রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন

দৌলতপুরে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৩৪ টি গ্রাম : ডুবেছে আবাদি ফসল : বন্ধ রয়েছে শ্রেণি কক্ষের পাঠদান

মো. সাইদুল আনাম,কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৬৩ Time View

মো. সাইদুল আনাম, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বৃদ্ধি পেয়েছে পদ্মার পানি। ডুবেছে আবাদি ফসল। বন্ধ রয়েছে চিলমারীর চরের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কক্ষের পাঠদান কার্যক্রম। নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানিতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে পদ্মার পানি। এরফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ায় দৌলতপুরের উপজেলার দুই ইউনিয়নের পদ্মার চরের অন্তত ৩৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভাঙন ও বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে চিলমারী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। তলিয়েছে যাতায়াতের রাস্তা। ডুবেছে রামকৃষ্ণপুর, চিলমারী, মরিচা ও ফিলিপনগর ইউনিয়নের চরাঞ্চললের মাসকলাই সহ আবাদি জমি ও ফসল। এর আগে আগষ্টের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি বাড়লেও শেষের দিকে তা কমতে শুরু করে। তবে ফের পদ্মা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে।

পদ্মায় পানি বৃদ্ধির বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, গত সোমবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিন দিনে নদীতে পানি বেড়েছে ২৯ সেন্টিমিটার। পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ১২ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটারে, যা বিপদসীমার ১ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার নীচে। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম।চিলমারী ইউনিয়নের চল্লিশপাড়া গ্রামের কৃষক সোহেল আহমেদ জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে পানি। তাঁরসহ চরের নীচু এলাকার কৃষকদের মাসকলাই ডুবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে বাড়ি ঘরে এখনও পানি উঠেনি।

এদিকে চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় ১৮টি গ্রামের আশপাশে পানি চলে আসায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ওইসব গ্রমের মানুষ। চলাচলের রাস্তর ওপরে পানি উঠেছে। এখনো বসতঘরে পানি প্রবেশ করেনি। তবে চরের আবাদি জমি ডুবে ক্ষতি হয়েছে।রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চাললের ১৬টি গ্রামের চারপাশে পানি চলে আসায় তারা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চরের নীচু এলাকায় বসবাসরত দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষের বাড়িতে পানি ঢুকেছে। পদ্মার চরের প্রায় সব আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। এতে মাসকলাই চাষিরা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে অচিরেই চরের সব গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

চরে পানিবন্দী হয়ে পড়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রমের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চরের কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে তা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো এখনো স্বাভাবিক রয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।চরে তলিয়ে যাওয়া ফসলি জমি ও কৃষিজমির ক্ষতির পরিমাণও আগের তুলনায় বেড়েছে অনেকগুন। পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলি জমির বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মো. নুরুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে এখন পর্যন্ত চার ইউনিয়নের অন্তত ১০০ হেক্টর জমির মাসকলাই ডুবে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এবার চরে ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে মাসকলাইয়ের চাষ হয়েছে। পানি বাড়লে ফসলের আরো ক্ষতি হবে বলে তিনি জানান।এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ওবায়দুল্লাহ স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। আমরা পানিবন্দী হয়ে পড়া এলাকাগুলোর খোঁজ খবর রাখছি।

কিউএনবি/অনিমা/২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/বিকাল ৩:২৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit