বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০৫ পূর্বাহ্ন

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার নতুন করে তদন্ত হওয়া উচিত: হাইকোর্ট

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৩৫ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক : ন্যায়বিচার নিশ্চিতে যথাযথ ও বিশেষজ্ঞ সংস্থার মাধ্যমে নতুন করে তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো উচিত বলে অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই পর্যবেক্ষণের আলোকে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আদেশের অনুলিপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে।

দুই দশক আগে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা এ মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে ১ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এই রায়ের ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিরা খালাস পান।

আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল, জেল আপিল ও বিবিধ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৭৯ পৃষ্ঠা করে পৃথক দুটি মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। এতে ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শতাধিক নেতা-কর্মী। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি–জামায়াত জোট সরকার। গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মামলা হয় মতিঝিল থানায়। মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে নিতে তৎকালীন সরকার নানা তৎপরতা চালায় বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল। এরপর ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলার তদন্ত নতুনভাবে শুরু করে।

২০০৮ সালে এ মামলায় প্রথমে ২২ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে এ মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক) অধিকতর তদন্ত হয়। এরপর তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

এ মামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এ ছাড়া সেনাবাহিনী ও পুলিশের সাবেক ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ৪৯ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছিল।

গ্রেনেড হামলা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের আগে অন্য একটি মামলায় মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়। এর আগে গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১১ সালে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য পরে তা আদালতে প্রত্যাহার করেন বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। তারা বলছেন, জবানবন্দি প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৮ সালে মামলার সব নথিপত্র হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়। এটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ‘ডেথ রেফারেন্স’ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত।

বিচারিক আদালতের রায়ে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তারা হলেন- সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, মাওলানা তাজউদ্দিন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাঈদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ বাট ওরফে মাজেদ বাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন। তাঁদের মধ্যে আবদুর রহিম ও শেখ আবদুস সালাম মারা গেছেন।

বিচারিক আদালতের রায়ে ১৯ জনকে দেওয়া হয়েছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তারা হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপির নেতা হারিছ চৌধুরী (এখন প্রয়াত), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন, আরিফুল ইসলাম, মুফতি আবদুর রউফ, হাফেজ ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবদুল হান্নান ওরফে সাব্বির, মুরসালিন, মুত্তাকিন, জাহাঙ্গীর বদর, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, আবু বকর সিদ্দিক ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মো. ইকবাল, রাতুল আহমেদ, মাওলানা লিটন, মো. খলিল ও শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল।

বিচারিক আদালতে রায়ে ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছিল। তারা হলেন মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আমীন, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার, লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ওরফে ডিউক, সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী; সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান, ডিএমপির সাবেক ডিসি (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সিআইডির সাবেক পুলিশ সুপার রুহুল আমীন এবং সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ ও মুন্সী আতিকুর রহমান। 

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৯ ডিসেম্বর ২০২৪,/রাত ৮:০২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit