মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন

স্বাস্থ্যসেবায় কী পরির্তন আনতে চায় বিএনপি, জানালেন খন্দকার মোশাররফ

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৬৬ Time View

ডেস্ক নিউজ : জনগণের ভোটে দায়িত্ব পেলে যুক্তরাজ্যের এনএইচএস বা জাতীয় সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার আলোকে সকলের জন্য সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তিতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। 

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গুলশানস্থ বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে সংস্কার কমিশনে দেওয়া বিএনপির প্রস্তাবনা নিয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ এই নীতির ভিত্তিতে উন্নত কল্যাণকামী রাষ্ট্রে বিদ্যমান ব্যবস্থার আলোকে সকলের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার আলোচনায় প্রায়শই বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের অধীনে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের বিবেচনায় রেখে সকল পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নীতিমালা প্রণীত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফলে দেশে বিদ্যমান প্রচলিত ও ঐতিহ্যবাহী ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথি, কবিরাজি চিকিৎসা ব্যবস্থার অস্তিত্ব উপেক্ষিত হয়। ফলে অতীতের প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় অধিকতর উন্নয়ন আধুনিকায়ন ও বৈজ্ঞানিক করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় গবেষণা ও বিবিধ সহায়তা প্রদান সমান গুরুত্ব দেয়া হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দারিদ্র বিমোচন না হওয়া পর্যন্ত সুবিধাবঞ্চিত হতদরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী আরও সম্প্রসারিত করা হবে। জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির ৫% এর কম হবে না। প্রাথমিক ও প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রশিক্ষিত নারী ও পুরুষ পল্লী স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থা করা এবং সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা, শিক্ষা এবং গবেষণা সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

বিগত আওয়ামী শাসনকালে স্বাস্থ্যখাতে আর্থিক দুর্নীতি, অনিয়ম তুলে ধরে বিএনপির সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পদোন্নতি, বদলি, প্রশাসনিক দুর্বিত্তায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধনের সাথে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনাকে দলীয়করণের আবরণে আচ্ছাদিত করা হয়েছে। অবিচার ও অন্যায়ের প্রাবল্যে স্বাস্থ্য খাতের জনবলের পেশাগত দক্ষতার চরম ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

এমতাবস্থায় প্রয়োজন সুষ্ঠু তদন্ত ও পর্যালোচনার মাধ্যমে দুর্নীতির নিরপেক্ষ অনুসন্ধান ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি বিধান সহ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী প্রস্তাবনা তুলে ধরেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। স্বল্পমেয়াদী প্রস্তাবনা যা ১-৩ বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে আছে-

১। প্রতিরোধের মাধ্যমে সুরক্ষিত স্বাস্থ্য একটি কার্যকর পরিকল্পনা-প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়ে ইউনিয়ন সাব-সেন্টার উন্নয়ন ও পর্যাপ্ত সংখ্যক ‘গ্রামীণ স্বাস্থ্য সহকারী’ নিয়োগ।

২। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে- সেবার গুণগত মান উন্নয়ন এবং কার্যকরী প্রাথমিক রেফারেল সেন্টার হিসেবে রূপান্তর, প্রয়োজনীয় বিশেষায়িত সেবা নিশ্চিত করা, পুষ্টিবিদ ও পরিকল্পিত পরিবার ও জনসংখ্যার ব্যবস্থাপনা।

৩। জিপি (জেনারেল ফিজিশিয়ান) অধীনে প্রত্যেক নাগরিককে একজন সরকারি রেজিস্টার্ড চিকিৎিসকের অধীনে রাষ্ট্রীয় খরচে সর্বোত্তম স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের পর্যায়ক্রমিক ব্যবস্থার প্রবর্তন।

৪। বিদ্যমান দ্বিতীয় (জেলা ও সদর হাসপাতাল) এবং তৃতীয় স্তরের বিষেশায়িত স্বাস্থ্যসেবা শক্তিশালীকরণ ও সঠিক রেফারেল সিস্টেম বাস্তবায়ন। কিডনি, ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্নায়ুরোগ চিকিৎসাসহ ২৪ ঘণ্টা হেল্পলাইন, জরুরি সেবা, দুর্ঘটনা পরবর্তী সেবা, দ্রুত রোগী স্থানান্তর ব্যবস্থাপনা।

৫। স্বাস্থ্যসেবায় ন্যায় বিচার, রোগী ও সেবা প্রদানকারীর জন্য সমতাভিত্তিক আইন প্রণয়ন।

৬। সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে চিকিৎসক ও রোগী সম্পর্ক উন্নয়নের কার্যকর ব্যবস্থাপনা, স্বচ্ছতা ও মিডিয়ার যথাযথ এবং ইতিবাচক ব্যবহার।

মধ্যমেয়াদি প্রস্তাবনা যা ১-৫ বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা জানিয়েছে দলটি। সেখানে স্বাস্থ্য কার্ড প্রবর্তন ও স্বাস্থ্য কার্ডের মাধ্যমে সুবিধা প্রবর্তনের কথা জানানো হয়।

আর দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তাবনা যা ১-১০ বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা জানান বিএনপির এই সিনিয়র নেতা। 

তিনি বলেন, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতা সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হবে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও গবেষনা এবং আন্তর্জাতিক চাহিদা পূরণে সক্ষম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হবে ও স্বাস্থ্য পর্যটন উপযোগী একটি আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যপরিকাঠামো নির্মাণ করা হবে।

এসময় স্বাস্থ্য সেবায় মান সম্পন্ন মেডিকেল শিক্ষা ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা ও দেশের জন্য উপযোগী চিকিৎসা গবেষণা, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা, ডায়াগনষ্টিক রিপোর্টের বিশ্বাস যোগ্যতা, ঔষধের মূল্য, ইউনানী, কবিরাজী, হোমিওপ্যাথিসহ ঐতিহাগত সনাতন চিকিৎসা পদ্ধতির প্রভাব ইত্যাদি বিষয়ও বিবেচনায় গুরুত্ব দেয়ার কথা জানান তিনি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. ফরহাদ আলী, বিএনপি মিডিয়া সেলের সমন্বয়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫,/বিকাল ৩:৫৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit