এম এ রহিম, চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় তরুণ উদ্যোক্তা মামুন ও তার স্ত্রী রেনু নিজ বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন মনোরম একটি ছাদ-বাগান। সবজি, ফুল, ফল ও ঔষধিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে তার ছাদ বাগানে। বাগানে উৎপাদিত ফুল, ফল ও সবজি একদিকে যেমন নিজেদের চাহিদা মেটায় অপরদিকে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীর মাঝেও বিতরণ করেন তারা। চৌগাছা পৌরসভার কংশারীপুর মৃধাপাড়ার বাসিন্দা এ দম্পতি।শুরুর দিকে অল্প কিছু ফুল ও ফলের গাছ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে তার ছাদ বাগানেফুল, ফল, ঔষধি ও সবজিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। ছাদ জুড়েই রয়েছে বারো মাসি আম, বেদানা, পেঁপে, কমলা, মাল্টা, পেয়ারাসহ অন্যান্য ফলের গাছ।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) সরেজমিনে দেখা যায়, শখের এই ছাদ বাগান অনেক সুসজ্জিত ও পরিকল্পনা করে সাজিয়েছেন মামুন ও তার স্ত্রী। তাদের সংগ্রহে আছে বেদানা,আম, মাল্টা, টমেটো, আক্সগুর, কমলাসহ দেশি-বিদেশী হরেক রকম ফল।এর মধ্যে বেদানার জাতই আছে কমপক্ষে পনের ধরনের। অস্ট্রেলিয়া ,পারসিয়ান, আফগানিস্তান,থাই, ফিলিস্তিন, পাকিস্থানী, ইন্ডিয়ান সহ আরো অনেক জাত। মাল্টার আছে দশ-বারোটা বিদেশী জাত। সাউথ আফ্রিকা, মরোক্ক, ইতালিয়ান, কাশ্মীর সহ অন্যান্য দেশের। আক্সগুর আছে তিন জাতের।কমলা আছে ভিয়েতনামি, সাউথ আফ্রিকান,তুরস্ক নেপালি ও পাকিস্থানী। টমেটো আছে বাহুবলি জাতের, আম আছে কাটিমন জাতের ও পেয়ারা আছে রেড ডায়মন্ড জাতের। এছাড়াও বাগান বিলাসী আছে বিভিন্ন জাতের গ্রাফটিং করা ফুলের গাছ। তাতে ঝাঁকে ঝাঁকে ফুল ফুটে আছে।
এসব ফুল ও ফলের গাছ সংগ্রহের বিষয়ে মামুন জানান, যারা পুরাতন ছাদ-বাগানী তাদের থেকে অনলাইনে যোগাযোগ করে কুরিয়ারের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয় এসব চারা। তিনি বলেন, আমার এই ছাদ-বাগানে বিভিন্ন এলাকার ইউটিউবার এসে ভিডিও করে, পরামর্শ, পরিচর্যা,করণীয়, বর্জনীয়, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরি করে। আমরাও এভাবে অন্যদেরকে দেখে শিখেছি।পরিচর্যার বিষয়ে জানতে চাইলে রেনু খাতুন বলেন, প্রতিদিন সকাল-বিকাল অল্প সময় পরিচর্যা করলেই হয়। আলাদা করে সময় বের করা লাগে না। তাছাড়া বাগানে রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যাবহার হয় না। নিজ বাড়ির প্লান্টের কেঁচো সার ও জৈব সার ব্যবহার করা হয়। তিনি বলেন, বছর কয়েক আগে আমরা ছাদ বাগান শুরু করি। নানা প্রজাতির সবজি, বিভিন্ন জাতের ফুল ও ফলমূলের চাষাবাদ করছি।গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বেশি থাকে। সেই সময় পুরো বাড়ি গরম হয়ে ওঠে। ফাঁকা তপ্ত ছাদকে শীতল করতে এবং পরিবেশকে সহনীয় করতেই সবুজ বাগান করা। শখের বসেই ছাদ বাগানে বিভিন্ন ধরনের টব এবং ড্রামে পরম যত্নে বেড়ে উঠছে আমার শখের গাছগুলো। গৃহস্থালীর কাজের পাশাপাশি যেটুকু সময় পাই অধিকাংশ সময় এই বাগানেই দিই। মানসিক প্রশান্তি এনে দেই এই ছাদ- বাগান।
প্রতিবেশী মুকুট মৃধা জানান, আমাদের বাসার পাশেই মামুনের বাড়ি। ছাদ- বাগান আমাদেরও খুব পছন্দ। তার ছাদ কৃষি কার্যক্রম দেখে আমরাও উৎসাহিত হচ্ছি। চেষ্টা করব আমাদের বাসার ছাদেও এ ধরনের ছাদ-বাগান করতে।উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, রেনু ও মামুন দম্পত্তি নিজ উদ্যোগে তার বাড়ির ছাদে বিভিন্ন জাতের ফুল-ফল, সবজি সহ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা দিয়ে যে অসাধারণ বাগান করেছেন তার মতো যদি অন্যরাও ছাদগুলো ফেলে না রেখে এরকম বিভিন্ন জাতের সবজি অথবা ফুল-ফলের বাগান করত,সবুজ শ্যামলে ভরে যেত সকল ছাদ। দেশে সবুজের মাত্রা বাড়তো পাশাপাশি স্বস্থ্য কর খাদ্য তালিকায় এ সকল সবজি ও ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত।
কিউএনবি/অনিমা/৩১ জানুয়ারী ২০২৫,/সন্ধ্যা ৭:৫৭