ডেস্ক নিউজ : বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল জানান, গত রাতে বৃষ্টি হয়েছে। তবে গত ১২ ঘণ্টায় নোয়াখালী জেলায় বন্যার পানি কমেছে ৩ সেন্টিমিটার।
অন্যদিকে, বন্যাকবলিত উপজেলায় ধীরগতিতে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে জেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় দুর্গম এলাকাগুলোতে ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না।
এছাড়া জেলায় বেড়েছে ডায়রিয়া ও সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নতুন করে ১৩৪ জন ডায়রিয়া ভর্তি হয়েছে। সব মিলিয়ে ৪১০ জন ভর্তি রয়েছে। এছাড়া সাপের কামড়ে ২৫ জন ভর্তি হয়েছে। নোয়াখালীর ৯টি উপজেলার মধ্যে ৮টি উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের ২০ লাখের বেশি মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এছাড়া ১ লাখ ৯৩ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। চৌমুহনী খালের মুখ বন্ধ থাকায় বেগমগঞ্জের পূর্বাঞ্চল ও সেনবাগ উপজেলা মানুষ এখনও পানিবন্দি রয়েছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে ঘুরে ৪টি ভ্রাম্যমাণ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে পানি বিতরণ করা হচ্ছে। এই পর্যন্ত ২০ লাখ পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। ৩ হাজার জেরিক্যান বিতরণ করে এবং ট্রাকে করে ২ হাজার লিটার পানির ট্যাংক দিয়ে পানি সরবরাহ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য মতে, বন্যা এখন পর্যন্ত জেলা জুড়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর প্রাণিসম্পদের হিসাব অনুযায়ী, এবারের বন্যায় ১০৮টি খামারের প্রায় ২ লাখ পশু মারা গেছে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন, জানান জেলায় ৮৫ হাজার ৩৭৯ টি পুকুর দীর্ঘ ও মাছের খামার ভেসে গেছে। ২৩ হাজার ৫৫ জন, মোট ৬১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম জানান, নোয়াখালীর প্রায় ২ হাজার ৫০০ কিলোমিটার রাস্তা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার জানান, এ বন্যা নোয়াখালী জেলা সড়ক বিভাগের ১২৩ কিলোমিটার রাস্তা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে।
নোয়াখালী কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক ড. মীরা রানী দাস জানান, নোয়াখালীতে ৩৮ হাজার ৪৫৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অংকে ৬৪৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে রোপাআমন ২৫ হাজার ৬০১ হেক্টর, রোপাআমন বীজতলা চার হাজার ৫৩৬ হেক্টর, আউশ চার হাজার ৫২১ হেক্টর, শরৎকালীন সবজি তিন হাজার ২১৬ হেক্টর, ফল বাগান ৪৩৭ হেক্টর, পানের বরজ ৫৭ হেক্টর, আখ ১৩ হেক্টর, আদা ২০ হেক্টর ও হলুদ ৫৫ হেক্টর ক্ষতি হয়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/রাত ৮:৩২