রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২১ পূর্বাহ্ন

পাকিস্তানের মোকাবিলায় কেমন দল গড়ল বাংলাদেশ?

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪
  • ৬০ Time View

স্পোর্টস ডেস্ক : পাকিস্তানের মাটিতে প্রথম সাফল্য পেতে প্রধান নির্বাচকের ভারসাম্যপূর্ণ দলে গুরুত্বপূর্ণ তিন সদস্য সাকিব, মুশফিক ও মুমিনুল।  দীর্ঘদিন পর দলে ফিরেছেন মুশফিক। চোটের কারণে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট সিরিজে খেলতে পারেননি। এছাড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেয়ায় দীর্ঘদিন দলের বাইরে ছিলেন তিনি। তবে প্রাইম ব্যাংকের হয়ে ঘরোয়া লিগে ঠিকই ব্যাটে ধার দিয়ে গেছেন। অন্যদিকে ব্যাটে আগের সে ধার না থাকলেও এখনো বাংলাদেশ দলের টেস্ট স্পেশালিস্ট মুমিনুল। সবশেষ শ্রীলঙ্কা সিরিজে দুটি ফিফটি হাঁকিয়ে ফর্মে ফেরার বার্তাটাও দিয়ে রেখেছেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ‘এ’ দলের হয়ে তারা দুজনই নিজেদের আরেকবার ঝালিয়ে নেবেন।

এদিকে সাম্প্রতিক সব সমালোচনা পেছনে ফেলে অভিজ্ঞতার বিচারে সাকিবকে স্কোয়াডে রেখেছেন গাজী আশরাফ। যদিও সাম্প্রতিককালে খুব একটা হাসছে না সাকিবের ব্যাট। বল হাতেও যে তিনি খুব কার্যকরী, সেটাও বলা যাচ্ছে না। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর মেজর লিগ ক্রিকেট ও গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। চোখের সমস্যায় এখনো ব্যাটিংয়ে ভুগছেন তিনি। 

তবে প্রধান নির্বাচক বলছেন, সাকিব পারফরম্যান্স ও তার অর্জন দিয়েই দলে জায়গা করে নিয়েছেন। গাজী আশরাফ বলেন, ‘(সাকিব) তার পারফরম্যান্সের আলোকেই যাচ্ছে। পারফরম্যান্স দিয়ে সাকিব নিজেকে যে জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছে, বিভিন্ন সংস্করণের ক্রিকেট, পাকিস্তানের বিপক্ষে তার রেকর্ড…সবকিছু মিলিয়েই যাচ্ছে।’
 
আগের দিন প্রধান নির্বাচক অবশ্য মুশফিক-সাকিবদের বিকল্প না থাকার কথাও জানিয়েছেন। তবে সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করা রিশাদ হোসেনকে চাইলে সাকিবের বিকল্প হিসেবে নেয়া যেত। লেগ স্পিনের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও বেশ কার্যকর তিনি। ভবিষ্যত ভাবনায় তাকে দলে রাখা যেত। তবে তাকে এখনো টেস্টক্রিকেটের জন্য প্রস্তুত মনে করছেন না অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
 
টপ অর্ডার নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে, বিশেষ করে ওপেনিংয়ে। মাহমুদুল হাসান জয়ের কথাই ধরা যাক, ১৩ টেস্টে ৬ ডাক। ফিফটির দেখা নেই সবশেষ ৭ ইনিংসে। অবশ্য ডারউইনে পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৫ রানের জয়ের ম্যাচে ৬৯ ও ৬৫ রানের দুটি ফিফটির ইনিংসে ফর্মে ফেরার কিছুটা বার্তা দিয়ে রেখেছেন তিনি। পাকিস্তান ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৮৮ রানের ইনিংসে কিছুটা আশা দেখাচ্ছেন সাদমান ইসলামও। ২০১৮ সাল থেকে জাতীয় দলের হয়ে সাদা পোশাকের বিবেচনায় থাকলেও ১৩ টেস্টে এখনো খুব এটা আস্থা তৈরি করতে পারেননি। সে তুলনায় জাকির হাসান কিছুটা এগিয়ে। ৭ টেস্টে ৩২.৫০ গড়ে ৪৫৫ রান করেছেন তিনি। এক সেঞ্চুরি ও চার ফিফটির মালিকের কাছ থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষেও ভালো কিছু আশা করা যায়।
 
এদিকে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের পর তিন ফরম্যাটে নেতৃত্ব পাওয়া নাজমুল হোসেন শান্ত যেন চাপে নুইয়ে পড়েছেন। সবশেষ ৬ ইনিংসে তার রান ৫৫। সর্বোচ্চ ইনিংস ২০ রানের। চেনা ছন্দে নেই লিটন দাসও। পাকিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে জ্বলে উঠতে তাদের ফর্মে ফেরা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান নির্বাচকও সে দিকটা ইঙ্গিত করে বলেন, ‘প্রত্যাশা করি শান্ত, লিটন এবং অন্য ব্যাটসম্যানরা ঘুরে দাঁড়াবে। কারণ পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াই করতে হলে আমাদের দলীয় প্রচেষ্টা দরকার।’
 
ব্যাটিং নিয়ে চিন্তার কারণ থাকলেও বোলিং বিভাগটা বেশ সমৃদ্ধই। দলে আছেন তিন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান। টেস্টে ক্যারিয়ারে মিরাজ ও তাইজুল হাত ঘুরিয়ে ইতোমধ্যে ৩৫০ উইকেট নিয়েছেন। তাই তাদের সামর্থ্য নিয়ে কোনো সংশয় নেই। যখনই সুযোগ পেয়েছেন প্রতিভার জানান দিয়েছেন নাঈম হাসানও। তিন জনের মধ্যে অবশ্য ব্যাটিং দক্ষতার কারণে এগিয়ে থাকবেন মিরাজ।
 
পেস বোলিং ইউনিটটাও বেশ শক্তিশালী। বিশ্রাম কাটিয়ে দলে ফিরেছেন তাসকিন। যদিও তিনি শুধু দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন। দলে দীর্ঘদিন ধরে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন খালেদ আহমেদ। সাম্প্রতিক সময়ে দলের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন শরিফুল ইসলাম। আর তরুণ পেসার নাহিদ রানা তো গতিতেই সবাইকে মুগ্ধ করেছেন। যদিও আরেক পেসার হাসান মাহমুদ হারিয়েছেন তার ছন্দ। তবে সব মিলিয়ে বোলিং বিভাগটা বেশ আশাই দেখাচ্ছে।
 
প্রধান নির্বাচকও বলেন, ‘আমাদের বোলিং আক্রমণে বৈচিত্র্যতা আছে, তাদের বলে গতি এবং সুইং আছে। বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে তাদের পারফরম্যান্স দেখার জন্য মুখিয়ে আছি।’
 
প্রধান নির্বাচকের ভারসাম্যপূর্ণ দলটা পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দিতে পারে কিনা সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। পাকিস্তানের মাটিতে এখন পর্যন্ত ৫ টেস্ট, ১২ ওয়ানডে ও ৩ টি-টোয়েন্টি খেলে সবগুলোতে হেরেছে বাংলাদেশ। আর সাদা পোশাকে তো শুধু পাকিস্তানের মাটিতে নয়, নিজেদের ঘরের মাটিতেও জয়শূন্য বাংলাদেশ। একটি মাত্র ড্র আছে ২০১৫ সালে খুলনা টেস্টে। 
আগামী ২১ আগস্ট রাওয়ালপিণ্ডিতে প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হবে দুই দল। আর দ্বিতীয় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আগামী ৩০ আগস্ট।
বাংলাদেশ টেস্ট দল: নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান, সাদমান ইসলাম, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, নাহিদ রানা, শরীফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, সৈয়দ খালেদ আহমেদ।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১২ অগাস্ট ২০২৪,/রাত ১১:৫৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit