকাশ জন্মগত ত্রুটি নিরোধে সবাইকে সচেতন হতে বলেন। জন্মগত ত্রুটি দেখলেই নিকটস্থ শিশু সার্জনের পরামর্শ নেওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান। এছাড়াও জন্মগত ত্রুটি রেজিস্ট্রার করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।

সভায় স্মাইল ট্রেন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এবিএম মোবাশ্বের হোসেন বলেন, জন্মগত কাটা ঠোঁট ও ফাটা তালু অন্যতম জন্মগত ত্রুটি। বাংলাদেশে প্রতি ৫০০ শিশুর মধ্যে ১ টি শিশু এই সমস্যা নিয়ে জন্ম নিচ্ছে-সে হিসাবে প্রতি বছর প্রায় ৫০০০-৬০০০ শিশু জন্ম নিচ্ছে। অধ্যাপক ডা. বিজয় কৃষ্ণ দাস এর মত অনেক প্লাস্টিক সার্জনের আংশিক স্বেচ্ছাশ্রম ও নিউ লাইফ হাসপাতালের মত অনেক হাসপাতালের সহযোগীতায় ২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশে স্মাইল ট্রেন কাটা ঠোঁট ও ফাটা তালু রোগীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও অবদান হচ্ছে। কেননা প্রতি ঠোঁট কাটা চিকিৎসায় অর্থনীতিতে ৫৬,৯১৯-১,৪৩,৩৬৩ মার্কিন ডলার অবদান আর তালু কাটা চিকিৎসায় ১,৫২,৩৭২-৩,৭৫, ৪১২ মার্কিন ডলার।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অত্র হাসপাতালে স্মাইল ট্রেন এর সহযোগীতায় গত বছর থেকেই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জন্মগত কাটা ঠোঁট ও ফাটা তালুর চিকিৎসা চলছে। তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

এ সময় বাংলাদেশ পল্লী চিকিৎসক সমিতির সভাপতি মো. সবুজ আলী বিনামূল্যে জন্মগত কাটা ঠোঁট ও ফাটা তালুর চিকিৎসা সারাদেশে পল্লী চিকিৎসকদের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সর্বপ্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নিউ লাইফ হাসপাতালের ডিরেক্টর ডা. মাহাদী হাসান। সভা শেষে বক্তারা জন্মগত ত্রুটি দিবস উপলক্ষ্যে হাসপাতালটির সামনে একটি সচেতনমূলক র‍্যালির আয়োজন করা হয়।

কিউএনবি/অনিমা/০৩ মার্চ ২০২৫,/রাত ৮:৪২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit