সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন

আশুলিয়ায় মুরগি বিক্রির নামে অভিনব প্রতারণা 

আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি ।
  • Update Time : রবিবার, ২ মার্চ, ২০২৫
  • ১১৫ Time View
আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি : দেশী ও বয়লার মুরগির পাশাপাশি টাইগার মুরগি সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলছে। অন্যান্য মুরগির চেয়ে এর দাম তুলনামূলক বেশী হওয়ায় সাধারণ ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বাইরের দেশে টাইগার মুরগির ওজন ১৮ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। দেশে  এক একটি ৫ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত হয়। যা বাজারে প্রায় খাসির মাংসের সমান দামে বিক্রি হয়। চাহিদা বাড়ায় বেশি লাভের আশায় আবার কেউ কেউ মুরগির মুখের মধ্যে পানি ঢুকিয়ে ওজন বাড়াচ্ছে বলে এমনও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে একদিকে কতিপয় অসাধু মুরগি দোকানিরা লাভবান হচ্ছে। অন্যদিকে, ক্রেতা সাধারনেরা প্রতারিত হচ্ছেন। 
আশুলিয়ার নরসিংহপুর সোনামিয়া মার্কেট এলাকার ফয়েজ উদ্দিন সুপার মার্কেটের আব্দুল মান্নান নামের মুরগি দোকানীর কাছে থেকে এক ক্রেতা মুরগি কিনে এরকম প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবিষয়ে দোকানি আব্দুল মান্নান কিছুই জানেন না, তবে যে সাপ্লায়ারের কাছ থেকে কিনেছেন সে এবিষয়ে বলতে পারবে বলে এ মুরগী দোকানী জানায়। 
নাম না প্রকাশের শর্তে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে এমন এক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, আমি ওই দোকান থেকে ৬টি টাইগার মুরগি কিনি। প্রায়ই এই মুরগি ওই দোকান থেকে কিনি এবং ওখান থেকে ড্রেসিং করে নেই। শুক্রবার সকালে আবারও আব্দুল মান্নানের দোকান থেকে ৬টি মুরগি ৫০০ টাকা কেজি দরে মোট ৭ হাজার টাকায় কিনে ড্রেসিং না করে বাসায় নিয়ে যাই। পরে আমার স্ত্রী মুরগীগুলো জবাই করে। তখন প্রতিটি মুরগির খাবারের থলির মধ্যে পানি পাওয়া যায়।
যার আনুমানিক ওজন হবে ২৫০ গ্রাম। তাহলে ৬টি মুরগীতে একদিকে দোকানিরা লাভতো করেছে এবং অন্যদিকে অতিরিক্ত ২ কেজি পানিতে আরও দুই হাজার টাকা দোকানী লাভ করলো। আর আমি পেলাম ওই দুই কেজি মাংসের পরিবর্তে দুই কেজি পানি। এটাতো একধরনের অভিনব প্রতারণা।  পরেরদিন মুরগী দোকানী আব্দুল মানানকে আমি এবিষয়ে জানাই। আমি কি করে বলবো, এ পানির বিষয়ে সাপ্লায়ার বলতে পারবে বলে সে জানায়। ভবিষ্যতে কেউ মাংসের পরিবর্তে পানি না পায় এবং এভাবে আর যেন কেউ আমার মত প্রতারিত না হয়, এজন্যই আমি প্রশাসন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
পরে মুরগী ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি রাতে মুরগী কিনি, সকালে তা বিক্রি করি। আমার কাছ থেকে কেউ যদি মুরগি কিনে তার মধ্যে পানি পায়, তাহলে আমি কি করবো। আমিতো সাপ্লায়ারের কাছ থেকে মুরগি কিনে বিক্রি করি। এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না, সে জানে। তবে পরবর্তীতে আমি ওই সাপ্লায়ার কাছ থেকে আর মুরগি কিনবো না।
এরপরে মুরগী সাপ্লায়ার আয়নালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি পঞ্চগড়ের নারিশ কোম্পানির কাছ থেকে মুরগি কিনে আশুলিয়া সহ বিভিন্ন স্থানে সাপ্লাই দেই। নারিশ কোম্পানি পানি ও স্লাইন এতো পরিমাণ খাওয়ায় যে, গন্তব্য স্থানে আনতে আনতে ওজন কমে যায়। আমি এরমাঝে ওই কোম্পানির কাছ থেকে একগাড়ি প্যারেন্টস জাতীয় যার ওজন ৫-৭ কেজি হবে, সেই জাতের মুরগি কিনেছি।
আশুলিয়ায় আনতে আনতে এক গাড়ি মুরগীতে ৬০ কেজি ওজন কমে গেছে। খুচরা বিক্রেতাদের কাছে  আনতে আনতে মুরগির পেট একেবারে খালি হয়ে যায়। এতে করে আমার অনেক লস হচ্ছে। আপনি যেহেতু ওই কোম্পানি থেকে মুরগি গন্তব্যস্থানে আনতে আনতে ওজন কমে যায় বা মুরগির পেট একেবারে খালি হয়ে যায়, তাহলে পানি আসলো কোথা থেকে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হয়তোবা খুচরা বিক্রেতারা পানি খাওয়াতে পারে। তারা সিন্ডিকেট করে থাকতে পারে বলেও তিনি আরও জানান।  এবিষয়ে নারিশ কোম্পানির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা সম্ভব হয়নি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর  বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রাক্ট সেন্টারের শিতল বলেন, শিগগিরই বাজার মনিটারিং এর মাধ্যমে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০২ মার্চ ২০২৫,/রাত ৯:১৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit