রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৪:১১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
সংঘাতের পর প্রথমবার জনসম্মুখে এলেন খামেনি আশুলিয়ায় বিসিডিএস এর মতবিনিময় সভা  দৌলতপুরে বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে বাচ্চু মোল্লা সভাপতি : বিল্লাল হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমেই এই দেশ পুনর্গঠন করতে হবে — নাহিদ ঘরে ঢুকে ছুরিকাঘাত,আ.লীগ নেতার মায়ের মৃত্যু শুধু শেখ হাসিনার পতন নয়, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে- জয়পুরহাটে নাহিদ ইসলাম মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো কেউ জঙ্গি নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পরিবারে সুখ ফেরাতে বিদেশে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন শার্শার রনি শার্শায় গৃহবধূকে গনধর্ষণের অভিযোগ কোম্পানীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তরুণের মৃত্যু

তায়েফে যে কারণে কঠিন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল নবীজিকে

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪২ Time View

ডেস্ক নিউজ : মুফতি আবদুল্লাহ তামিম

নবুওয়াতের দশম বছর শাওয়াল মাসে নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়িফ গমন করেছিলেন। তায়িফ মক্কা থেকে আনুমানিক ষাট মাইল দূরত্বে অবস্থিত। যাতায়াতের এ দূরত্ব তিনি অতিক্রম করেছিলেন পদব্রজে। সঙ্গে ছিলেন তার মুক্ত করা ক্রীতদাস যায়েদ বিন হারিসাহ রা.।’ (মাওলানা নাজিব আবাদি কৃত তারিখে ইসলাম, ১ম খণ্ড, পৃ. : ১২২)
পথ চলাকালে পথিমধ্যে যে গোত্রের নিকট তিনি উপস্থিত হতেন তাদের নিকট ইসলামের দাওয়াত পেশ করতেন। কিন্তু তার এ আহ্বানে তাদের পক্ষ থেকে কেউ সাড়া দেয়নি। তায়িফ গমন করে সাকিফ গোত্রের তিন নেতার সাথে, যারা সকলেই সহোদর ছিলো। তিনি তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তাদের নাম ছিল যথাক্রমে আবদে ইয়ালাইল, মাসউদ ও হাবিব। ভ্রাতৃত্রয়ের পিতার নাম ছিল আমর বিন ওমাইর সাকাফি। তাদের সঙ্গে (সাক্ষাতের পর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার অনুগত হয়ে চলা এবং ইসলামকে সাহায্য করার জন্য তাদের নিকট দাওয়াত পেশ করেন। 
তদুত্তরে একজন বলল, ‘সে কাবার পর্দা (আবরণ) ফেড়ে দেখাক, যদি আল্লাহ তাকে রাসুল করেছেন।’ (একটি পরিভাষার সঙ্গে এ উক্তির মিল রয়েছে ‘তুমি যদি নবী হও তবে আল্লাহ আমাকে ধ্বংস করুন।’ এ উক্তির তাৎপর্য হচ্ছে দৃঢ়তার সঙ্গে এ কথা প্রকাশ করা যে, তোমার নবী হওয়া কোনো ক্রমেই সম্ভব নয়, যেমনটি সম্ভব নয় কাবার পর্দা ফাড়ার জন্য হাত বাড়ানো) দ্বিতীয়জন বলল, ‘নবী করার জন্য আল্লাহ কি তোমাকে ছাড়া আর কাউকেও পাননি?’
তৃতীয়জন বলল, ‘তোমার সঙ্গে আমি কোনো ক্রমেই কথা বলব না। প্রকৃতই যদি তুমি নবী হও তবে তোমার কথা প্রত্যাখ্যান করা আমার জন্য বিপজ্জনক। আর যদি তুমি আল্লাহর নামে মিথ্যা প্রচারে লিপ্ত হও তবে তোমার সঙ্গে আমার কথা বলা সমীচীন নয়।’ তাদের এহেন আচরণ ও কথাবার্তায় তিনি মনঃক্ষুণ্ন হলেন এবং সেখান থেকে যাবার প্রাক্কালে শুধু বললেন, ‘তোমরা যা করলে এবং বললে তা গোপনেই রাখো।’
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়িফে ১০ দিন অবস্থান করেন। এ সময়ের মধ্যে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি ইসলামের দাওয়াত পেশ করেন। কিন্তু সকলের উত্তর একই ‘তুমি আমাদের শহর থেকে বের হয়ে যাও।’ফলে ভগ্ন হৃদয়ে তিনি সেখান থেকে প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি গ্রহণ করলেন। প্রত্যাবর্তনের পথে যখন তিনি পা বাড়ালেন তখন তাকে উত্যক্ত অপমানিত ও কষ্ট প্রদানের জন্য শিশু-কিশোর ও যুবকদেরকে তার পেছনে লেলিয়ে দেয়া হলো। ইত্যবসরে পথের দুপাশ ভিড় জমে গেল। তারা হাততালি, অশ্রাব্য অশ্লীল কথাবার্তা বলে তাকে গালমন্দ দিতে ও পাথর ছুঁড়ে আঘাত করতে থাকল। আঘাতের ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পায়ের গোড়ালিতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে পাদুকাদ্বয় রক্তাক্ত হয়ে গেল।
তায়িফের হতভাগ্য কিশোর ও যুবকেরা যখন রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর প্রস্তর নিক্ষেপ করছিল তখন যায়েদ বিন হারিসাহই তাকে সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রক্ষার জন্য ঢালের মতো কাজ করছিলেন। ফলে তার মাথার কয়েকটি স্থানে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন। এভাবে অমানবিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পথ চলতে থাকেন এবং দুরাচার তায়িফবাসীগণ তাদের এ অত্যাচার অব্যাহত রাখে।
আঘাতে আঘাতে জর্জরিত রক্তাক্ত কলেবরে পথ চলতে গিয়ে নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই ক্লান্ত ও অবসন্ন হয়ে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত এক আঙুর উদ্যানে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য হন। বাগানটি ছিল রাবিআর পুত্র উতবাহ ও শায়বাহর। তিনি বাগানে প্রবেশ করলে দুরাচার তায়িফবাসীগণ গৃহাভিমুখে ফিরে যায়। এ বাগানটি তায়িফ থেকে তিন মাইল দূরে অবস্থিত। বাগানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর গাছের ছায়ায় এক দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে পড়লেন। কিছুক্ষণ বিশ্রাম করার ফলে কিছুটা সুস্থতা লাভের পর নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার দরবারে হাত তুলে দোয়া করলেন। তার এ দোয়া ‘দুর্বলদের দোয়া’ নামে সুপ্রসিদ্ধ। তার দোয়ার এক একটি কথা থেকে এটা সহজেই অনুমান করা যায় যে, তায়িফবাসীগণের দুর্ব্যবহারে তিনি কতটা ক্ষুব্ধ এবং তারা ইমান না আনার কারণে তিনি কতটা ব্যথিত হয়েছিলেন। তিনি দোয়া করলেন,

‏‏اللهم إِلَيْكَ أَشْكُوْ ضَعْفَ قُوَّتِىْ، وَقِلَّةَ حِيْلَتِىْ، وَهَوَانِيْ عَلَى النَّاسِ، يَا أَرْحَمُ الرَّاحِمِيْنَ، أَنْتَ رَبُّ الْمُسْتَضْعَفِيْنَ، وَأَنْتَ رَبِّيْ، إِلٰى مَنْ تَكِلُنِىْ‏؟‏ إِلٰى بَعِيْدٍ يَتَجَهَّمُنِى‏؟‏ أَمْ إِلٰى عَدُوٍّ مَلَّكْتَهُ أَمْرِيْ‏؟‏ إِنْ لَمْ يَكُنْ بِكَ عَلَيَّ غَضَبٌ فَلَا أُبَالِيْ، وَلٰكِنْ عَافِيْتُكَ هِيْ أَوْسَعُ لِيْ، أَعُوْذُ بِنُوْرِ وَجْهِكَ الَّذِيْ أَشْرَقْتَ لَهُ الظُّلُمَات، وَصَلُحَ عَلَيْهِ أَمْرُ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ مِنْ أَنْ تُنَزِّلَ بِيْ غَضَبُكَ، أَوْ يَحِلُّ عَلَيَّ سَخَطُكَ، لَكَ الْعُتْبٰى حَتّٰى تَرْضٰى، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِكَ‏‏ হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আমার শক্তির দুর্বলতা, অসহায়ত্ব আর মানুষের নিকট স্বীয় মূল্যহীনতার অভিযোগ প্রকাশ করছি। ওহে দয়াময় দয়ালু, তুমি দুর্বলদের প্রতিপালক, তুমি আমারও প্রতিপালক, তুমি আমাকে কার নিকট অর্পণ করছ, যে আমার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করবে, নাকি তুমি আমাকে এমন শত্রুর নিকট ন্যস্ত করছ যাকে তুমি আমার যাবতীয় বিষয়ের মালিক করেছ।

যদি তুমি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট না হও তবে আমার কোনো আফসোস নেই, তবে তোমার ক্ষমা আমার জন্য সম্প্রসারিত করো। আমি তোমার সেই নুরের আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যা দ্বারা অন্ধকার দূরীভূত হয়ে চতুর্দিক আলোয় উদ্ভাসিত হয়। দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় বিষয়াদি তোমার উপর ন্যস্ত। তুমি আমাকে অভিসম্পাত করবে কিংবা ধমক দেবে, তার থেকে তোমার সন্তুষ্টি আমার কাম্য। তোমার শক্তি ব্যতিরেকে অন্য কোনো শক্তি নেই। (সিরাতে ইবনু হিশাম : ১/৪২০)

এদিকে রাবিআর পুত্রগণ যখন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এমন এক দুরবস্থার মধ্যে নিপতিত অবস্থায় দেখতে পেল তখন তাদের মধ্যে গোত্রীয় চেতনা জাগ্রত হয়ে উঠল। আদাস নামক তাদের এক খ্রিষ্টান ক্রীতদাসের হাতে এক গোছা আঙুর তারা নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পাঠিয়ে দিল। সেই ক্রীতদাসটি যখন আঙুরের গোছাটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে তুলে দিতে চাইল তিনি তখন ‘বিসমিল্লাহ’ বলে হাত বাড়িয়ে তা গ্রহণ করলেন এবং খেতে আরম্ভ করলেন।

আদাস বলল, ‘এমন কথা তো এ অঞ্চলের লোকদের মুখে কখনো শুনিনি? রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি কোথায় থাকো? তোমার ধর্ম কী?’ সে বলল, ‘আমি খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী এবং নিনওয়ার বাসিন্দা।’নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘ভালো, তাহলে সৎ ব্যক্তি ইউনুস বিন মাত্তারের গ্রামে তুমি বাস করো, তাই না?’ সে বলল, ‘আপনি ইউনুস বিন মাত্তাকে কীভাবে চিনলেন?’

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তিনি আমার ভাই। তিনি নবী ছিলেন এবং আমিও নবী।’ এ কথা শুনে আদাস নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে ঝুঁকে পড়ল এবং তার মাথা ও হাত-পায়ে চুমু দিল।
এ ব্যাপারে দেখে রাবিআ পুত্রদ্বয় নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল, ‘দেখো, দেখো, ওই ব্যক্তি দেখছি শেষ পর্যন্ত আমাদের ক্রীতদাসকেও বিগড়ে দিল।’
এর পর আদাস যখন তাদের নিকট ফিরে গেল তখন ভ্রাতৃদ্বয় তাকে বলল, ‘বলো তো দেখি ব্যাপারটি কী? ওই ভদ্রলোক দেখছি তোমাকেও বিগড়ে দিল।’
সে বলল, ‘হে আমার মনিব! এ ধরাধামে তার চেয়ে উত্তম মানুষ আর কেউই নেই। তিনি আমাকে এমন এক কথা বলেছেন যা নবী-রাসুল ছাড়া অন্য কেউই জানে না।’ তারা দুজন বলল, ‘দেখো আদাস, ওই ব্যক্তি যেন তোমাকে তোমার ধর্ম থেকে ফিরিয়ে না দেয়। কারণ তোমার ধর্ম তার ধর্ম থেকে উত্তম।’ কিছুক্ষণ অবস্থানের পর রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাগান থেকে বের হয়ে মক্কার পথে যাত্রা করেন। তার মিশনের বিফলতাজনিত চিন্তা ও দৈহিক যন্ত্রণার দাপটে হৃদয়-মন ছিল অত্যন্ত ভারাক্রান্ত ও বিশ্রান্ত। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে তিনি যখন ‘কারণে মানাযেল’ নামক স্থানে পৌঁছলেন, তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের আদেশে জিবরাইল আ. সেখানে আগমন করেন। 
তার সঙ্গে ছিলেন পর্বত নিয়ন্ত্রণকারী ফেরেশতামণ্ডলী। আল্লাহর তরফ থেকে তারা এ অভিপ্রায় নিয়ে এসেছিলেন যে, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি ইচ্ছা করেন তাহলে তারা দু-পাহাড়কে একত্রিত করে দুরাচার মক্কাবাসীকে পিষে মারবেন। এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ বুখারি শরিফে আয়েশা সিদ্দিকা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বর্ণনা করেছেন যে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তিনি একদিন জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার জীবনে কি এমন কোনো দিন এসেছে যা উহুদের দিন চাইতেও কঠিন ছিল?’
তিনি উত্তরে বললেন, ‘হ্যাঁ’, তোমার সম্প্রদায়ের নিকট থেকে আমাকে যে দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়েছে তার মধ্যে সবচাইতে কঠিন ছিল ওই দিনটি, যেদিন আমি ঘাঁটিতে বিচলিত ছিলাম, যখন আমি নিজেকে আবদে ইয়ালাইল বিন আবদে কুলালের পুত্রদের নিকট পেশ করেছিলাম। কিন্তু তারা আমার কথায় কর্ণপাত না করায় দুশ্চিন্তা ও ব্যথায় পরিশ্রান্ত হয়ে আমি নিজ পথে গমন করি। এভাবে চলতে চলতে কারণে সায়ালেবে যখন এসে পৌঁছি তখন আমার চেতনা ফিরে আসে।
এ সময় আমার মনে কিছুটা স্বস্তিবোধের সৃষ্টি হয়। সেখানে আমি আকাশের দিকে চোখ তুলে তাকাতেই দেখি যে, একখণ্ড মেঘ আমাকে ছায়া দান করছে; ব্যাপারটি আরো ভালোভাবে নিরীক্ষণ করলে বুঝতে পারি যে, এতে জিবরাইল আ. রয়েছেন। তিনি আমাকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনার সম্প্রদায় আপনাকে যা বলেছে এবং আপনার প্রতি যে আচরণ করেছে আল্লাহ তাআলা সবকিছুই শুনেছেন এবং দেখেছেন। এখন তিনি পর্বত নিয়ন্ত্রণকারী ফেরেশতাগণকে আপনার খেদমতে প্রেরণ করেছেন। আপনি তাদেরকে যা ইচ্ছা নির্দেশ প্রদান করুন।’ এরপর পর্বতের ফেরেশতা আমাকে সালাম জানিয়ে বললেন, 

হে মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! কথা এটাই, আপনি যদি চান যে এদেরকে আমি দু-পাহাড় একত্রিত করে পিষে মারি তাহলে তা-ই হবে।’ (এ স্থলে সহিহ বুখারিতে আখশাবাইন শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যা হচ্ছে, মক্কার দুটি প্রসিদ্ধ পাহাড় কুুরাইশ এবং কাইকায়ান। এ পাহাড় দুটি যথাক্রমে কাবা শরিফের দক্ষিণ ও উত্তরে পাশে মুখোমুখি অবস্থিত। সে সময় সাধারণ আবাসিক এলাকা ওই দু-পাহাড়ের মধ্যেই অবস্থিত ছিল)

নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘না, বরং আমার আশা, মহান আল্লাহ এদের পৃষ্ঠদেশ হতে এমন বংশধর সৃষ্টি করবেন যারা একমাত্র তার ইবাদত করবে এবং অন্য কাউকেও তার অংশীদার ভাববে না।’ (সহিহ বুখারি, কিতাবু বাদইল খালকে, ১ম খণ্ড, পৃ. : ৪৫৮)

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ উত্তরে তার অসাধারণ মানবত্ব-প্রেমে সমুজ্জ্বল এক ব্যক্তিত্ব এবং ক্ষমাশীল অনুপম চরিত্রের পরিচয় পাওয়া যায়। সাত আসমানের উপর হতে আগত এই গায়েবি মদদের প্রস্তাব ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে ফেরেশতাগণ যখন তার খেদমতে উপস্থিত হন তখন তার ব্যক্তিত্ব এবং চরিত্র যেন আরো মহিমান্বিত হয়ে ওঠে। নিজের দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে তিনি সুস্থিরচিত্তে আল্লাহ তাআলার দরবারে শুকরিয়া আদায় করতে থাকেন। এভাবে তার মন থেকে চিন্তাভাবনার মেঘ দূরীভূত হয়ে যায়।
তারপর তিনি মক্কা অভিমুখে অগ্রসর হওয়ার পথে ওয়াদিয়ে নাখলায় অবস্থান করেন। এখানে দুটো জায়গা বসবাসের উপযোগী ছিল। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে আস-সাইলুল কবির এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে যায়মা।  কেননা সেখানে পানি ছিল কিছুটা সহজলভ্য এবং জায়গা দুটো ছিল শস্য-শ্যামল। কিন্তু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দুটো জায়গার মধ্যে কোথায় অবস্থান করেছিলেন কোনো সূত্র থেকেই তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/বিকাল ৫:০৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit