ডেস্ক নিউজ : শনিবার (১ জুন) সকালে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কয়েকটি গ্রামে ঝড়ের তাণ্ডবে এমন ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, সকালে হঠাৎ তীব্র ঝড়ে পাড়িয়া ও আমজানখোর ইনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও গাছপালা ভেঙে যায়। এসময় ঝড়ের কবলে ঘরের টিনের চালা পড়ে রহিমা খাতুন (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। মৃত ওই নারী পাড়িয়া ইউনিয়নের শালডাঙ্গা গ্রামের কহিনুর ইসলামের স্ত্রী।
পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপেজলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। নিহতের স্বামী কহিনুর জানান, ফজরের নামাজ পড়তে গিয়ে মসজিদে থাকা অবস্থায় ঝড় শুরু হয়। বাড়িতে এসে স্ত্রীকে খুঁজে না পেয়ে ডাকাডাকি করেন। পরে বাতাসে উড়ে আসা বারান্দায় টিন ও ছাউনি সরিয়ে দেখেন নিচে চাপা পড়ে আছেন তার স্ত্রী। পরে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝড়ে পাড়িয়া ইউনিয়নের তিলকড়া, শালডাঙ্গা, বঙ্গভিটা, লোহাড়া, বামুনিয়া ও বড়বাড়ী ইউনিয়নের বেলহাড়া, বেলবাড়ী, বটের হাট, হরিপুরসহ বেশকয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশির ভাগ বাড়ির টিনের চালা উড়ে গেছে। গাছ ভেঙে পড়েছে ঘরের উপর। এ ছাড়াও বড়বাড়ী ইউনিয়নের আধারদিঘী বাজারের সাতটি দোকানে গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে করে ঘরের টিন নষ্টসহ সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী এবং সিমেন্ট ব্যবসায়ীদের কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ব্যবসায়ী হাসান আলী জানান, বাজারে শতবর্ষী কিছু আমগাছ ছিল। ঝড়ের কারণে সেই গাছের বড় ডাল ভেঙে পড়েছে দোকানগুলোর টিনের ছাউনির উপর। এতে দোকানগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে ঘটনার পর থেকে এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বালিয়াডাঙ্গী জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে ৪০টির বেশি বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে এবং ভেঙে গেছে। এছাড়াও অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক তারের উপর গাছ ভেঙে পড়েছে। সকাল থেকে আমাদের লোকজন মাঠে কাজ করছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল বলেন, ঝড়ে মরিচ, বোরো ধান, পটলসহ বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিসংখ্যান সংগ্রহে মাঠ পর্যায়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফছানা কাওছার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এবং আমাদের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে কাজ করছে। এবিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজন জানান, ঝড়ে দুই ইউনিয়নের বেশকয়েকটি গ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এলাকাগুলো পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেয়া হবে।
কিউএনবি/আয়শা/০১ জুন ২০২৪,/সন্ধ্যা ৬:৩৩