আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাইফুজ্জামানকে নিয়ে ‘মিনিস্টার’স মিলিয়ন্স’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আলজাজিরার ইউটিউব চ্যানেল ও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
বছরে মাত্র ১৫ লাখ টাকা বেতন পাওয়া বাংলাদেশের একজন মন্ত্রী কীভাবে অর্ধ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির সাম্রাজ্য গড়ে তুললেন, আলজাজিরার অনুসন্ধানী দল তা অনেক দিনের চেষ্টায় সামনে এনেছে।
বাংলাদেশের আইন অনুাযায়ী, কোনো নাগরিক দেশ থেকে বছরে ১২ হাজার ডলারের বেশি নিতে পারবে না। দায়িত্ব পালনকালে মন্ত্রীরা কোনো ব্যবসা থেকে লাভবান হতে পারবে না।
তবে আলজাজিরার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে ২৫ কোটি ডলারের বিনিময়ে শুধু ব্রিটেনেই ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। যার মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সমান।
এখানেই শেষ নয়, এছাড়া ভূসম্পত্তি গড়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াতেও। সবমিলিয়ে তিনি পাঁচশরও বেশি বাড়ি কিনেছেন। যেগুলোর মূল্য প্রায় ৭০ কোটি ডলার।
আলজাজিরা বলছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বেশ ভালো সখ্যতা ছিল সাইফুজ্জামানের। যা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার বাবা শেখ হাসিনার খুব কাছের লোক ছিলেন। আমিও তার কাছের লোক… শেখ হাসিনা আমার বস… তিনি জানেন যুক্তরাজ্যে আমার ব্যবসা আছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী ২০১৭ সালের দিকে সম্পত্তি কেনা বাড়িয়ে দেন। ২০১৯ সালে যখন তিনি মন্ত্রী হন, তখন এটি আরও বাড়ে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর তাদের এক সাংবাদিক বিনিয়োগকারীর ছদ্মবেশে সাইফুজ্জামানের ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার মূল্যের বাড়িতে যায়।
ওই সময় সাংবাদিকের সাক্ষাৎকারে সাইফুজ্জামান অনেকটা অহংকারের সুরেই জানান, তিনি কুমিরের চামড়ার তৈরি জুতা পরেন। এ জুতার জন্য হাজার হাজার ডলার খরচ করেন এবং লন্ডনের সবচেয়ে দামী দোকান থেকে ইতালিয়ান স্যুট তৈরি করেন।
এছাড়া ওই সাংবাদিককে নিজের বাড়িটিও ঘুরিয়ে দেখান তিনি। যেখানে রয়েছে সিনেমা হল, জিম, ব্যক্তিগত এলিভেটর। নতুন রোলস রয়েলস গাড়ি রাখার নিরাপদ আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং এরিয়াও রয়েছে সেখানে।
সাইফুজ্জামান আলজাজিরার কাছে দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতে নিজের বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে এই সম্পদ কিনেছেন তিনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার তার বিরুদ্ধে এখন অর্থপাচারের অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করেছে।
ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এছাড়া ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে যখন শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে চলে যান তখন সাইফুজ্জামানও দেশে ছেড়ে চলে যান।
কিউএনবি/আয়শা/১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/রাত ১১:৫৫